রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়াদের ‘বলপূর্বক তৃণমূলীকরণ’ বন্ধ করতে সংগঠনে নির্দেশিকা জারি করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রাজ্যের কোনও কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও এক জন পড়ুয়াকেও ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে বা গায়ের জোর খাটিয়ে টিএমসিপি-র সদস্য করানো যাবে না। সে তিনি অন্য কোনও ছাত্র সংগঠনের সদস্য হোন বা না হোন এবং সংশ্লিষ্ট কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ টিএমসিপি-র হাতে থাকুক বা না থাকুক।
টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী এ কথা জানিয়ে বলেন, “সংগঠনে সদস্যকরণ বিষয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট নেতৃত্ব স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। তাঁদের জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে চলতে হবে। কোনও টিএমসিপি কর্মী এই নির্দেশ না মানলে তাঁর বিরুদ্ধে সংগঠন কড়া ব্যবস্থা নেবে।”
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরে রাজ্যের অনেক কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ুয়ারা অন্য ছাত্র সংগঠন ছেড়ে টিএমসিপি-তে যোগ দিচ্ছেন। কোথাও কোথাও অন্য ছাত্র সংগঠনের হাতে থাকা গোটা ছাত্র সংসদই টিএমসিপি- তে যোগ দিচ্ছে। এসএফআই-সহ বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র সংগঠন তো বটেই, এমনকী, রাজ্যের শাসক-শরিক কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন ছাত্র পরিষদের ক্ষেত্রেও এই ‘ধর্মান্তর’ ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রেই টিএমসিপি কর্মীরা ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে বা গায়ের জোরে এই ‘ধর্মান্তর’ ঘটাচ্ছেন বলে বাম ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ। টিএমসিপি অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করছে। এই বাদানুবাদ কয়েকটি ক্ষেত্রে সংঘর্ষেও গড়িয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই টিএমসিপি-র এই নির্দেশিকা। অল্প কয়েক দিন আগেই টিএমসিপি-র রাজ্য নেতৃত্ব সংগঠনের কর্মীদের জন্য ‘আচরণবিধি’ বেঁধে দিয়েছিলেন। তার পরেও ওই ধরনের অভিযোগ এবং সংঘর্ষ অব্যাহত।
টিএমসিপি-র একাংশের আশঙ্কা, এই রকম চলতে থাকলে দ্রুতই তাদের গায়ে ‘অগণতান্ত্রিক’ তকমা লেগে যাবে। যা তৃণমূলের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের পক্ষে সুবিধাজনক হবে না। বিশেষত, সিপিএমের ‘অগণতন্ত্র’-এর বিরুদ্ধে ‘প্রকৃত গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসার এত অল্প দিনের মধ্যেই এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে জনগণ রুষ্ট হবে। সেই কারণেই তড়িঘড়ি এই নির্দেশিকা জারি করেছেন সৌরভরা। |