দুর্ঘটনার আতঙ্ক নিয়েই রোজ স্কুলে যাচ্ছে খুদেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মন্তেশ্বর |
ক্লাস ঘরের ছাদে ফাটল। মাঝেমধ্যেই সেখান থেকে খসে পড়ে চাঙড়। এর মধ্যেই বিপদের ঝুঁকি নিয়েই দিনের পর দিন পঠন-পাঠন চলছে মন্তেশ্বরের রাউতগ্রাম ডি ডি পাঁজা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আশঙ্কা, এই ভাবে পড়াশোনা চলতে থাকলে চাঙড় খসে যে কোনও সময় ঘটতে পারে কোনও বড় ধরণের দুর্ঘটনা।
রাউত গ্রামের মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে এই স্কুলটি। গ্রামবাসীরা জানালেন, আগে এই গ্রামে কোনও স্কুল ছিল না। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য যেতে হত অন্য গ্রামে। দূরত্বের কারণে অনেকেই রোজ স্কুলে যেতে চাইত না। অনেকে আবার মাঝপথে লেখাপড়াই ছেড়ে দিত। প্রায় ৩৬ বছর আগে এই গ্রামে একটি স্কুল তৈরি করতে উদ্যোগী হয় স্থানীয় পাঁজা পরিবার। |
|
ভাঙা ক্লাসঘরেই চলে পড়াশোনা। —নিজস্ব চিত্র। |
বর্তমানে এই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা মোট ১৩৬। তাদের পড়ানোর দায়িত্বে রয়েছেন ৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। রয়েছে চারটি ক্লাসঘরও। এর মধ্যে তিনটিরই ভগ্নদশা। ঘরগুলির দেওয়াল ও ছাদে ফাটল ধরেছে। বিপদের আশঙ্কায় কয়েক জায়গার চাঙড় আগে থেকেই খুলে রাখা হয়েছে।
স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি, বর্ষার সময়ে সমস্যা আরও বাড়ে। ছাদ থেকে বৃষ্টির জল চুঁইয়ে পড়তে থাকে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে পড়াশোনা করতে সমস্যা হয় স্কুলের পড়ুয়াদের। শীতকালে মেঝে ও স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে। স্কুলে সারা বছরই মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা থাকে। তবে জায়গায় অভাবে মিড-ডে মিল নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সমাপ্তি দে চৌধুরী বলেন, “স্কুলের তিনটি ঘর থেকে মাঝেমধ্যেই চাঙড় ভেঙে পড়ছে। স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রশাসনের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।” রাউতগ্রাম স্কুলের সমস্যার কথা জানেন স্থানীয় মামুদপুর ২ পঞ্চায়েত প্রধান স্বপন দে। তাঁর কথায়, “স্কুলটি ক্রমশ বসে যাচ্ছে। স্কুলের এই সমস্যা সমাধানের জন্য যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন, তা পঞ্চায়েতের পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়। তাই পঞ্চায়েতের তরফ থেকে সাহায্য চাওয়া হয়েছে ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির কাছে।” মন্তেশ্বর পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলটির পরিকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। |
|