বেড়াতে এসে বৃষ্টি ভেজা বহরমপুরে আটকে পড়েছেন পর্যটকরা। শনিবার দুপুর থেকে কখনও ঝিরঝিরে, কখনও মুষল ধারায় বৃষ্টির কোপে পড়ে প্রায় ঘরবন্দি হয়েই কাটাতে হচ্ছে তাঁদের।
হঠাৎ পড়ে পাওয়ার মত শুক্র থেকে সোমবারএক টানা তিন দিন ছুটিতে মুর্শিদাবাদে বেড়াতে এসেছেন বিভিন্ন পর্যটক। শুক্রবার রাতের ভাগীরথী এক্সপ্রেসে এসে তাঁদের অধিকাংশই বহরমপুরের বিভিন্ন হোটেলে রয়েছেন। কেউ আবার বেছে নিয়েছেন লালবাগের হোটেল। কিন্তু গত দেড় দিনের দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁদের সকলেই। কলকাতার সল্টলেকের বাসিন্দা আয়ুষি নস্কর বলেন, “তিন দিনের ছুটিতে কাছে-পিঠে বেড়াতে যাওয়ার ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদই আদর্শ। কিন্তু এখানে এসে ঘরবন্দি অবস্থায় কাটাতে হচ্ছে। এদিন সকালের দিকে বহরমপুর থেকে গাড়ি নিয়ে লালবাগ বেড়াতে গেলেও বৃষ্টির কারণে সব জায়গা ঘুরে দেখা গেল না। হাজারদুয়ারি দেখেই তাড়াতাড়ি হোটেলে ফিরে আসতে হয়েছে।” |
এদিকে ঘরবন্দি হোটেলের আবাসিকদের দাবি মেনে হোটেল মালিকদের আবার পদ্মার ইলিশের খোঁজে বের হতে হয়েছে। এমনই এখ হোটেল মালিক চন্দন সরকার বলেন, “আমার হোটেলে যে সমস্ত পর্যটকরা রয়েছেন, তাঁরা পদ্মার ইলিশ খাওয়ার কথা বলেন। অনেক কষ্টে কিলো চারেক পদ্মার ইলিশ পেয়েছি, তা-ই খাওয়াচ্ছি।”
সেই সঙ্গে জল-কাদায় মাখামাখি বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বহরমপুরের মধুপুর-বিষ্ণুপুর রোডের বেহাল দশায় ১০ মিনিটের পথ পার হতে ঘন্টা খানেকেরও বেশি সময় লাগছে। বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পঞ্চাননতলা হয়ে চুঁয়াপুর মোড় পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে পিচ বলে আর কিছু নেই। পিচের চাদর উঠে গিয়ে ওই রাস্তায় বড় বড় খানা-খন্দ সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা ইটের টুকরো ফেলে গর্ত বোজানোর চেষ্টায় রাস্তার আরও ভয়াবহ চেহারা হয়েছে। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।তার মধ্যে বৃষ্টিতে ওই খানা-খন্দে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় রাস্তা ছোট-খাটো পুকুরে পরিণত হয়েছে। এই অবস্থায় ওই রাস্তা দিয়ে স্বাভাবিক গতিতে যান চলাচল করতে না পারার কারণে যেমন যানজট হচ্ছে, তেমনি মধুপুর-বিষ্ণুপুর রোডে বহরমপুর পুরসভার তরফে টোল-ট্যাক্স আদায়ে কোনও ছাড়পত্র না মেলায় ওই যানজট আরও তীব্র আকার নিয়েছে। রাস্তার বেহাল দশায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন বহরমপুরে বেড়াতে পর্যটকরাও। তাঁদের কথায়, বৃষ্টির কারণে এমনিতেই বাইরে কোথাও বের হওয়া যাচ্ছে না। কাছে-পিঠে কোথাও বেড়াতে যাবো, রাস্তার বেহাল দশায় তাও যেতে ভয় পাচ্ছি। যে কোনও সময়ে গাড়ি উল্টে বড় ধরনের বিপত্তি ঘটে যাবে।
বহরমপুরের বাসিন্দাদের মুখে এখন একটাই প্রশ্ন, রাস্তা কবে ঠিক হবে? বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলেন, “বহরমপুরে সব মিলিয়ে ৭টি রাস্তার কাজের দরপত্র ঘোষণা হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার পরেই রাস্তার কাজ শুরু হবে। কিন্তু বৃষ্টিতে তো আর পিচের কাজ করা যায় না, এটাও মানুষকে বুঝতে হবে। বৃষ্টি থামলেই কাজ শুরু হবে। কিন্তু একটনা বৃষ্টি তো লেগেই রয়েছে।” |