|
|
|
|
১৭টি ক্ষুদ্রশিল্প চিহ্নিত |
রাজ্যে শিল্প-গুচ্ছ স্থাপনে শরিক হতে চায় বণিকসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে শিল্প-গুচ্ছ বা ‘ক্লাস্টার’ স্থাপনের উপর জোর দেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে নতুন সরকার। বণিকসভা অ্যাসোচ্যামও জানাল, এক একটি এলাকার জন্য এক এক ধরনের বিশেষ শিল্প বেছে নিয়ে সেগুলির উন্নয়নে রাজ্যের এই উদ্যোগের শরিক হতে চায় তারা। যৌথ উদ্যোগে রাজ্যে এই ধরনের শিল্প-গুচ্ছ গড়তে ১৭টি ছোট ও মাঝারি শিল্পকে চিহ্নিতও করেছে অ্যাসোচ্যাম। সংশ্লিষ্ট এলাকায় যে শিল্পের ঐতিহ্য রয়েছে, মূলত সেটিকে প্রাধান্য দিয়েই গড়া হচ্ছে শিল্প-গুচ্ছ।
পাশাপাশি আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে কলকাতায় একটি শিল্প সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে অ্যাসোচ্যামের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতি পেলেই এর দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে। এ রাজ্যে শিল্পোন্নয়নের সঙ্গী হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের এই ধরনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বৃহস্পতিবারই শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানিয়ে গেলেন বণিকসভাটির জাতীয় ও পূর্বাঞ্চলীয় কর্তারা।
এ দিকে এ দিন থেকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে কলকাতায় পূর্বাঞ্চলীয় দফতর খুলল অ্যাসোচ্যাম। বছর শেষেই সল্টলেকে নিজস্ব ভবন তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে বণিকসভার কর্তাদের আশা।
এ দিন প্রথমে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের উন্নয়ন ও শিল্প-গুচ্ছ গড়ার সম্ভাবনা নিয়ে দুটি রিপোর্ট প্রকাশ করেন অ্যাসোচ্যামের পূর্বাঞ্চলীয় শাখার চেয়্যারম্যান সুনীল কানোরিয়া। তাঁরা জানান, সরকারি সহায়তায় রাজ্যে আপাতত ৪৩টি শিল্প-গুচ্ছ রয়েছে। অ্যাসোচ্যাম এ বার রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় আরও ১৭টি এ ধরনের (যেমন বস্ত্র, হস্তশিল্প, তালা, বঁড়শি, অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) শিল্পকে চিহ্নিত করেছে।
অ্যাসোচ্যামের সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াত জানান, জাতীয় স্তরে এ ধরনের শিল্প গড়তে ইতালির ‘ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট’-এর সঙ্গে তাঁরা গাঁটছড়া বেঁধেছেন। এ রাজ্যের ক্ষেত্রেও ইতালির ওই প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চান তাঁরা।
তাঁদের হিসেবে, পশ্চিমবঙ্গে প্রস্তাবিত ১৭টি ক্লাস্টারের প্রতিটির ক্ষেত্রে গড়ে ৫০ একর জমি লাগবে। ‘কমন ফেসিলিটি সেন্টার’-সহ প্রয়োজনীয় নানা পরিকাঠামো ও নতুন সংস্থাকে সেখানে জায়গা দেওয়ার জন্য কিছু বাড়তি জমিরও প্রয়োজন হবে। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সাহায্য প্রয়োজন বলে মনে করেন তাঁরা। পরে এ দিন বিকালে তাঁরা শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন। তাঁদের সঙ্গে সেখানে পূর্বাঞ্চলে বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের অন্যতম কর্তা এস এন নন্দী, সঞ্জয় ঝুনঝুনওয়ালা, দেবমাল্য বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পরে রাওয়াত জানান, শিল্পমন্ত্রী তাঁদের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। বিশেষ করে শিল্প-গুচ্ছের উন্নয়নে নতুন সরকারও যে উৎসাহী, সে কথা পার্থবাবু তাঁদের স্পষ্ট করে জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি বন্ধ কারখানার জমি কী করে নতুন শিল্পের জন্য ব্যবহার করা যায়, তাও রাজ্য সরকার গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছে বলে তাঁদের জানান পার্থবাবু। জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য রাজ্যে শিল্প স্থাপন কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে বলে মনে করে অ্যাসোচ্যাম। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই ছোট ও মাঝারি শিল্প-গুচ্ছ স্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে জোর দেওয়ার উপরেই আপাতত গুরুত্ব দিচ্ছে এই বণিকসভা। |
|
|
|
|
|