|
|
|
|
এইচআইভি সমীক্ষা |
গাফিলতিতে নষ্ট ৩ হাজার রক্ত-নমুনা |
পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা |
কর্তব্যে ত্রুটি। যার জেরে এত মেহনত পুরোটাই জলে গেল! এইচআইভি কী ভাবে এবং কোন কোন স্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে, তা বুঝতে দেশজুড়ে রক্তের নমুনা নিয়ে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। কিন্তু উদ্যোগটি মারাত্মক হোঁচট খেয়েছে উত্তরবঙ্গে। সেখানে সংগৃহীত তিন হাজার রক্তের নমুনা নষ্ট হয়ে গিয়েছে স্রেফ স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের গাফিলতিতে! এমনটা কী করে হল, তা জানতে রাজ্য এড্স নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (স্যাক্স)-র অধিকর্তা রাকেশকুমার বৎসকে ডেকে পাঠিয়েছে দিল্লি।
বিভিন্ন ‘অ্যান্টিনেটাল ক্লিনিক’-এ দেখাতে আসা প্রসূতি, যৌনরোগের ক্লিনিকে আসা সাধারণ মানুষ, যৌনকর্মী, ট্রাকচালক এবং ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মাদকসেবী পুরুষ-মহিলার রক্তের নমুনা নিয়ে ফি বছর কেন্দ্রীয় উদ্যোগে সমীক্ষা চালানো হয়। এবং এই ‘এইচআইভি সেন্টিন্যাল সার্ভেইল্যান্স’-এর ভিত্তিতে স্থির হয়, এইআইভি মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী ক’মাসের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যের সমীক্ষা-রিপোর্ট জাতীয় এড্স নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ন্যাকো)-য় জমা পড়তে চলেছে। ওই সব রিপোর্টের প্রেক্ষিতেই ২০১২-র জাতীয় এড্স নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনএফএইচএস)-৪ এর কাজ শুরু হওয়ার কথা।
কিন্তু গাফিলতির খেসারত হিসেবে পশ্চিমবঙ্গে সমীক্ষা-রিপোর্ট তৈরি কার্যত আটকে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গে এত রক্তের নমুনা নষ্ট হল কী ভাবে?
স্যাক্স-অধিকর্তা রাকেশকুমারের জবাব, “উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে মাইক্রোবায়োলজির যে সব টেকনিক্যাল অফিসারের হাতে রক্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ভার, তাঁদের কয়েক জনের গাফিলতিতেই এই কাণ্ড। ওঁদের কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফের নমুনা সংগ্রহ শুরু করতে বলা হয়েছে।”
রাজ্যের স্বাস্থ্য-কর্তারা অবশ্য বলতে পারছেন না, এত নমুনা আবার কী ভাবে, ক’দিনের মধ্যে জোগাড় করা যাবে। স্বাস্থ্য দফতর-সূত্রের বক্তব্য, রক্তের নমুনাগুলো নষ্ট হয়েছে গত মার্চ-এপ্রিলে। কিন্তু এত দিনেও উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্যকর্তারা স্যাক্সকে কিছু জানাননি বলে অভিযোগ। অথচ বিষয়টি দেখার জন্য স্যাক্সের আলাদা ‘মনিটরিং টিম’ রয়েছে। ন্যাকো-রও আলাদা পরিদর্শক রয়েছেন। তা হলে কি নজরদারি নিছক প্রহসন? না কি ব্যাপারটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল?
রাকেশকুমার বলেন “কোনওটাই নয়। আসলে কিছু কর্মীর ত্রুটি-বিচ্যুতি ও গড়িমসির মাসুল স্বাস্থ্য দফতরকে গুনতে হচ্ছে।” তবু প্রশ্ন থেকে যায়। উত্তরবঙ্গের ওই তিন হাজার রক্তের নমুনা একই সঙ্গে এক জায়গায় সংগৃহীত হয়নি। বেশ কিছু দিন ধরে, বিভিন্ন পর্যায়ে, বিভিন্ন জেলা থেকে সেগুলো জোগাড় করা হয়েছিল। একটানা গাফিলতি ও নজরদারির অভাব ছাড়া সব নমুনা নষ্ট হওয়া কী করে সম্ভব? স্যাক্স-অধিকর্তার কাছেও এর কোনও ব্যাখ্যা নেই। |
|
|
|
|
|