|
|
|
|
পানাগড়ের ঘটনায় অভিযুক্ত ছ’জন সিপিএম নেতাও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
দুর্ঘটনায় পরে পানাগড়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ, সরকারি বাস ভাঙচুর ও পুলিশ কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে ধৃত ১৪ জনকে বুধবার দুর্গাপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর।
পথ দুর্ঘটনায় কোন্নগরের এক যুবকের মৃত্যুতে মঙ্গলবার রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে কাঁকসার পানাগড় বাজার এলাকা। রাস্তার ওই অংশে সংস্কারের কাজ করছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। সে জন্য বোল্ডার ফেলে রাখা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বোল্ডারের জন্যই এ দিন দুর্ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে স্থানীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার একটি বাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। জখম হন ৫ পুলিশকর্মী। এর পরেই পুলিশ লাঠি চালায়। শূন্যে গুলিও ছোড়ে বলে অভিযোগ। সে দিনই গ্রেফতার করা হয় ১৪ জনকে।
পুলিশ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত থাকার অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সরাসরি বিক্ষোভ ও পুলিশকে ইট-পাটকেল ছোড়ায় যুক্ত ছিল। কিন্তু কয়েক জন নেপথ্যে থেকে তাঁদের ইন্ধন জুগিয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ আরও ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ সুপার বলেন, “তাঁদের মধ্যে এক মহিলাও রয়েছেন, যিনি এক এএসআই-কে ঠেলে ফেলে দিয়েছিলেন। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” পুলিশ যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে সেই তালিকায় রয়েছেন সিপিএমের কাঁকসা জোনাল কমিটির সদস্য আব্দুল রহিম, ওমপ্রকাশ অগ্রবাল, কাঁকসা ১ লোকাল কমিটির সদস্য তথা কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ রচিন মজুমদার, এইচএস ভামরা এবং আরও দুই স্থানীয় নেতা।
এ দিকে, সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূল নেতারা যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে বলেছেন কাঁকসা থানার পুলিশ তাঁদের নামই দিয়েছে। কাঁকসা জোনাল কমিটির সম্পাদক বীরেশ্বর মণ্ডল বলেন, “কাঁকসা থানার পুলিশ এখন তৃণমূল নেতাদের কথা শুনে কাজ করছে। সোমবার রাজবাঁধে আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা হল। পুলিশের সামনেই আমাদের কার্যালয়ে ভাঙচুর হল। কোনও পদক্ষেপ হল না। অথচ মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে না থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে আমাদের কর্মীদের জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা স্তম্ভিত।” পুলিশ অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে চায়নি। পুলিশ সুপার বলেন, “রাজনৈতিক রং দেখে কাজ করা হয় না। প্রাথমিক ভাবে যাঁদের দোষী বলে মনে হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।” ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ তার কাজ করছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের যুক্ত থাকার কোনও প্রশ্নই নেই।” বুধবার সকাল থেকে পানাগড়ে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী দিয়ে যানজট রোধের চেষ্টা করা হয়। দিনের বেলায় মোটামুটি পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক ছিল। তবে বেলা যত গড়িয়েছে, পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছে। সন্ধ্যায় যথারীতি যানজট হয়। রাস্তা সংস্কার হয়ে গেলে সমস্যার কিছুটা সুরাহা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জেলাশাসক ওঙ্কারসিংহ মিনা। তিনি বলেন, “রাস্তা ঠিক হয়ে গেলে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও সুবিধা হবে।” জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের চিফ জেনারেল ম্যানেজার অজয় অহলুওয়ালিয়া জানান, ওই তিন কিলোমিটার অংশে গাড়ির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২০ কিমি পর্যন্ত বেঁধে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|