তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’, এ বার বিক্ষোভের মুখে মন্ত্রী
ন্ত্রীর সামনেই স্থানীয় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন দলের মহিলা সমর্থকেরা। ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা হল মন্ত্রীকে। রবিবার দুপুরে বর্ধমান শহরে ওই ‘অভিজ্ঞতা’র পরে হাত-পা কাঁপতে দেখা গেল রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের। রবিরঞ্জনবাবু অবশ্য বিক্ষোভের কথা মানতে চাননি।
কিন্তু তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেছেন, “ঘটনাটা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, দল তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করবে।”
রবিরঞ্জনবাবু এ দিন বর্ধমানের টাউন হলে গিয়েছিলেন একটি রাষ্টায়ত্ত ব্যাঙ্কের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভায়। বেলা ১২টা নাগাদ সেখান থেকে দলের লোকেদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে তিনি গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন। আচমকাই এক দল মহিলা তাঁকে ঘিরে ধরেন। তাঁরা বার বার বলতে থাকেন, “আমরা আপনাকে ভোট দিয়েছি। মন্ত্রী করেছি, তার প্রতিদানে কি আমাদের এ ভাবে দলেরই কিছু সমর্থকের আর পুলিশের হামলার শিকার হতে হবে?” বিক্ষোভকারীদের মধ্যেই এক মহিলা চিৎকার করে বলতে শুরু করেন, “আমরা সবাই বাদামতলার মেথরপাড়ায় বস্তিতে থাকি। আপনাদের এক নেতার নির্দেশে পুলিশ আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছে। আমরা কি এই দিন দেখার জন্য তৃণমূল করেছি, না আপনাকে ভোট দিয়ে জিতিয়ে বিধায়ক, মন্ত্রী করেছি? এ কাজ আপনাকেই বন্ধ করতে হবে।” এরই মধ্যে কেউ কেউ আবার রবিরঞ্জনবাবুকে ধাক্কা দেওয়ারও চেষ্টা করেন।
মন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ। ছবি: উদিত সিংহ
মন্ত্রী যে এ ভাবে হঠাৎ বিক্ষোভের মুখে পড়বেন, পুলিশ তা আন্দাজ করতে পারেনি। তবে ‘পরিস্থিতি’ দেখে কিছুক্ষণের মধ্যে ছুটে আসেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা রবিরঞ্জনবাবুকে উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে দেন তাঁরা। তখন দৃশ্যতই বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল মন্ত্রীকে। তবে পরে রবিরঞ্জনবাবু দাবি করেন, “আমি বিক্ষোভের মুখে পড়িনি। আমাকে নিগ্রহের চেষ্টাও কেউ করেনি। পুলিশ একটি ওয়ার্ডের বাড়ি-বাড়ি গিয়েছিল কিছু লোকের খোঁজে। সেই সময় কিছু মহিলার সঙ্গে পুলিশের গোলমাল বাধে। ওই মহিলারা আমাকে সেই ব্যাপারে অভিযোগ জানাতেই এসেছিলেন। পুরো ঘটনা আমি মুকুল রায়কে জানিয়েছি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ‘পরিস্থিতি’র সূত্রপাত বর্ধমান শহরের কার্জন গেট এলাকায় ম্যান্ডেলা পার্কের একটি ঘরে তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মীর বসা নিয়ে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা শিবনাথ ঘোষের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরেই দলের কয়েক জনের সঙ্গে তিনি নিজেও সেখানে বসেন। শুক্রবার দুপুরে বাদামতলার মেথরপাড়া থেকে দলেরই কিছু সমর্থক সেখানে ঢুকে ‘বিনা প্ররোচনা’য় তাঁদের ‘মারধর’ করার চেষ্টা করেন।
এই ‘হামলা’র প্রতিবাদে লাঠি নিয়ে মিছিল হয় সন্ধ্যায়। মেথরপাড়ার তৃণমূল সমর্থকদের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, শিবনাথবাবুর অনুগামীরাই তাঁদের ‘মেরেধরে’ পার্ক থেকে বের করে দিয়েছিল। শুক্রবার রাতে স্থানীয় আর এক তৃণমূল নেতা উত্তম সেনগুপ্তর নেতৃত্বে মেথরপাড়ার সমর্থকেরা ম্যান্ডেলা পার্কে শিবনাথবাবুরা যে ঘরে বসেন, সেটিতে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ শিবনাথ-গোষ্ঠীর। উত্তমবাবু অবশ্য সে অভিযোগ মানেননি। সেই ঘটনায় জড়িতদের খুঁজতেই শনিবার পুলিশ বাদামতলা বস্তিতে হানা দিয়েছিল বলে বর্ধমান থানা সূত্রের খবর।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শনিবারই বর্ধমান শহরে গিয়ে বিধায়ক ও নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে সোম-মঙ্গলবারের মধ্যে দু’পক্ষের দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার আগে রবিবারের ঘটনা বেশ ‘অস্বস্তিকর’ হয়ে থাকল তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.