|
|
|
|
সিপিএম নেতা প্রহৃত তালড্যাংরায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তালড্যাংরা ও রাইপুর |
স্কুল থেকে ফেরার পথে বাঁকুড়ার তালড্যাংরার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা সিপিএম নেতাকে মারধর করা হল। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। বুধবার বিকেলে তালড্যাংরার উদ্যান বিভাগের অফিসের কাছে ঘটনাটি ঘটে। অন্য দিকে, জেলারই রাইপুর থানার আমচূড়া গ্রামে এ দিন জমি নিয়ে বিবাদের জেরে তিন তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। পুলিশ দু’টি ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
তালড্যাংরায় প্রহৃত শ্যামল মিদ্যা স্থানীয় সরালিয়া পাকুড়ডিহা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি সিপিএমের বাঁকুড়া শহর পশ্চিম (১) লোকাল কমিটির সম্পাদক তথা বাঁকুড়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান শিউলি মিদ্যার স্বামী। তিনি দু’পা, হাত ও পিঠে গুরুতর চোট পেয়েছেন। দলের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে তালড্যাংরা গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। পরে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্যামলবাবুর অভিযোগ, “সহকর্মীর মোটরবাইকে এ দিন স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। সাইকেল ফেলে রাস্তা আটকেছিল তৃণমূলের গুন্ডারা। মোটরবাইক থামাতেই সাত-আট জন লাঠি দিয়ে আমাকে পেটায়। পরে লোকজন ডাকতে ওরা পালায়।”
কেন এই হামলা, সে প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, “২১ জুলাইয়ের শহিদ দিবসের সভার জন্য তৃণমূল যে টাকা দাবি করেছিল, আমার স্কুলের শিক্ষকরা তার চেয়ে কম দিতে চাওয়ায় ওরা আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। সহ-শিক্ষকদের আমাকে মোটরবাইকে না চাপানোর হুমকিও দিয়েছিল। সহ-শিক্ষকরা তা না মানায় তৃণমূলের লোকজন আমাকে মেরেছে। থানায় অভিযোগ করেছি।” তালড্যাংরা ব্লক তৃণমূল সভাপতি মনসারাম লায়েকের অবশ্য দাবি, “এমন কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। যদি হয়েও থাকে, তা বাঞ্ছনীয় নয়। দল এ সব বরদাস্ত করে না। পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করুক।”
রাইপুরের ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে থানায় সিপিএমের নেতা-কর্মী সহ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রাইপুরের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের প্রদেশ কমিটির সদস্য গৌতম বিশ্বাসের অভিযোগ, “আমচূড়া গ্রামের ভূমিহীন খেতমজুর মানিক মণ্ডল ১০ বছর ধরে ২৪ কাঠা জমি চাষ করছেন। তিনি আগে সিপিএম করলেও এখন তৃণমূল করেন। সম্প্রতি তাঁকে জমি থেকে উৎখাত করেছেন কৃষকসভার নেতা যোগেন্দ্র দুলে, নেপাল দাস-সহ সিপিএমের কয়েক জন কর্মী-সমর্থক। এ দিন সকালে তার প্রতিবাদ করায় আমাদের কিছু কর্মীর উপরে সিপিএমের সশস্ত্র লোকজন হামলা চালায়।” তৃণমূল কর্মী শ্রীকান্ত হাঁসাদ, দীপক মণ্ডল ও নাদন মল্লিক জখম হয়েছেন বলে গৌতমবাবু জানিয়েছেন। মানিকবাবুর দাবি, “ওই জমি চাষ করি বলে যোগেন্দ্র দুলে ফি বছর আমার কাছ থেকে টাকা নিতেন। এ বার টাকা না দেওয়ায় চাষ করতে দিচ্ছেন না ওই সিপিএম নেতা।”
যোগেন্দ্রবাবু অবশ্য সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, “আমি মানিকের কাছ থেকে কোনও দিন টাকা নিইনি। ওই জমি সরকারি ভাবে খাস ঘোষিত হয়েছে। জোর করে তিনি সেখানে চাষ করছিলেন। আমরা ওই জমি পাট্টা দেওয়ার দাবি করেছি। গ্রামের কিছু ভূমিহীন মানুষকে ওই জমি বিলি করা হবে।” জমি দখলের জন্য তৃণমূলের লোকজনকে নিয়ে মানিকবাবুই গণ্ডগোল পাকিয়েছেন বলে তাঁর পাল্টা অভিযোগ। সিপিএমের রাইপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক শ্যামসুন্দর মহাপাত্র বলেন, “আমচূড়ায় জমি নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু মারধরের খবর জানা নেই।” এসডিপিও (খাতড়া) অলোক রাজোরিয়া বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|