|
|
|
|
কলেজের সমস্যা নিয়ে বৈঠক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
মুর্শিদাবাদের ২৩টি কলেজের অধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পরও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরার ব্যাপারে নিশ্চিত নয় কেউই। এমনকী নিরাপত্তার অভাবে গত ২১ জুলাই থেকে বন্ধ করে দেওয়া বহরমপুর কলেজের দরজা কবে খুলবে, তা অনিশ্চিত। অধ্যক্ষ সমরেশ মণ্ডলের সাফ কথা, “আমার বাড়িতে গত ১০ দিন ধরে রাতে কে, বা কারা ইট ছুঁড়ছে। কলেজের ভিতরেও কোনও নিরাপত্তা নেই। নিরাপত্তার ব্যাপারে বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও আশ্বাস মেলেনি। ফলে নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত কলেজ বন্ধই থাকবে।” কলেজ বন্ধ থাকলেও ছাত্রদের স্বার্থে শনিবার দুপুর ১২টা থেকে জেলাশাসকের বাংলো সংলগ্ন সার্কিট হাউসে মার্কশিটের অ্যাটাস্টেড করা হবে। প্রকাশ করা হবে সদ্য প্রকাশিত তৃতীয় বর্ষের রেজাল্টও।
বৃহস্পতিবার সার্কিট হাউসে ২৩টি কলেজের অধ্যক্ষ ও ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা প্রশাসনের বৈঠক হয়। সেখানে অতিরুক্ত জেলাশাসক পি উল্গানাথন ছাড়াও ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অজয় ঘোষ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আন্নাপ্পা। অজয়বাবু বলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলায় স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষে এখনও কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী ভর্তি হতে পারেনি। তাঁদের সবাইকে ভর্তি নেওয়ার জন্য কলেজগুলির আসন সংখ্যা বাড়াতে হবে। ওই বিষয়ে কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবেদন করা হবে বলে এ দিনের মিটিং-এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।” এ ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কলেজ লাগোয়া ১০০ মিটার পর্যন্ত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকবে, বহিরাগতরা কৃর্তপক্ষের অনুমতি ছাড়া কলেজের ভিতরে ঢুকতে পারবে না, বহিরাগতদের চিহ্নিত করবে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ওই সব বিধি অমান্য করলে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে বলেও এ দিন সতর্ক করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আন্নাপ্পা।
স্নাতক স্তরে ভর্তি ও কলেজের দখলদারি নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে মুর্শিদাবাদ জেলার অধিকাংশ কলেজের অবস্থা অগ্নিগর্ভ। বন্ধ রয়েছে বহরমপুর কলেজে, জিয়াগঞ্জ আর ডি কে কলেজ, লালবাগ সুভাষচন্দ্র সেন্টিনারি কলেজ এবং ধুলিয়ান কলেজ। তবে এ দিন বহরমপুর সার্কিট হাউসের বৈঠক চলাকালীনই অধ্যক্ষদের মোবাইল ফোনে কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি সমস্যার সুরাহার বিষয়ে ফোন যায়। লালবাগ সুভাষচন্দ্র সেন্টিনারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রভাস সামন্ত ও জিয়াগঞ্জের আর ডি কে কলেজের অধ্যক্ষ অজয় অধিকারী বলেন, “ফোনে বলা হয়, যারা ভর্তি হতে পারেনি তাদেরকে আগামী ৮ অগস্ট ভর্তি নেওয়া হবে। ওই দিন এক সঙ্গে সব কলেজে ভর্তি নেওয়ার জন্য নির্দেশ জারির কথা ফোনে আমাদের বলা হয়। তার ফলে এক জন একই সঙ্গে একাধিক কলেজে ভর্তি হতে পারবে না।” তবে অজয়বাবু এবং প্রভাসবাবুর দাবি, “পরিকাঠামো না বাড়িয়ে বিশ্ব বিদ্যালয়ের নির্দেশে সবাইকে ভর্তি নেওয়ার ফলে পড়ানো দূরের কথা শ্রেণিকক্ষে সব ছাত্রছাত্রীদের দাঁড়ানোর জায়গাটুকুও জুটবে না। ফলে পরীক্ষার সময় একটি বেঞ্চে ৪ জন বসবে।”
এ দিনের বৈঠকের সমস্যার সমাধান হয়নি বলে অধ্যক্ষদের মতোই অভিমত ছাত্র সংগঠনেরও। এসএফআই-এর মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘বহরমপুর কলেজের ও লালবাগ কলেজের নির্বাচিত দু’টি ছাত্র সংসদ রয়েছে আমাদের দখলে। কিন্তু তৃণমূল ছাত্রপরিষদ ওই দু’টি কলেজে সন্ত্রাস করে ছাত্র সংসদ কার্যালয় জবরদখল করে রেখেছে। জঙ্গিপুর কলেজে একই ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করছে ছাত্র পরিষদ। সে সবরে কোনও সুরাহা কিন্তু এ দিনের বৈঠকে হয়নি।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি পার্থ পাল ‘মিথ্যা অভিযোগ’ বলে দায় এড়িয়েছে। ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান বাপ্পা অবশ্য এ ব্যাপারে তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতার অনুগামীরাই লাঠিসোটা নিয়ে কলেজে ঢুকে ছাত্র রাজনীতির নামে তাণ্ডব চালাচ্ছে। শান্তি ফেরাতে পক্ষপাতমূলক আচরণ বন্ধ করতে হবে।” |
|
|
|
|
|