সম্পাদক সমীপেষু...
‘বিতর্কিত নির্মাণে বৈধতার ছাড়পত্র’

আপনাদের পত্রিকার কলকাতার পাতায় ‘বিতর্কিত নির্মাণে বৈধতার ছাড়পত্র’ (২৫-৬) প্রসঙ্গে জানাই, সাংবাদিকদের সংবাদ পরিবেশনের স্বাধীন অধিকার নিশ্চয়ই আছে, কিন্তু আমার বক্তব্য থেকে কিছু বাদ দিয়ে অন্য কথা লেখার স্বাধীনতা কে দিল? বক্তব্য বাদ দিয়ে আমাকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার চেষ্টা চলছে, যেটা আমি (২৭-৭) পুর নিগম এবং হাওড়া আদালত চত্বরে পোস্টার দেখে বুঝতে পারলাম যে, কাদের নির্দেশে বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। যেমন, আমি যদি বলি, “কে বলল, আমি রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা করি না”? এ বার যদি ‘কে বলল’ কথাটা বাদ দিয়ে ছাপা হয়, তা হলে দাঁড়ায় অরুণ রায়চৌধুরী বলেছেন, তিনি রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধা করেন না। আপনাদের পরিবেশিত সংবাদে ঠিক এই জিনিসই করা হয়েছে। যে বিচ্যুতির জন্য আমি ৩২ নং জগৎ ব্যানার্জি ঘাট রোডের মলটির বিষয়ে মাননীয়া মেয়রের কাছে বিবেচনা করতে বলেছিলাম। সেই চিঠি আপনাদের কাছে থাকা সত্ত্বেও ছাপা হল না। এটাই সবচেয়ে দুঃখের ।
দীর্ঘ বাম শাসনে নকশা অনুমোদন ছাড়াই বহু বেআইনি বহুতল নির্মাণ হয়েছে। বিরোধী দল সম্মিলিত ভাবে প্রতিবাদ করা সত্ত্বেও আজ অবধি হাওড়া পুর নিগম কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। এমনকী বে-আইনি বহুতল থেকে নিগম বা রাজ্য সরকার এক টাকাও কর আদায় করতে পারেনি। উল্টে নিগমের করদাতাদের পয়সায় বেআইনি বহুতল নির্মাণকারী ও বসবাসকারী সমস্ত পুর পরিষেবার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। ফলে, নিগম এবং সরকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে।
উপরোক্ত মলটির ক্ষেত্রে যে বিচ্যুতি আছে
১) তার পাঁচিল উঁচু করা হয়েছে।
২) আলসের উপর উচ্চতা বাড়ানো হয়েছে। উচ্চতার ক্ষেত্রে আমার বক্তব্য, ওই মল থেকে সামান্য দূরে বিদ্যাসাগর সেতু সংলগ্ন মন্দিরতলার দিকে ব্রিজ থানার পাশে যে আকাশচুম্বী বহুতলটি নির্মিত হচ্ছে তাতে যদি পরিবেশগত ক্ষতি না হয়, তা হলে এই মলটির ক্ষেত্রেও পরিবেশগত কোনও ক্ষতি হবে না বলেই আমার ধারণা।
এই মলটিকে ছাড়পত্র দেওয়ার ফলে নিগম এবং রাজ্য সরকার-সহ এই এলাকার বেকারদের কী সুযোগ সুবিধা হচ্ছে দেখেই আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিবেচনা করতে বলি।
মলটি চালু হলে সুবিধাগুলি কী?
১) ২০০০ বেকার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হলে পরোক্ষ ভাবে ২০০০×৪=৮০০০ জন উপকৃত হবেন।
২) সরকার রেজিস্ট্রি বাবদ প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা পাবে।
৩) নিগম ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা প্রতি বছর পাবে।
৪) দোকানঘরগুলি চালু হলে ওদের টার্গেট অনুযায়ী সেলস ট্যাক্স বাবদ রাজ্য সরকার মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পাবে।
৫) মলে আইনক্স হওয়ায় রাজ্য প্রমোদ কর বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা পাবে।
এ ক্ষেত্রে বি এম আর-টি ছাড় দিলে আমরা (কর্পোরেশন এবং স্টেট গভর্নমেন্ট) উপকৃত হব, তাই এ বিষয়ে সুপারিশ নয়, বিবেচনা করতে বলেছিলাম। সুতরাং ছাড়পত্রের দায় নিগমের বর্তমান বোর্ডের, আমার নয়।

