চিটফান্ড চক্রের চাঁই ধরতে নির্দেশ গোয়েন্দা তদন্তের

রাজ্যের বিভিন্ন শহর ও মফস্সলে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে অজস্র আর্থিক সংস্থা। সহজে টাকা বাড়ানোর টোপ দিয়ে তারা সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ আত্মসাৎ করছে বলে অভিযোগ। এই ধরনের বেশ কয়েকটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই সব চিটফান্ড সম্পর্কে গোয়েন্দা তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত ও বিচারপতি রঘুনাথ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, তদন্ত করতে হবে ডিআইজি (সিআইডি)-কেই। বিচারপতি গুপ্ত বলেছেন, অর্থনৈতিক অপরাধের একটি চক্র এই সব কাজ করছে। ওই চক্রের চাঁইদের ধরতে হবে।
চিটফান্ডের বেশি সুদের টোপে সর্বস্ব খুইয়ে অনেকেই শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এই নিয়ে বেশ কয়েকটি মামলা চলছে হাইকোর্টেও। গরিবদের ঠকিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনেক চিটফান্ডের কর্তা গা-ঢাকা দিচ্ছেন, এমন অভিযোগ এর আগেও এসেছে ডিভিশন বেঞ্চের কাছে। অনেক চিটফান্ড-মালিক আবার বেগতিক দেখে আগাম জামিন পেতে আদালতে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার গোবিন্দ খান নামে একটি চিটফান্ডের এক কর্তা এবং তাঁর স্ত্রী নূপুর খান ডিভিশন বেঞ্চের কাছে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। গোবিন্দের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। তার পরেই চিটফান্ডগুলির ব্যবসা নিয়ে ডিআইজি (সিআইডি)-কে সবিস্তার তদন্তের নির্দেশ দেয় তারা। গোবিন্দের স্ত্রী নূপুরের আগাম জামিনের আবেদন অবশ্য মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট।
অনেক ক্ষেত্রেই চিটফান্ডগুলি নিশানা করে হাট-বাজারের ছোট ব্যবসায়ীদের। গোবিন্দের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর জামাই ভুলু মণ্ডল বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিন বিভিন্ন বিক্রেতাকে মোটা সুদের (মাসিক ২.৫ শতাংশ হারে) প্রলোভন দেখিয়ে টাকা নেন। সব্জি ও মাছ বিক্রেতাদের অনেকেই বেশি সুদের আশায় বেশ কয়েক বছর ধরে টাকা জমিয়ে আসছেন। বছরের শেষে সুদ দেওয়ার কথা থাকলেও ওই সংস্থা তাঁদের জানায়, প্রতি বছর সুদ না-নিয়ে কয়েক বছরের জন্য ওই টাকা ‘ফিক্সড’ করলে বা স্থায়ী আমানতে রাখলে একসঙ্গে পরে অনেক টাকা পাওয়া যাবে। কিন্তু টাকা ফেরত পাওয়ার সময়ে দেখা যায়, ভুলু এবং সংস্থার অন্যেরা ফেরার। তার পরেই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, ভুলুর শ্বশুর গোবিন্দ খানও এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
শুধু গোবিন্দ নয়, গত কয়েক দিনে চিটফান্ড ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত বেশ কয়েক জন আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছেন। বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত ওই সব মামলার বিচার করতে গিয়ে দেখেছেন, সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভাবে এই ধরনের সংস্থার কাছে প্রতারিত হচ্ছেন। সুদ বেশি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ওই সব সংস্থা বহু মানুষকে পথে বসাচ্ছে। সেই কারণেই ডিআইজি (সিআইডি)-কে তদন্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জলপথ পরিবহণে রাজ্যে নয়া দফতর
ক্ষমতায় এলে দফতরের সংখ্যা যথাসম্ভব কমিয়ে একই ধরনের দফতরকে একই ছাতার তলায় আনার কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতারই হাতে থাকা পরিবহণ দফতর ভেঙে আরও এক নতুন দফতর তৈরি হতে চলেছে। দফতরের নাম ‘ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট’। মহাকরণের খবর, নতুন দফতরের দায়িত্ব পেতে পারেন সমবায়মন্ত্রী হায়দার আজিজ সফি। এত দিন ছোট একটি ডিরেক্টরেটের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহণের কাজ দেখাশোনা করা হত। রাজ্যে যত জলযান চলে, তাদের লাইসেন্স দেওয়াই ছিল ডিরেক্টরেটের মূল কাজ। কিন্তু গুরুত্ব ও লোকের অভাবে ডিরেক্টরেট কার্যত সদর্থক কোনও ভূমিকাই পালন করতে পারেনি বলে অভিযোগ। সেই কারণেই আলাদা দফতর তৈরি করা হচ্ছে বলে রাজ্য প্রশাসনের ব্যাখ্যা। সরকারের এক মুখপাত্র জানান, মূলত সাগরে লঞ্চ ও ভুটভুটি বেশি চলাচল করে। তাদের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করা, নিয়মিত দেখভাল করার কোনও ব্যবস্থা বলতে গেলে ছিলই না। সাগরে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার পরে দেখা গিয়েছে, জলযান চলাচলের প্রায় কোনও নিয়মই মানা হয়নি। নতুন দফতর তৈরি করে হচ্ছে সেই দিকে নজর দেওয়ার জন্যই। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী সুব্রত বক্সীও মনে করেন, “এতে কাজের আরও সুবিধা হবে।” নতুন দফতরের তৈরির সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে রাজ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। নতুন সরকারে দফতরের সংখ্যা ৬১-তে পৌঁছেছে। তবে এ ক্ষেত্রে দফতর ভাঙলেও আপাতত কোনও নতুন মন্ত্রী নেওয়া হচ্ছে না। যদিও সংখ্যার বিচারে এখনও এক জন পূর্ণমন্ত্রী নেওয়ার সুযোগ মুখ্যমন্ত্রীর রয়েছে।
Previous Story Rajya First Page


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.