|
|
|
|
সর্বদল বৈঠক |
পাহাড়, জঙ্গলমহল নিয়েও বক্তব্য জানাতে চায় বামেরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মহাকরণে সর্বদল বৈঠকে যাওয়ার আগে বৈঠকের আলোচ্যসূচি হাতে চায় বামফ্রন্ট। বস্তুত, তারা চায় সরকারের ডাকা সর্বদল বৈঠকে গিয়ে পাহাড় এবং জঙ্গলমহল নিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরতে।
আগামী ৩ অগস্ট মহাকরণের রোটান্ডায় সর্বদল বৈঠক ডেকেছে রাজ্য সরকার। সেই বৈঠকে কী বলা হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতেই বৃহস্পতিবার বামফ্রন্টের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সর্বদল বৈঠকের আলোচ্যসূচি হিসাবে তিনটি বিষয় বলা হয়েছে। এক, পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন। দুই, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নতুন নামকরণ। তিন, প্রশাসনিক সংস্কার (জেলা বিভাজন)। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর অভিযোগ, কোনও ক্ষেত্রেই সরকারের প্রস্তাব কী, তা বলা হয়নি। রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে সরকার কী রাখতে চায়, তা বলা হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুরের নতুন নাম কী বা আর কোন কোন জেলা বিভাজনের কথা ভাবা হচ্ছে, তা-ও বলা হয়নি। তাঁর প্রশ্ন, “কোনও বিষয়েই যখন স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি, তখন বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে কী বলা হবে, সে ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব?”
সর্বদলীয় বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে পাহাড় ও জঙ্গলমহলের সমস্যা যুক্ত করার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই চিঠির কোনও জবাব তিনি পাননি। বামফ্রন্টের বৈঠকে শরিক নেতাদের পাশাপাশি এ দিন সূর্যবাবুও উপস্থিত ছিলেন। শরিক নেতারা এই দুই ব্যাপারেই রাজ্য সরকারের ‘ব্যর্থতা’ এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বাম ‘আপত্তি’র কথা সর্বদল বৈঠকে নথিভুক্ত করাতে চান।
বৈঠকের পরে বিমানবাবু বলেন, “অতীতে সর্বদল বৈঠকের সময়ে সব সময়েই আলোচ্যসূচি দেওয়া হয়েছে। তাতে সরকারের অবস্থান কী, তা-ও জানানো হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল জোট সরকার কোনও স্পষ্ট আলোচ্যসূচি না-জানিয়েই সর্বদল বৈঠক ডেকেছে।” বামফ্রন্টের সময়ে আলোচনার পরে বিরোধীরা যা বলেছেন, তা সব হয়তো গ্রহণ করা যায়নি, এ কথা কবুল করেও বিমানবাবুর দাবি, “কিছু পরামর্শ তো গ্রহণ করা হয়েছে!” প্রসঙ্গত, বাম শিবিরের বক্তব্য, ১৯৯৯ সালের ২০ জুলাই বিধানসভায় সর্বদল বৈঠক করে রাজ্যের নামবদলের প্রস্তাব তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আডবাণীর কাছে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমান রাজ্য সরকারের ভাবনা সে দিক থেকে ‘অভিনব’ নয়।
বিমানবাবু জানান, রাজ্য সরকারের সর্বদল বৈঠক ডাকাকে তাঁরা স্বাগত জানান। তাঁর কথায়, “আমরা রাজ্যের উন্নয়ন, স্বার্থ ও সংহতির প্রশ্নে সর্বদল বৈঠক ডাকা এবং তাতে যোগ দেওয়ার পক্ষে। কিন্তু যে ভাবে পাহাড় নিয়ে চুক্তি করা হল, তার আগে রাজ্য সরকারের সর্বদল বৈঠক ডাকা উচিত ছিল। অথচ তা ডাকা হয়নি।” বস্তুত, সূর্যবাবু বৈঠকে গিয়ে এই কথাই বলবেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বৈঠকে গিয়ে আলোচ্যসূচি হাতে পেলে তখন বামেদের ভূমিকা কী হবে?
বিমানবাবু এই প্রশ্নের কোনও স্পষ্ট জবাব দেননি। বাম সূত্রের খবর, আলোচ্যসূচি হাতে পাওয়ার পরে তারা মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে পারে, বিষয়টি নিয়ে নিজের দলে আলোচনা করে পরে মতামত জানানো হবে। ১৫ দিন সময় চাওয়া হবে পরবর্তী সর্বদল বৈঠকের জন্য।
এই সময়ের মধ্যে বিষয়গুলি নিয়ে প্রত্যেক দলে এবং প্রয়োজনে বামফ্রন্টে আলোচনা হবে। তবে সবই নির্ভর করছে সরকারের ভূমিকার উপরে। আপাতত তাঁরা দেখতে চান, জঙ্গলমহলে মাওবাদী এবং পাহাড় সমস্যার কথা সর্বদল বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে স্থান পায় কি না। সন্ত্রাস নিয়েও সর্বদল বৈঠকে আলোচনার দাবি তুলেছেন সূর্যবাবু। তা নিয়েও কি বামেরা মুখ খুলবে? জবাবে বিমানবাবু বলেন, “আলোচনায় কে কী বলবেন, এখনই তা বলা সম্ভব নয়। তবে প্রসঙ্গটি উঠতেই পারে।” |
|
|
|
|
|