|
|
|
|
উধাও দাঁত-নখ-লেজ |
ফের নেপালে ঢুকে গুলিতে হত দাঁতাল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
মেচি পার হয়ে প্রতি বছরের মতো এ বারও হাতির পাল ঢুকে পড়েছিল নেপালে। দিন কয়েক ধরে সেখান থেকেই খবর মিলছিল হাতির দৌরাত্ম্য ঠেকাতে ফসল বাঁচাতে নেপালের গ্রামগুলিতে গুলি ছুঁড়ছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। নকশালবাড়ি লাগোয়া নেপাল সীমান্তের মইসাবাথান এলাকায় একটি দাঁতালের দেহ উদ্ধারের পর সেই খবরেরই সমর্থন মিলল।
বন দফতর থেকে জানা গিয়েছে বুধবার রাতেই গ্রামের বাসিন্দাদের কয়েক জন পূর্ণ বয়স্ক হাতিটির পচন ধরা দেহের খোঁজ পান। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা জঙ্গলে ঢুকে দাঁতালের দেহটি পড়ে থাকতে দেখে শুক্রবার কার্শিয়াং বন বিভাগে খবর দেন। তবে দাঁতালের দুটি দাঁত, লেজ এবং নখ লোপাট হয়ে গিয়েছে। কার্শিয়াং বন বিভাগের ডিএফও ওয়াই টি এডেন বলেন, “দাঁতালের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। কিন্তু বিদেশি রাষ্ট্রে কোনও হাতি মারা গেলে আমাদের কিছুই করার থাকে না। ঊর্ধ্বতন কর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি।” নেপালের বন দফতরের ডিএফও (ঝাঁপা) এ পি শর্মাও জানান, হাতির দেহ মেলার খোঁজ তাঁরাও পেয়েছেন। সেখানে বনকর্মীদের পাঠানো হয়েছে।
|
|
শুধু ওই হাতির মৃত্যুই নয়, বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গুলিতে জখম আরও একটি হাতি নদী পার হয়ে বামনপোখরির জঙ্গলে আস্রয় নিয়েছে। তার বাম পায়ে গুলি লেগেছে। প্রায়ই সে’টিকে বসে পড়তে দেখা যাচ্ছে। তার চিকিৎসার জন্য এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের একটি দল হাতিটির খোঁজও শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। গত ১২ জুলাই নেপালের বামনডাঙি এলাকায় গ্রামবাসীরা বুনো হাতির উপরে গুলি চালায় বলে প্রথম খবর আসে। পরে দেখা যায় ওই গুলি চালনার ঘটনায় দুটি হাতি জখম হয়েছে। মৃত হাতিটির গুলি লেগেছিল মাথায়। সেই অবস্থাতেই হাতিটি বামনডাঙি থেকে মাইসাবাথানে কোনওক্রমে চলে আসে। পরে সেখানেই মারা যায় সে। দাঁতালটির একটি দাঁত উপরে অন্যটি নিচের দিকে। এই ধরণের হাতিকে ‘তালবেতাল’ বলে ডাকতেন বনকর্মীরা। ডাকাবুকো দাঁতালটি বিপদ দেখলেই বুনো হাতির পালকে রক্ষা করতে এগিয়ে যেত। গুলিতে দলের সেই রক্ষাকর্তাই মারা গিয়েছে।
এর পিছনে চোরাশিকারীর হাত থাকতে পারে বলেও মনে করছেন বনকর্মীদের একাংশ। নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ সুনীল ঘোষ বলেন, “যে এলাকায় দাঁতালের দেহ মিলেছে সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ফের যাতে বুনো হাতির পাল লক্ষ্য করে গুলি চালনার ঘটনা না-ঘটে সেই ব্যাপারে বাসিন্দাদের সতর্ক করা হবে।” হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশনের (ন্যাফ) মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “মেচি পেরিয়ে হাতিদের নেপাল যাওয়া ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতি বছরই সেখানে গুলিতে হাতির মৃত্যু হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগ না দেখালে এ ঘটনা বন্ধ হওয়া সম্ভব নয়।” |
|
|
|
|
|