প্রতিকৃতি ও আত্মপ্রতিকৃতি
রবির ছবি
মায় দেখিতে পাবে না আমার মুখে/ কবিরে খুঁজিছ যেথায় সেথা সে নাহি রে’। কবি রবীন্দ্রনাথকে তাঁর ছবিতে পাওয়া যাবে কি না সে তর্ক সাহিত্যের। কিন্তু ইতিহাসের প্রয়োজনেই রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতি সংরক্ষিত হওয়া দরকার। বহু আলোকচিত্রী তাঁর ছবি তুলেছেন, সেখানে নানা মেজাজের রবীন্দ্রনাথ। সে সব ছবির অনেকটাই দেখতে পাওয়া যায় ছাপা অবস্থায়। কিন্তু নানা সময়ে দেশ-বিদেশের বহু শিল্পী নানা ছবি এঁকেছেন রবীন্দ্রনাথের। অবিকল প্রতিরূপ নয়, সে সব ছবিতে অনেক সময়ই শিল্পীর ভাবনায় ধরা পড়েছে রবীন্দ্রনাথ ধারণাটিই। অভীককুমার দে-র উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথের আলোকচিত্রের একটি মহা-সংকলন প্রকাশিত হলেও নানা শিল্পীর আঁকা এই নানা রবীন্দ্রনাথের মালাটি এখনও সে ভাবে গাঁথার চেষ্টা করা হয়নি। সম্প্রতি সেই অভাব অনেকটাই পূরণ করল একটি সুমুদ্রিত অ্যালবাম রবীন্দ্রনাথ: পোর্ট্রেটস অ্যান্ড সেল্ফ পোর্ট্রেটস (বিশ্ব-ভারতী, ১০০০.০০)। রবীন্দ্রনাথকে শিল্পীরা এঁকেছেন তাঁদের দেশের ও নিজস্ব ভাবনার প্রেক্ষিতে। যেমন, নিকোলাস রোয়েরিখ তাঁর অননুকরণীয় শৈলীতে চৈনিক দার্শনিকের আদলে এঁকেছেন ‘পোয়েট’।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া গিয়েছে প্রিয়প্রসাদ গুপ্তের বর্ষাভেজা রবীন্দ্রনাথকে। এলিজাবেথ সাস ব্রুনেরের তেলরঙে ঘুমন্ত রবীন্দ্রনাথ। আছে যামিনী রায়, মুকুল দে, রাধাচরণ বাগচী, আঁদ্রে কার্পেলে, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রভাত দেব, অলকেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রদেনস্টাইন, প্রতিমা ঠাকুর, হেনরি ল্যাম্ব, সুনয়নী দেবী, রাণী চন্দ, রমেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সুভো ঠাকুর, বরিস জর্জিয়েভের রবীন্দ্রনাথ। সমসাময়িকদের মধ্যে দুজন যোগেন চৌধুরী ও শুভাপ্রসন্ন। প্রতিকৃতির পাশাপাশি আছে রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি আত্মপ্রতিকৃতি, যার অনেকগুলিই ‘বিশ্ব-ভারতী নিউজ’ পত্রিকার প্রচ্ছদে প্রকাশিত। বিশ্ব-ভারতী ও অন্যান্য নানা সংগ্রহ থেকে এই অ্যালবাম সংকলন ও উপস্থাপন করেছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য রজতকান্ত রায় ও রবীন্দ্রভবনের প্রাধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের একটি আত্মপ্রতিকৃতি ও প্রিয়প্রসাদ গুপ্তের আঁকা ছবি।

আর একটু সিনিয়র
মঞ্চের পিছনে সালভাদর দালির আঁকা ছবি কেন? ‘দালি তো আমার হিরো। কারণ কী জানেন? গোঁফ। গোঁফ দিয়ে যায় চেনা। আমি তো বলি দালি-র গোঁফ আসলে আমারই অ্যাডভান্সড কপি।’ সেই চিরপরিচিত হাসিটি হেসে বলছেন পি সি সরকার (জুনিয়র)। গত কাল, ৩১ জুলাই ছিল তাঁর জন্মদিন। ‘‘ওই দিন জুনিয়র আরও এক বছর সিনিয়র হলেন আর কী! তবে আমি ‘সিনিয়র’ হতে চাই না, সে যোগ্যতাও আমার নেই, আমি জুনিয়রই থাকব।’’ অবিশ্যি তাঁর হাতেই সব, ম্যাজিক করে বয়সকে কমতির দিকেও নিয়ে যেতে পারেন তিনি। মহাজাতি সদনে এখন চলছে তাঁর ও কন্যা মানেকা সরকারের শো। আর পর্দার আড়ালের কথাটি হল, ম্যাজিক নিয়ে বাড়িতেই রীতিমতো একটি আর্কাইভ গড়ে তুলছেন পি সি সরকার। তথ্য জোগাড় করছেন, ইচ্ছে পূর্বপুরুষ আত্মারাম সরকারের একটি জীবনী লিখবেন। আপনার ম্যাজিকের দর্শনটা কী? ‘ওই যে দালি-র কথা বলছিলেন, ওঁর ছবির মতো। সত্য আর মিথ্যার মাঝখানে যে ধূসর জায়গা, সেটাই তো ওঁর ছবির জায়গা, আমার ম্যাজিকেরও,’ বললেন জাদুরাজ।

