|
|
|
|
পশ্চিমে ভাতা-সঙ্কট |
প্রাপক বাড়লেও বাড়ছে না বরাদ্দ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
প্রাপকের সংখ্যা বেড়েছে, অথচ বরাদ্দ বাড়ছে না। কে ভাতা পাবেন, আর কে পাবেন না, তা বাছতে হিমসিম খাওয়ার জোগাড় প্রশাসনের। চিত্রটা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত বার্ধক্য বা বিধবা ভাতা বরাদ্দই হয়নি। ক’মাস আগে প্রাপকদের দেওয়া হয়েছে গত বছরের জন্য বরাদ্দ টাকা। কিন্তু তালিকায় যত জনের নাম রয়েছে, তাঁদের সকলকে ভাতা দেওয়া সম্ভব নয় বুঝে সঙ্কটে পড়েছে প্রশাসন। জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের কাছে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আর্জি জানানো হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “ভাতা প্রাপকের সংখ্যা বাড়লেও বরাদ্দ বাড়ছে না। তাই এই পরিস্থিতি।” আর এক প্রশাসনিক আধিকারিকের বক্তব্য, “একটি ব্লকে ১০৯ জনের অক্ষম ভাতা পাওয়ার কথা। সেখানে ৯৩ জনের জন্য অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে। ফলে সমস্যা তো হবেই।”
ভাতা প্রাপকদের বাছতে প্রতি বছরই ব্লক ও পুর-এলাকায় সমীক্ষা হয়। তার পরই ভাতা প্রাপকদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়। জেলা থেকে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয় তালিকা। পরে সেই মতো অর্থ বরাদ্দ হয়। প্রতি বছরই তালিকায় নতুন কিছু নাম ওঠে, আবার কিছু নাম বাদ পড়ে। ভাতা বাবদ একসঙ্গে দু’-তিন মাসের টাকা প্রাপকদের দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সর্বশেষ তালিকা অনুসারে বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার কথা ১ লক্ষ ৭ হাজার ৮৮২ জনের। অথচ, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, জেলায় ৮২ হাজার ৪০৯ জনকে এই ভাতা দেওয়া যেতে পারে। একই পরিস্থিতি বিধবা ও অক্ষম ভাতার ক্ষেত্রে। বিধবা ভাতা পাওয়ার কথা ৪০ হাজার ৫১৮ জনের। অথচ ২৩ হাজার ৫৮২ জনকে ভাতা দেওয়ার সম্মতি মিলেছে। আর অক্ষম ভাতা পাওয়ার কথা ১ হাজার ৭৪০ জনের। এ ক্ষেত্রে ১ হাজার ৪৯৭ জনকে ভাতা দেওয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের সকলকে ভাতা দেওয়া সম্ভব নয়। জানা গিয়েছে, জেলা থেকে পাঠানো তালিকা রাজ্য সরকার অনুমোদনও করেনি। ফলে এখনই এই তালিকা ধরে অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, এই ধরনের তালিকায় ভুয়ো নাম ঢোকানো, দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগ উঠেছে গত সরকারের আমলে। রাজ্যের নতুন সরকার তাই কত তাড়াতাড়ি তালিকা অনুমোদন করবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। জেলার সিপিএম সভাধিপতি অবশ্য বলেন, “তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের সকলকেই ভাতা দেওয়া উচিত। না হলে সমস্যা দেখা দেবে।” একই মত প্রশাসনের এক আধিকারিকেরও। তাঁর কথায়, “নারায়ণগড় ব্লকে বিধবা ভাতা পাওয়ার কথা ২ হাজার ৩১৫ জনের। অথচ, জানানো হয়েছে এখানে মাত্র ১ হাজার ৪৬৬ জনকে এই ভাতা দেওয়া যেতে পারে। ভাতা-প্রাপকদের চিহ্নিত করতে গিয়ে এখানে সমস্যা হবেই।” এ দিকে, এখন দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরাই বার্ধক্য ভাতা পান। এ ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ৬০ করার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। তা বাস্তবায়িত হলে ভাতা-প্রাপকের সংখ্যা এক লাফে অনেক বেড়ে যাবে। আর তার জেরে ভাতা বিলির সমস্যাও বাড়বে বলে ধারণা বিভাগীয় আধিকারিকদের। |
|
|
|
|
|