ভারত বাংলাদেশ নদী-সীমান্তে সংস্কারের কাজ শেষ
ইছামতীর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য সেচ প্রতিমন্ত্রীর চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে
ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এক বছর ধরে চলা ইছামতী নদীর একাংশ সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। ফলে, যৌথ নদী-সীমান্তে জলের গভীরতা বেড়েছে। খুশি দু’দেশের নদীপাড়ের বাসিন্দারা। নদিয়ার মাজদিয়ায় উৎসমুখ-সহ নদীটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি ইছামতী পরিদর্শনে এসে সাধারণ মানুষের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন রাজ্যের সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডলও। নদীটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে গত ১৪ জুলাই তিনি চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে ইছামতীর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। মাজদিয়া থেকে বনগাঁ পর্যন্ত নদীটি ১০১.৫০ কিলোমিটার লম্বা। শ্যামলবাবু বলেন, “উৎসমুখ সংস্কারের জন্য ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। বনগাঁ পর্যন্ত সংস্কার করতে হলে লাগবে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। রাজ্যের কাছে অত টাকা নেই। মুখ্যমন্ত্রীর মাধ্যমে আমরা কেন্দ্রের কাছে টাকার দাবি জানাব। গোটা পরিস্থিতির কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দিতে অনুরোধ করেছি।” বাংলাদেশ সরকারও যাতে তাদের দিকে থাকা ইছামতীর সংস্কার করে, সে জন্য অনুরোধ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন শ্যামলবাবু। ইছামতী নদী সংস্কার সহায়তা কমিটির সম্পাদক সুভাষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শ্যামলবাবুর উদ্যোগে আমরা খুশি। উৎসমুখ সংস্কার হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বনগাঁ পর্যন্ত সংস্কারের কাজ হলেই নদী অনেকটাই জীবন ফিরে পাবে।”
বনগাঁয় পার্থসারথি নন্দীর তোলা ছবি।
ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে গাইঘাটার বর্ণবেড়িয়া থেকে কালাঞ্চি সেতু পর্যন্ত ২০.৪১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ইছামতী থেকে প্রায় ১৪.৮৫ লক্ষ ঘনমিটার পলি তোলার কাজ শেষ হয়েছে সম্প্রতি। এ জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের খরচ হয় ৩৯ কোটি টাকা। পলি তোলার ফলে ওই এলাকায় নদীর গভীরতা বেড়েছে অন্তত ২.৬ মিটার। তবে পাড়ে রাখা পলি এখনও সম্পূর্ণ সরিয়ে ফেলা যায়নি।
সেচ দফতরের বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার সুমন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রথমে ঠিক হয়েছিল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ৫০ শতাংশ পলি নেওয়া হবে। কিন্তু ওরা নিয়েছে মাত্র ৩ লক্ষ ঘনমিটার মাটি। সেই কারণে পাড় থেকে মাটি সরাতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে ৯৫ শতাংশ মাটিই পাড় থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।”
পাড়ে তুলে রাখা বেশিরভাগ পলি সরিয়ে ফেলায় খুশি ওই এলাকার মানুষ। কারণ, ২০০৫ সালে গাইঘাটার কালাঞ্চি সেতু থেকে স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া সেতু পর্যন্ত নদীখাত থেকে পলি তুলে পাড়ে রাখা হয়েছিল। বর্ষায় তা নদীতেই মিশে যায়। এ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। এ বার অন্তত তা হবে না বলে মনে করছেন গ্রামবাসীরা।
শ্যামলবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে পলি জমায় নদীটির জলধারণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। ফলে, পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রয়োজন। এ জন্য দ্রুত ‘মাস্টারপ্ল্যান’ তৈরি করা জরুরি।
প্রসঙ্গত, মাজদিয়া থেকে হাসনাবাদ পর্যন্ত বিস্তৃত ইছামতী। লম্বায় ২১৬.৪০ কিলোমিটার। এর মধ্যে উৎসমুখ থেকে বনগাঁ পর্যন্ত নদীটির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। উৎসমুখ থেকে ফতেপুর পর্যন্ত সাড়ে ১৯ কিলোমিটার নদীপথে কার্যত জলের চিহ্ন নেই। চর পড়ে গিয়েছে। সেই চরে চাষাবাদ হয়। একপাশ দিয়ে যানবাহনও চলে। ফতেপুর থেকে মোবারকপুর হয়ে নদীটি বাংলাদেশে ঢুকেছে। দত্তফুলিয়ার কাছে ইছামতী ফের ভারতে প্রবেশ করেছে। নাব্যতা হারানোয় বনগাঁয় নদীটির অনেকাংশ বেআইনি ভাবে দখল হয়ে গিয়েছে। রয়েছে দূষণের সমস্যাও।
First Page Jibjagat Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.