অভিনেত্রী
‘নির্জন একটা চর আর নদী খুঁজেছিলাম, পেয়েও গেলাম, পেলাম সে-সময়ের সুপারস্টার শত্রুঘ্ন সিংহ আর বৃদ্ধ অথচ তুখোড় অভিনেতা প্রমোদ গঙ্গোপাধ্যায়কেও। কিন্তু ঊনবিংশ শতাব্দীর পটভূমি, ঠিক ওই সময়ের একটা মুখ চাইছিলাম মেয়েটির মধ্যে। আমার স্ত্রী খুকু-রই (নীলাঞ্জনা) এক বান্ধবী শম্পাকে এনে হাজির করল, যেমনটি খুঁজছিলাম একেবারে ঠিক তাই।’ নিতান্ত অকালে ক্যানসারে সদ্য চলে গেলেন শম্পা ঘোষ, সেই সূত্রেই ‘অন্তর্জলী যাত্রা’ ছবি করার স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন গৌতম ঘোষ। ‘ওর অভিনয় দেখে সবচেয়ে খুশি হয়েছিলেন দয়াময়ী মজুমদার, কমলবাবুর স্ত্রী। আমাকে বলেছিলেন: একেবারে যেন উপন্যাসের পাতা থেকে উঠে এসেছে।’ পুরস্কার-প্রশংসা পেলেও পরে অভিনয় ছেড়ে বহু আঞ্চলিক ও জাতীয় টেলিভিশন-অনুষ্ঠানের প্রযোজক হন শম্পা। ‘শম্পার অসুস্থতায় শেষ পর্যায় পর্যন্ত নিঃশব্দে সাহায্য করে গিয়েছে শত্রুঘ্ন’, জানালেন বিষাদগ্রস্ত গৌতম।

ফের অভিনয়ে
বিদ্যাসুন্দর পালা এই সময়ে অভিনয় করাতে চান অনিকেত রায়। তাই নিয়ে নানা জটিলতা। এই সূত্রেই শুরু ‘আভাষ’-এর নতুন নাটক ‘সুন্দরবিবির পালা’। তার পরে তা ক্রমশ পৌঁছে যায় অর্ধনারীশ্বর-এর ধারণায়। এ নাটকে চপল ভাদুড়ি আবার অভিনয়ে। ‘আভাষ’-এর আট বছর উপলক্ষে ৫ অগস্ট অ্যাকাডেমিতে প্রথম অভিনয়। সে দিনই প্রকাশিত হবে ‘সময় নাট্যভাষ’ পত্রিকার তৃতীয় সংখ্যা। চপল ভাদুড়িকে সংবর্ধনা জানাবেন সত্য ভাদুড়ি। দলের পক্ষে শেখর সমাদ্দার জানালেন, পত্রিকার এই তিন সংখ্যা জুড়েই নাট্যপরিভাষা নিয়ে আলাপ-আলোচনা। বাইশে শ্রাবণ অ্যাকাডেমিতেই অভিনীত হবে ‘গোরা’ও।

চমৎকার
মাইকেল মধুসূদনের কন্যা শর্মিষ্ঠার বিয়ে হয় ৭ মে ১৮৭৩-এ। কেমন ছিল তার আমন্ত্রণপত্র? ১৮৮১-তে আহিরিটোলার বাবু প্রিয়নাথ ধরের পুত্র রমানাথ ধরের সঙ্গে জোড়াসাঁকোর বাবু ফকিরচন্দ্র দে-র কন্যার বিবাহে নাকি বর এসেছিল ট্রামগাড়ি ভাড়া করে! কেমন ছিল সেই শোভাযাত্রা? না, কোনও বইতে নয়, সে কালের এমন সব বিখ্যাত বিবাহ-অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ পাওয়া গেল এ কালের এক বিয়ের আমন্ত্রণপত্রে। আগামী ৭ অগস্ট তালতলা নিবাসী এ কালের বাবু শঙ্করকুমার নাথের পুত্র শৌভিকের সঙ্গে বিজয়গড় নিবাসী প্রদীপকুমার রায়ের কন্যা স্বাতীলেখার বিবাহের বউভাত অনুষ্ঠান। সেই উপলক্ষে মুদ্রিত নাথ-পরিবারের ওই আমন্ত্রণপত্রটিকে পুস্তিকা বলাই ভাল। বাঙালি বিবাহের আচার-অনুষ্ঠানের বিবরণ থেকে আরম্ভ করে পুরনো বইয়ের আখ্যাপত্র, বিবাহ-বর্ণনা ইত্যাদির সঙ্গে আছে পাত্র শৌভিকের আঁকা কলকাতা বিষয়ক কয়েকটি চমৎকার রেখাচিত্রও।

