|
|
|
|
কুমোরটুলি উন্নয়ন প্রকল্প |
মমতার ভরসাতেই সরছে প্রতিবাদ-মঞ্চ |
অশোক সেনগুপ্ত |
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি আর তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা লাগিয়ে কুমোরটুলিতে ১৫ মাস আগে তৈরি হয়েছিল শিল্পীদের প্রতিবাদ-মঞ্চ। রাজ্য সরকারের কুমোরটুলি উন্নয়ন প্রকল্পের পদ্ধতি ও রীতির প্রতিবাদে। এর পরে হরেক বাধায় থমকে গিয়েছে প্রকল্পের কাজ। কিন্তু প্রতিবাদীরা নিজে থেকেই এ বার মঞ্চ সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। ওঁদের ইচ্ছে, পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রীর উপস্থিতিতে হবে মঞ্চ সরানোর কাজ। এ কারণে কুমোরটুলি থেকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে মহাকরণে। চিঠি গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দরবারেওপ্রকল্পের সমর্থক ও বিরোধী, দু’তরফেই।
কুমোরটুলির উন্নয়ন প্রকল্প কয়েক বছর আগে চূড়ান্ত হয় জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে। বরাদ্দ হয় ২৮ কোটি টাকা। কিন্তু কী ভাবে, কোথায় কুমোরটুলির শিল্পী-কারিগরদের সরানো হবে, তা নিয়ে জট দেখা দেয়। বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার পরে ২০০৮-এর সেপ্টেম্বর মাসে রূপরেখা তৈরি হয়। ২০০৯-এর জানুয়ারিতে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ৫৪১বি রবীন্দ্র সরণিতে জনস্বাস্থ্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিত্যক্ত গুদাম প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করে সেখানে পাঠানো হয় শিল্পীদের একাংশকে। এর পরে কেএমডিএ প্রকল্পের কাজ শুরু করতেই শিল্পীদের একাংশের বাধা আসতে শুরু করে। গত বছর ৩০ মার্চ বনমালি সরকার স্ট্রিট ও গোপেশ্বর পাল স্ট্রিটের সংযোগস্থলে তৈরি হয় প্রতিবাদ-মঞ্চ। প্রায় ৩০ বর্গফুট মাপের সেই মঞ্চে এত দিন পালা করে বসেছেন প্রতিবাদী শিল্পীরা। |
 |
পুজো আর কত দূর? অপেক্ষায় এই খুদেও। দেবাশিস রায় |
সমস্যা না মিটলেও কেন মঞ্চ সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত? ‘পল্লি উন্নয়ন ও অধিকার রক্ষা সমিতি’র অন্যতম উদ্যোক্তা অপূর্ব পালের কথায়, “আমরা রাজনীতি করি না। কিন্তু যখন আমরা প্রতিবাদ-মঞ্চ গড়েছিলাম, আশা ছিল, মমতার নেতৃত্বে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পারব। এখন উনিই মুখ্যমন্ত্রী। তাই প্রতিবাদ নয়, এখন প্রয়োজন আলোচনার মাধ্যমে একটা সুষ্ঠু মীমাংসার।”
সমাধানসূত্র খুঁজতে শুক্রবার এলাকায় যান মেয়র পারিষদ শশী পাঁজা। আর এক মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ সেখানে গেলে আবাসিকেরা অভিযোগ করেন, কেএমডিএ-র খুঁড়ে রাখা জায়গাগুলিতে জমা জলে মশা হচ্ছে। বাড়ছে ম্যালেরিয়ার আশঙ্কা। অতীনবাবু বলেন, “আমি স্থানীয় (৯ নম্বর ওয়ার্ড) কাউন্সিলরকে বলেছি ওই সব গর্ত ভরাট করে দিতে।” কাউন্সিলর মিতালি সাহা বলেন, “সমস্যাটা অনেক দিনের। আমি সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়েছি। গর্তের জল বার করে ভরাট করে দেওয়া হবে। এ নিয়ে কথাও বলেছি পুর-আধিকারিকদের সঙ্গে।” পরিস্থিতি সরেজমিন দেখে যেতে তিনি পুরমন্ত্রী এবং মেয়রকে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানান মিতালিদেবী।
পুজোর বাকি আর আড়াই মাস। নানা জায়গা থেকে উদ্যোক্তারা আসছেন প্রতিমা বায়না করতে। কিন্তু বৃষ্টি-কাদায় বেহাল দশা এলাকার। পুরনো জায়গা থেকে প্রায় ৫০ জন শিল্পী সরে গিয়েছিলেন অস্থায়ী আবাসনে। তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের চুক্তি হয়েছিল দেড় বছরের। কিন্তু প্রায় ১৫ মাসেও কাজ কিছু হয়নি। ফলে অনেকে পুরনো জায়গায় ফিরে গড়েছেন অস্থায়ী চালা। প্রকল্পের সমর্থক ‘কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতি’র সম্পাদক মিন্টু পালের কথায়, “এ ভাবে চলতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আমাদের আস্থা আছে। ওঁকে ছাড়াও পুরমন্ত্রী, স্থানীয় বিধায়ক, মেয়র সকলকেই আমরা চিঠি দিয়েছি। প্রকল্পটা না হলে ক্ষতি হবে কুমোরটুলিরই।” |
|
|
 |
|
|