|
|
|
|
চাকরির খতিয়ান তলব |
কর্মসংস্থান কেন্দ্র এ বার কাজের ব্যাঙ্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কর্মপ্রার্থীদের নাম-ঠিকানা নথিভুক্ত করাটা তাদের অন্যতম প্রধান কাজ। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেকারদের প্রশিক্ষণও দেওয়ার কথা রাজ্যের কর্মসংস্থান কেন্দ্রগুলির। কিন্তু তাদের মাধ্যমে কাজ জুটছে সামান্যই। এই অবস্থায় কর্মসংস্থান কেন্দ্রগুলিকে কর্মসংস্থান ব্যাঙ্ক বা কাজের ব্যাঙ্ক হিসেবে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কেন এই সিদ্ধান্ত, তা ব্যাখ্যা করে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বৃহস্পতিবার বলেন, কর্মসংস্থান কেন্দ্রের সব অফিসার ও কর্মীকে এখন প্রতিদিন সাত ঘণ্টা কাজ দেওয়া যাচ্ছে না। শুধু বেকারদের নাম নথিভুক্ত করেই তো ওই সব কেন্দ্রের কাজ শেষ হতে পারে না। সেই জন্যই ওই সব কেন্দ্রকে কর্মসংস্থান ব্যাঙ্কের চেহারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ফলে কর্মসংস্থান কেন্দ্রের অফিসার ও কর্মীরা যথাযথ কাজ পাবেন। কর্মপ্রার্থীরাও নিজেদের দক্ষতার নিরিখে কাজ পাওয়ার উপযুক্ত হয়ে উঠবেন। এই প্রসঙ্গে কর্নাটকের কথা তোলেন শ্রমমন্ত্রী। তিনি জানান, কর্নাটকে ইতিমধ্যে কর্মসংস্থান ব্যাঙ্ক চালু হয়েছে। প্রয়োজনে কর্নাটকের অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
রাজ্যে কর্মসংস্থান কেন্দ্র রয়েছে ৫৩টি। এত দিন সেই সব কেন্দ্রে কী কাজ হয়েছে, তারও খতিয়ান নিতে শুরু করেছে পূর্ণেন্দুবাবুর শ্রম দফতর। কলকাতায় কর্মসংস্থান অধিকর্তার কার্যালয় এবং জেলা স্তরের কর্মসংস্থান কেন্দ্রগুলিতে ১১০০-র বেশি কর্মী-অফিসার কাজ করেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী কর্মসংস্থান কেন্দ্রগুলিতে সব মিলিয়ে ৬৭ লক্ষ কর্মপ্রার্থী নাম লিখিয়ে রেখেছেন। কিন্তু নাম লেখানোর পরে বহু বছর কেটে গেলেও কর্মসংস্থান কেন্দ্র থেকে চাকরির পরীক্ষার ডাক না-পাওয়ার ঘটনা যে অগুনতি, এ দিন তা স্বীকার করে নেন শ্রমমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশে কলকাতায় কর্মসংস্থান অধিকর্তার কার্যালয় থেকে শুরু করে রাজ্যের সব কর্মসংস্থান কেন্দ্রের মাধ্যমে গত দু’বছরে কত ছেলেমেয়ে কী ধরনের চাকরি পেয়েছেন, তার সবিস্তার তথ্য চেয়ে বিজ্ঞপ্তি পাঠাচ্ছে শ্রম দফতর।
কর্মসংস্থান কেন্দ্রগুলির উদ্যোগে কর্মপ্রার্থীদের কাজের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে বিগত বাম জমানায় ২৩টি পেশার জন্য যে-প্রশিক্ষণ চালু হয়েছিল, সেগুলির কার্যকারিতাও যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন সরকার। মহাকরণ থেকে প্রতিটি কর্মসংস্থান কেন্দ্রের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে, তাদের আওতায় কোন কোন পেশায় কত জন প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং তাঁদের মধ্যে কত জন প্রশিক্ষণের শেষে চাকরি পেয়েছেন? শুধু তা-ই নয়, সেই তথ্যের সত্যতা যাচাই করার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মপ্রার্থীদের নাম-ঠিকানাও পাঠাতে বলা হচ্ছে। যে-সব সংস্থা প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিল, জানাতে বলা হচ্ছে তাদের যোগ্যতাও। সর্বোপরি প্রতিটি কর্মসংস্থান কেন্দ্রের কাজের কাঠামো অর্থাৎ কোথায় কত জন অফিসার ও কর্মী রয়েছেন এবং তাঁদের প্রত্যেকের কী কাজ, বিশদ ভাবে জানাতে বলা হচ্ছে তা-ও।
কর্মসংস্থান কেন্দ্রগুলি থেকে যে-সব তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা যাচাই করে ‘অযোগ্য’ প্রশিক্ষক সংস্থাগুলিকে বাদ দিয়ে প্রকৃত অর্থে যোগ্য প্রশিক্ষকদের দিয়ে কর্মপ্রার্থীদের তালিম দেওয়া হবে। সেই জন্য প্রয়োজনে কর্মসংস্থান ব্যাঙ্কের তরফে প্রতিটি পেশার জন্য পৃথক প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হবে।
বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হবে ৬৩টি স্বীকৃত অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মপ্রার্থীদের দিকে। |
|
|
|
|
|