সেই ৬ অগস্ট
তামিলনাড়ুর এরওয়াড়ি দরগায় আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছিলেন ২৬ জন মানসিক রোগী। শিকল দিয়ে তাঁদের বেঁধে রাখা হয়েছিল, তাই পালাতে পারেননি। দশ বছর আগে, ৬ অগস্ট ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা। ভারত তার মনোরোগীদের কী ভাবে রাখে, তার চরম নিদর্শন ছিলেন ওই মানুষেরা। কিন্তু তারপর কি কোনও উন্নতি হয়েছে? এমনটি যে আর কোথাও হচ্ছে না, তেমন দাবি কি করা যায়? ভারতে ৬ অগস্ট এখন ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা দিবস’ বলে পালিত হয়। মানসিক রোগীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন দুটি সংস্থা ‘অঞ্জলি’ ও ‘শ্রুতি’ সে দিন অ্যাকাডেমির সামনে একটি জমায়েত ও মিছিল আয়োজন করছে। থাকবে ব্যারাকপুর বিসর্গের নাটক। পরিবারও যাঁদের ভুলে যেতে চায়, তাঁদের কথা মনে করার, মনে করিয়ে দেওয়ার, এই একটা সুযোগ।

পকেটে চিকিৎসা
শরীর থাকলে শরীর খারাপ তো হতেই পারে! কিন্তু অসুস্থ হলে শুভানুধ্যায়ীদের অজস্র উপদেশ শুনে চিকিৎসা-বিভ্রাট হওয়ার উপক্রম। একটু ভেবে ঠিক সময়ে ঠিক সিদ্ধান্ত নিলে শরীর সুস্থ হবেই। দীর্ঘদিনের সাংবাদিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে পাঠকদের এমত সমস্যার সম্মুখীন হয়ে কলম ধরেছিলেন সুজাতা মুখোপাধ্যায়। অতঃপর ১৩০টি অসুখের আদ্যোপান্ত সমাধান নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশ পেল পকেটে চিকিৎসা-র (দীপ, ২০০.০০) প্রথম খণ্ড। রোগের উৎস আলোচনার সঙ্গে রয়েছে অ্যালোপ্যাথি, আয়ুর্বেদ, হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসাপদ্ধতি এবং পথ্য ও নিয়ম। ঘরোয়া চিকিৎসার নিয়ন্ত্রণরেখা কোথায় তাও উল্লেখ করেছেন তিনি। তিনটি ভিন্ন ধারার চিকিৎসাপদ্ধতিকে দুই মলাটে এনে যথেষ্ট সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন সুজাতাদেবী। বইয়ের শেষে সংযুক্ত হয়েছে সেলিব্রিটি টিপস এবং ডাক্তারদের যোগাযোগ সহায়তা। বাকি চার খণ্ডের জন্য পাঠকদের স্বাভাবিক প্রত্যাশা রইল। সঙ্গে দেবাশিস দেবের প্রচ্ছদ।

ঝিল সংরক্ষণ
কলকাতার প্রথম সমবায় উপনগরী গড়ে উঠেছিল দমদম মতিঝিলে। ১৯৩০-এর দশকের গোড়ায়। তখন অবশ্য তাকে কলকাতা বলে গণ্য করত না কেউ! অঞ্চলটির পরিচিত মূলত লর্ড ক্লাইভের বাড়ির জন্য। বহু প্রাচীন ক্লাইভ হাউস এখন জীর্ণ, কিন্তু মতিঝিল ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। এলাকাটিকে ঘিরে রয়েছে একটি পরিখা বা ঝিল। মোতিবিবির ঝিল। সংস্কারের অভাবে ঝিলটি মজে এসেছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আর্বান রিনিউয়াল মিশন-এর টাকায় ঝিলটির সংস্কার হল। এই প্রকল্পে ভারতে এই প্রথম কোনও জলাভূমির সংস্কার হল। এলাকার বাসিন্দা রূপক সেনগুপ্ত জানালেন, ঝিলটির সৌন্দর্যায়ন সম্পূর্ণ করে এখন তা সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায় এ কাজের প্রশংসা করে গেলেন।

