|
|
|
|
মোদী-বিতর্কের জের |
বরখাস্তই হলেন দার উল উলুমের উপাচার্য বস্তানবি |
সংবাদসংস্থা • দেওবন্দ (উত্তরপ্রদেশ) |
দার উল উলুম দেওবন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদ থেকে সরানো হল মৌলানা গুলাম মহম্মদ বস্তানবিকে। দার উল উলুমের পরিচালন কমিটি ‘মজলিস-ই-শুরা’র তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অস্থায়ী ভাবে উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন মৌলানা আবদুল কাসিম নোমানি। আজ শুরা তাঁকেই দার উল উলুমের নতুন উপাচার্য হিসেবে বহাল করেছে।
জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখ নতুন উপাতার্য হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করেছিলেন বস্তানবি। তার কয়েক দিন পরেই একটি সাক্ষাৎকারে তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর উন্নয়ন নীতির প্রশংসা করেন। বস্তানবির বক্তব্য ছিল, ২০০২-এর দাঙ্গার স্মৃতি আঁকড়ে বসে থাকলে মুসলিমদের চলবে না। তিনি গুজরাতে মোদীর নেতৃত্বে যে উন্নয়ন হয়েছে, তার প্রশংসা করেন। বলেন যে, উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুজরাতে মুসলিমদের কোনও বৈষম্যের শিকার হতে হয়নি। এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই বস্তানবিকে ঘিরে যাবতীয় বিতর্কের সূত্রপাত। |
মৌলানা গুলাম মহম্মদ বস্তানবী |
বিভিন্ন মহলে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন বস্তানবি। শুরু হয় ছাত্র বিক্ষোভও। ছাত্রদের একাংশের মধ্য থেকে বস্তানবিকে উপাচার্যের পদ থেকে সরানোর দাবি ওঠে। ফেব্রুয়ারিতে পুরো ঘটনার তদন্তের জন্য একটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেন কর্তৃপক্ষ। দার উল উলুমের নয়া উপাচার্য নোমানি জানিয়েছেন, বস্তানবি নিজেই চিঠি লিখে শুরা-র বৈঠক ডেকেছিলেন এবং বলেছিলেন তিনি ওই বৈঠকে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন। কিন্তু তা তিনি করেননি। পরে বস্তানবি আবার জানান, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ হওয়ার পরে তিনি নিজেই পদত্যাগ করবেন। কিন্তু বস্তানবি নিজে আজ |
|
বলেন, ছাত্র বিক্ষোভের কারণ সম্পর্কে রিপোর্টে পরিষ্কার ভাবে কিছুই বলা হয়নি। শুধু তা-ই নয়, রিপোর্টটি অসম্পূর্ণও। এই পরিস্থিতিতে পুরো ঘটনার কোনও ব্যাখ্যাই ওই রিপোর্ট থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তিনি এ রকম একটি রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেছেন। একই সঙ্গে তিনি নতুন একটি কমিটি গঠনের দাবিও করেন। তবে তাঁর দাবি না মেনে, শুরা তাঁকে বরখাস্ত করে। বস্তানবির দাবি, “ভুল সিদ্ধান্ত। সবই আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত।” তাঁর বক্তব্য, কমিটির রিপোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিবরণ থাকলেও, দার উল উলুমে ছাত্র বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কিছুই বলা হয়নি। তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, তিনি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাবেন না। শুরার এক জন সদস্য হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন।
বস্তানবির বরখাস্ত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্র রাজীবপ্রতাপ রুডি বলেন, “সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির কাছে এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখের। এটি একটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু গুজরাতের উন্নতির পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনা সকলের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ। সত্যি কথা বলার মাসুল গুনতে হল বস্তানবিকে।” বিজেপির দাবি, মোদীর আমলে গুজরাতের যে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে, তা কখনওই অস্বীকার করা যায় না।
শুরার বৈঠক ঘিরে রবিবার সকাল থেকেই দেওবন্দে ছিল টানটান উত্তেজনা। গত কাল থেকেই এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আজ বস্তানবির বরখাস্ত হওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর থেকেই ছাত্রদের মধ্যে হইচই শুরু হয়ে যায়। যে ছাত্ররা তাঁর অপসারণের দাবি জানাচ্ছিলেন, তাঁরা রীতিমতো উৎসবে মেতে ওঠেন। তবে বস্তানবির অপসারণকে নিয়ে আজ মজলিস-ই-শুরা-র মধ্যেও মতভেদ ছিল বলে জানা গিয়েছে। নয়া উপাচার্য নোমানি জানিয়েছেন, বৈঠক চলাকালীন শুরার ১৪ জন সদস্য সভা ছেড়ে বেরিয়েও যান। বাকি ১৩ জনের মধ্যে ৯ জন বস্তানবীর অপসারণের পক্ষে এবং চার জন বিপক্ষে ভোট দেন। |
|
|
|
|
|