সঙ্গীত সমালোচনা ২...
পঞ্চকবির গানে ও সুরে
কোনও একক গানে শ্রোতাদের ভাল লাগার ‘রসদ’ পুরোপুরি বজায় না থাকলে মনে তেমন দাগ কাটে না। কিন্তু এর ব্যতিক্রম দেখা গেল ‘অ্যাকাডেমি থিয়েটার’-এর প্রযোজনায় একটি অনুষ্ঠানে। ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে শোনা গেল, শুধু রবীন্দ্রনাথ নয়, পঞ্চকবির বিভিন্ন গান। জি ডি বিড়লা সভাঘরে। ভাবনাতেও নতুন। রবীন্দ্রনাথের পাশাপাশি অতুলপ্রসাদ সেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন, নজরুল ইসলাম। মাত্র দু’ ঘণ্টার অনুষ্ঠানে শিল্পী নির্বাচন করেছিলেন পঞ্চকবির মোট ১৫টি গান। গায়কিতে ফুটে ওঠে রেওয়াজ ও সঠিক স্বরক্ষেপণের যোগ্য মিশ্রণ।
১৯১৪ সালে রবীন্দ্রনাথের আমন্ত্রণে অতুলপ্রসাদ রামগড়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁরা দু’জনে একসঙ্গেই থাকতেন। অতুলপ্রসাদ লক্ষ করতেন, প্রতিদিন ভোরবেলা বাইরে বেরিয়ে গিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে গান রচনা করছেন রবীন্দ্রনাথ। সেই আবেগ এখনও কত অটুট শ্রোতাদের অন্তঃস্থলে ‘এই লভিনু সঙ্গ তব’ সেই গানে। বাংলা গানে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের অবদানও কম কিছু নয়। এখানে শিল্পী বেছে নিয়েছিলেন এমনই গান, যা আজও শ্রোতাদের অন্তঃস্থলে নাড়া দেয়। ‘ধনধান্যে পুষ্পে ভরা...’ সত্যিই অনবদ্য। এমনই বিভিন্ন প্রসঙ্গ উঠে আসে অতুলপ্রসাদ সেনের গানের আগেও। অতুলপ্রসাদ বিলেতে ব্যারিস্টারি পড়া শেষ করে লখনউতে ফিরে এলেন। সেখানেই প্রচুর গান লিখে সুর দিয়েছিলেন। অনেকগুলি গানের মধ্যে ঋদ্ধির কণ্ঠে উল্লেখযোগ্য গান হল, ‘যাব না, যাব না, যাব না ঘরে’। সুরের ওঠা-নামায় অনায়াস স্বচ্ছন্দ।
পঞ্চকবির গানে রজনীকান্ত সেনের ‘যেখানে যে দয়াল আমার’ গানটি বহু দিন পরে শ্রোতাদের বাড়তি পাওনা। ১৮৬৫ সালে পাবনা জেলার ভাঙাবাড়ি গ্রামে অতুলপ্রসাদ জন্মেছিলেন। ওকালতি করার পাশাপাশি তিনি অনেক গান লিখেছিলেন, যেখানে গ্রামবাংলার নস্টালজিক অনুভূতি মনকে উদ্বেল করে।
ব্যতিক্রম নন নজরুলও। তাঁর অসংখ্য গানের মধ্যে কয়েকটি গান এ দিনের জন্য নির্বাচন করেছিলেন ঋদ্ধি। যেমন, ‘আমি সূর্যমুখী ফুলের মতন দেখি তোমায়’। পঞ্চকবির বিভিন্ন গানের বিভিন্ন ধারায় নিজেকে মেলে ধরা। এ দিন বিভিন্ন যন্ত্রে সহযোগী শিল্পীরা ছিলেন ঋদ্ধদেব, আবলু চক্রবর্তী, দেবাশিস হালদার, সৌরভ ঘোষ। মঞ্চ সমীর আইচ। অনুষ্ঠান সংযোজনায় মধুমিতা বসু।

বৈচিত্রে ঠাসা
সম্প্রতি শিশিরমঞ্চে ‘আস্থায়ী’র নিবেদনে ছিল ব্যঙ্গাত্মক ‘মিঠে-কড়া কবিতা ও ছড়া’র সুন্দর অনুষ্ঠান। রবীন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রলাল, সুকুমার রায়, সুকান্ত ভট্টাচার্য থেকে এই প্রজন্মের কবি। সংস্থার শিশুশিল্পীরা পাঠ করল যথেষ্ট নিপুণতার সঙ্গে। কিশোর-কিশোরীদের নিবেদনে ছিল নজরুলের ‘প্রবর্তকের ঘুর চাকায়’ এবং হরিনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘প্রতিহিংসা’ গল্পপাঠ প্রশংসনীয়। দ্বিতীয় পর্বে অজয় ভট্টাচার্য রচিত ‘ঠাকুরের নরেন ও স্বামীজির শ্রীমা’ শ্রুতিনাটকে অমলেন্দু ভট্টাচার্য, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, তুহিনা দত্ত, শক্তিব্রত দাস, সুদর্শনা ভট্টাচার্য অংশগ্রহণ করেন। সুললিত কণ্ঠে এবং ভাবাবেগে মুগ্ধ করেন সুদর্শনা ভট্টাচার্য। বিবেকানন্দের চরিত্রে অমলেন্দু ভট্টাচার্য প্রাণবন্ত অভিনয় করলেন। তাঁর বলিষ্ঠ কণ্ঠে বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতা শ্রোতাদের ভূয়সী প্রশংসা কুড়োয়।
Previous Item Patrika First Page


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.