অপূর্ব-স্মৃতি
সমষ্টির হিতেই জীবনধারণের সার্থকতা উত্তাল সত্তর দশক এই শিক্ষাই দিয়েছিল ফুলবাগানের শ্যামাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনের মেধাবী ছাত্রটিকে। মধ্য পঞ্চাশে পৌঁছেও সেই জীবনবোধ অটুট ছিল অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের। অন্যায় আর অসমতার বিরুদ্ধে লড়াই জারি রেখেছিলেন জীবনভর। প্রতিষ্ঠানবিরোধী অবস্থান থেকে কোনও দিন কোনও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকেন্দ্রে না পড়ালেও জীবনধারণের প্রয়োজনেই বাড়িতে ছাত্র পড়াতেন। সেটাও সীমাবদ্ধ ছিল না সিলেবাসে। তাই ‘অপুদা’র কোচিংয়ের ছাত্রছাত্রীরা আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে গড়ে তুলেছিলেন ‘এবং ছাত্রছাত্রী’ নামে এক সংগঠন। আমলাশোল, নন্দীগ্রাম-খেজুরি থেকে আয়লা-বিধ্বস্ত সুন্দরবনে ছুটে গিয়েছে তারা। পাশাপাশি ছিল পত্রিকা প্রকাশ, আলোচনাসভা বা বিজ্ঞান-চারুকলা প্রদর্শনী। সেই অপূর্ব জীবনের অবসান হয় গত বছর ৭ অগস্ট। চক্ষু ও দেহদানের অঙ্গীকার রক্ষা করেন পরিজনেরা। এই রবিবার বিকেলে সুকান্ত মঞ্চে আয়োজন হয়েছে প্রথম ‘অপূর্ব মুখোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা’র। বিকল্প শক্তি বিষয়ে বলবেন অধ্যাপক-গবেষক সুজয় বসু। প্রকাশিত হচ্ছে স্মরণিকাও।

টেক ওয়ান
জীবনের বিতর্কিত বিষয়গুলিকে চলচ্চিত্রকারেরা যে ভাবে তাঁদের ছবিতে সাংস্কৃতিক কিংবা ঐতিহাসিক প্রেক্ষিতে তুলে ধরেন, তারই একটা হদিশ মিলবে টেক ওয়ান/ রিফ্লেকশনস অন সিনেমা-য়, সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিউট-এর মুখপত্রে। জানিয়েছেন সেখানকার ডিরেক্টর শংকর মোহন, আর সম্পাদকীয়তে ডিন নীলোৎপল মজুমদারের মন্তব্য: সিনেমার সাম্প্রতিক পরিবর্তনের ছবি এ-পত্রে। চমৎকার ছবি ও ছাপায় ফিল্মের বিচিত্র ও বিস্তৃত দিকগুলি ধরা পড়েছে পত্রিকার নানা রচনায়। ক’দিন আগেই প্রেস ক্লাবে প্রকাশ পেল সংখ্যাটি, আর তারও ক’দিন আগে ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের জীবনের প্রথম যে দশ মিনিটের এক-একটি ছবি বানিয়েছেন সেগুলি একসঙ্গে দেখানো হল এসআরএফটিআই প্রেক্ষাগৃহে। অনুষ্ঠানটির নাম ছিল: ‘ফার্স্ট ফ্রাইডে! অন্য দিকে, ফিল্মস ডিভিশন ও নন্দন-এর যৌথ প্রয়াসে ৮-৯ অগস্ট রোজ সন্ধে ৬টায় নন্দন-৩-এ রবীন্দ্রনাথের সত্তরতম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর কবিতা-নাটক-গল্প অবলম্বনে তৈরি কিছু স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি দেখানো হবে। নির্মাতাদের মধ্যে রয়েছেন ফণী মজুমদার দেবকীকুমার বসু মৃণাল সেন প্রমুখ।

