|
|
|
|
ক্যানিংয়ে কোন্দল |
দলীয় দ্বন্দ্বে জেলার দরবার মমতার বাড়িতেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কেউ অভিনন্দন জানাতে আসছেন। কেউ বা আসছেন নিজের অভাব-অভিযোগ জানাতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই তাঁর কালীঘাটের বাড়ির সামনে রোজ সকালেই জড়ো হচ্ছেন অজস্র সাক্ষাৎপ্রার্থী। সেই ভিড়ে সামিল হয়েই এ বার নিজেদের দলীয় সমস্যারও চটজলদি সমাধান চাইছেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা।
যেমন হল বুধবার সাতসকালে। ক্যানিং ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক হাসান মোল্লা বেশ কয়েকটি গাড়িতে তাঁর অনুগামীদের নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূলেরই ব্লক সভাপতি মানিক পাইকের বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে।
হাসান মোল্লার সঙ্গীদের বেশ কয়েক জনের শরীরেই জখমের চিহ্ন। অভিযোগ, সেটাও গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বের জের।
এমনিতেই মমতার বাড়ির সামনে সকালে বেশ ভিড়। তার উপরে ক্যানিং থেকে আসা দলীয় নেতা-সমর্থক। ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। জখম সমর্থকদের স্থানীয় একটি ক্লাবে বসার ব্যবস্থা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বিধায়ক তাপস রায় আহতদের সঙ্গে কথা বলেন। তৃণমূলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় পরে হাসান মোল্লাদের সমস্যার বিষয়টি শোনেন। বেলা ১১টা নাগাদ হাসান-সহ চার জনকে ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। কয়েক মিনিট তাঁদের মধ্যে কথা হয়। তার পরে মমতা রওনা হন মহাকরণের উদ্দেশে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ক্যানিং ২ নম্বর ব্লক সভাপতি মানিকবাবু দল-বিরোধী কাজ করছেন বলে হাসান এ দিন অভিযোগ করেন। হাসানের অভিযোগ, তৃণমূল-সমর্থকদের হটিয়ে সিপিএম-সমর্থকদের দলে নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন মানিকবাবু। তৃণমূল-সমর্থকেরা হীনম্মন্যতায় ভুগছেন।
বিধানসভার নির্বাচনের কয়েক মাস আগে একটি খুনের মামলায় গ্রেফতার হন ক্যানিং ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি রহিমা লস্কর ওরফে বেবি। নির্বাচনের মুখে মানিকবাবুকে ওই ব্লক সভাপতির পদে বসানো হয়। এর জন্য জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাসান মোল্লা। তাঁর অভিযোগ, বছর দশেক আগে দুর্নীতির অভিযোগে মানিকবাবুকে বহিষ্কার করে সিপিএম। সেই মানিকবাবুকেই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি করা হয়। আর সভাপতির পদে বসেই মানিকবাবু নানা ভাবে তৃণমূলকর্মীদের হেনস্থা করতে শুরু করেছেন। হাসানদের অভিযোগ শোনার পরে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি তথা কলকাতার মেয়র শোভনবাবুকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি চাষিদের পাট্টা দেওয়া জমি জোর করে দখলের চেষ্টার অভিযোগে ভাঙড় ১ নম্বর ব্লক সভাপতি জাহাঙ্গির খান চৌধুরীকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। ভাঙড় ১ নম্বর ও ক্যানিং ২ নম্বর ব্লক কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গড়া হবে বলে জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর।
হাসান মোল্লার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মানিকবাবু। তিনি বলেন, “হাসান মোল্লার গোষ্ঠীই সম্প্রতি সিপিএম থেকে ছেড়ে আসা কর্মীদের দলে নেওয়ার জন্য আমার উপরে চাপ সৃষ্টি করছেন। আর নেত্রীর কাছে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।
এটা একটা চক্রান্ত।” |
|
|
|
|
|