প্রতিবেদকের বক্তব্য: নকশার বিচ্যুতি করায় যে মলটি আগে থেকেই অবৈধ ঘোষিত, সেই মলটির বৈধতার জন্য মেয়রকে চিঠি লিখে ‘বিবেচনা’ করতে বলা ‘সুপারিশ’-এরই নামান্তর। প্রশ্ন হল, যে বিরোধী দলনেতা একমাস আগে পুরসভার মাসিক অধিবেশনে মলটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সেই নেতাই ফের মল মালিকদের লেখা চিঠির ওপর অবৈধতা মেনে নিয়ে মেয়রকে ‘বিবেচনা’ করতে বলেন কী করে? তা ছাড়া বিরোধী দলনেতা ওই অবৈধ কাজ সমর্থন করার জন্যই যে পুরসভা “বিতর্কিত নির্মাণে বৈধতার ছাড়পত্র” দেওয়ায় উৎসাহী হয়েছে তার প্রমাণ মেলে গত ২১ জুলাই মেয়র পারিষদ বৈঠকের অলোচ্যসূচিতে। তার চতুর্থ পৃষ্ঠার তৃতীয় অনুচ্ছেদের দ্বিতীয় লাইনে লেখা হয়েছে, বাস্তু বিভাগ অনুমোদিত নকশার উচ্চতা বৃদ্ধি জনিত অবৈধ নির্মাণ, জরিমানা আদায়ের সাপেক্ষে মঞ্জুরীকরণের পক্ষে মতামত দিয়েছে, যা কমিশনার মহাশয় ও বিরোধী দলনেতা অরুণ রায়চৌধুরির দ্বারা সমর্থিত। মলটির নকশার বিচ্যুতি নিয়ে পুরসভায় শুনানির সময় মল মালিকের বক্তব্যের সঙ্গে অরুণবাবুর ‘অনুরোধের’ চিঠিটিও সংযুক্ত করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

ভুল
গত ১১ জুলাই ২০১১ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত বিতান ভট্টাচার্যের তোলা ছবির পরিচিতি হিসাবে জানানো হয়েছে ‘উল্টোরথ উপলক্ষে কাশীপুর উদ্যানবাটী থেকে ব্যারাকপুর অন্নপূর্ণা মন্দিরে নিয়ে আসা হল শ্রীরামকৃষ্ণের পাদুকা’। কাশীপুর উদ্যানবাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণের কোনও পাদুকা নেই এবং এখান থেকে পাদুকা নিয়ে যাওয়ার কোনও ঘটনাও সে দিন ঘটেনি।
জনতার শাসন
ছিনতাইকারীর উপর ‘জনতার শাসন’ (২৭-৪) সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলা দরকার। ছিনতাইকারী যুবককে পুলিশের হাতে তুলে না-দিয়ে একদল উন্মত্ত জনতা যে নৃশংস আক্রমণ চালিয়েছে তা কোনও সভ্য সমাজের রীতি বা সমস্যা সমাধানের পথ হতে পারে না। এটা একদল বিকৃত মনের মানুষের আদিম হিংস্রতার প্রকাশ। ছিনতাইকারী যুবকের অপরাধের বিচার কেবল মাত্র দেশের আইন অনুযায়ী হতে বাধ্য, অন্য কোনও পথে নয়। যারা ছিনতাইকারী
যুবকের উপর নৃশংস আক্রমণ চালিয়েছে তারাও আইনের চোখে অপরাধী। পুলিশ ঘুষ খেয়ে অপরাধীকে ছেড়ে দেয়, তাই আইন নিজের হাতে তুলে নেব, এটা কোনও যুক্তি হতে পারে না।
Previous Item editorial First Page


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.