অসময়ে
মাত্র চুয়াল্লিশ বছর বয়সে, এক রকম অসময়েই চলে গেলেন লেখক-সাংবাদিক তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সহ-তথ্য আধিকারিক সেরিনা জাহান। শাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল ও লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের পাঠ শেষ করে সেরিনা সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফেরেন। সাংবাদিকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করে পরে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অকাদেমি ও শেষে ‘পশ্চিমবঙ্গ’ পত্রিকায় অবর সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি লেখালিখি, সম্পাদনাও করেছেন। তার মধ্যে সোভিয়েত দেশে ভাঙনের প্রেক্ষাপটে লেখা ধূসর মস্কো উল্লেখযোগ্য। লিখেছেন রোকেয়া শাখাওয়াতের জীবনীও। এ ছাড়া সম্পাদনা করেছেন তুলসী লাহিড়ীর উপর লেখা একটি বই ও রোকেয়া রচনাবলি।

আগের মতো
মহড়া চলছে কালিন্দীর সেই বাড়ির একতলার ঘরে। আগে যেমন চলত। নির্দেশক মহড়া পরিচালনা করছেন। আগে যেমন করতেন। মাঝখানে একটা পালাবদল ঘটে গিয়েছে, নির্দেশক ব্রাত্য বসু এখন আর শিক্ষক নন, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু তাতে কী? ব্যস্ততার চূড়ান্ত সময়েও নাটক ছাড়েননি তিনি। এই সময়ের উল্লেখযোগ্য নাট্যকার তিনি, অনেক নাটক লিখেছেন, আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে তাঁর নাটক সমগ্রের দুটি খণ্ডও। পাশাপাশি আগের মতোই নির্দেশনা দিচ্ছেন নাটকের। শুরুটাই হয়েছিল ‘অশালীন’ দিয়ে, চোদ্দো বছর আগে। তার পরে ছোট-বড় মিলিয়ে এ পর্যন্ত পঁয়ত্রিশটি নাটক। কিন্তু শুধু নাটক লেখা বা নির্দেশনার মতো নেপথ্যের কাজ নয়, নাটকে অভিনয়ও করছেন ব্রাত্য। এই মুহূর্তে বিজয় তেন্ডুলকরের ‘কন্যাদান’ নাটকে। গতকাল গিরিশ মঞ্চে অভিনয় হল তার।
 
নাট্যকার
হাতের কাছে হয় না খবর, কী দেখতে যাও দিল্লি লাহোর। বাউলের গানের এই লাইনটা বাঙালি ও প্রতিবেশী সাহিত্য সম্পর্কে বেশ খাটে। বিদেশি সাহিত্যের খবর বাঙালি যতটা রাখে সে তুলনায় ভারতের নানা ভাষার সাহিত্যের খবর কতটা রাখে সে নিয়ে তর্ক হয়েছে বহু। কিন্তু একটা ব্যাপার তর্কাতীত, অন্তত বাংলা নাট্য প্রতিবেশী নাটকের কাছে গিয়েছে বহু বার। অভিনয়যোগ্য নাটকের অভাবেই হোক বা নাট্য চর্চায় বৈচিত্রের খোঁজেই হোক, এ শহরের মঞ্চে প্রতিবেশী নাটক অভিনীত হয়েছে অনেক বার। এ বার এই শহরে নিজের সদ্যসমাপ্ত নাটক পড়তে আসছেন মরাঠি নাট্যকার সতীশ আলেকর।
সতীশ কর্মজীবন শুরু করেছিলেন বায়োকেমিস্ট হিসাবে, পুণে মেডিক্যাল কলেজে। তার পরে নাটকের জগতে। এখন নাটকের মধ্যেই থাকেন সর্বক্ষণ। শুধু নাট্যকার নন, সতীশ অভিনেতা ও নির্দেশকও। পুণের থিয়েটার অ্যাকাডেমি-র প্রতিষ্ঠাতা। সেই সত্তরের দশক থেকেই ক্রমে মরাঠি তথা আধুনিক ভারতীয় নাট্যে মহেশ এলকুঞ্চওয়ার ও বিজয় তেন্ডুলকরের সঙ্গে উচ্চারিত হয় তাঁর নাম। পুণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ললিতকলা কেন্দ্রের বিভাগীয় প্রধান এই নাট্যকার এখনও ব্যস্ততার মধ্যেও নাটক লিখছেন। তাঁর ‘মহানির্বাণ’, ‘বেগম বার্ভে’র মতো নাটক আজও দিকচিহ্ন হয়ে আছে। এ বার তিনি শেষ করেছেন তাঁর নতুন নাটক ‘এক দিবস মাথাকাড়ে’। ৩ অগস্ট, বুধবার সন্ধেয় থীমা-র আয়োজনে প্রকাশনার সতীশ মুখার্জি রোডের ভবনে তাঁর নতুন নাটকটি থেকে পড়বেন সতীশ। তার পরে শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় ও দর্শকদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন।
  First Page  


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.