রাস্তা যেন মরণ-ফাঁদ
পিচের চাদর উড়ে গিয়েছে। কংক্রিট ভেঙে বেরিয়েছে লোহার জাল। ছোটখাটো জলাশয়ের মতো কোথাও এক ফুট, আবার কোথাও দেড় ফুট গর্ত তৈরি হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে যাত্রী বোঝাই বাস ও পণ্য বোঝাই দূরপাল্লার ট্রাক। এটাই গুরুত্বপূর্ণ ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের তিস্তা ও জলঢাকা সেতুর ছবি। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে সেতুর ফাটল দিয়ে নীচে জল দেখা যায়। অভিযোগ উঠেছে, সড়ক পথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যোগসূত্র হলেও গুরুত্বপূর্ণ সেতু দুটি মেরামতে হেলদোল নেই প্রশাসনে। প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন বেহাল সেতু দুটি দিয়ে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্তারা ওই পথে চলাচল করেন। তাঁদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে বিপজ্জনক পরিস্থিতি দেখেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না! অনেক টালবাহানার পরে জাতীয় সড়ক মেরামত হলেও কেন সেতুর হাল ফিরছে না!
বেহাল রাস্তা। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সেতু দুটির সমস্যার কথা জানি। দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কয়েকদিনের মধ্যে আলোচনায় বসব।” কিন্তু মন্ত্রীর বক্তব্যে পরিবহণ কর্মী ও যাত্রীরা আশ্বস্ত হতে পারছেন কোথায়! সম্প্রতি খাদে আটকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি লোহা বোঝাই ট্রাক তিস্তা সেতুর রেলিং ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। মৃত্যু হয় একজনের। এর পরেও কয়েকটি বাস ও ট্রাক অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে। তবু সেতু মেরামত হয়নি। উল্টে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সেতু জলাশয়ের চেহারা নিয়েছে। সেতুর কংক্রিটের পাটাতন জুড়ে ছড়িয়ে থাকা খাদে পড়ে প্রতিদিন বাস ও ট্রাকের যন্ত্রাংশ ছিটকে বেরিয়ে যাচ্ছে। একটি খাদ এড়িয়ে অন্য খাদে চাকা নামাতেই ঝুরঝুর করে ভেঙে পড়ছে উইণ্ড স্ক্রিন। শিলিগুড়ি-ময়নাগুড়ি রুটের বাস চালক সিতু রায় বলেন, “দিনে ঝুঁকি নিয়ে বাস চালানো সম্ভব হলেও রাতে ভগবানের ভরসায় চলতে হচ্ছে। ভয়ে থাকি। সামান্য বেসামাল হলেই নদীতে গড়িয়ে পড়তে হবে। মন্ত্রী ও প্রশাসনের কর্তারা সবই জানেন কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।” ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে যাত্রী মহলেও। তাঁদের অভিযোগ, একে সেতুর আলো জ্বলে না। তার উপরে একের পর এক খাদ টপকে যাওয়ার বিপদ। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে রাতে কতটা গভীর খাদ তা বুঝতে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকের কর্মীরা সেতুতে নেমে তবেই এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পাচ্ছেন। তিস্তা ও জলঢাকা দুটি সেতুর একই হাল হয়েছে। যাত্রীদের সঙ্গে একমত জলপাইগুড়ির বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা। তিনি ওই সমস্যা নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য শুক্রবার পূর্তমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। বিধায়কের কথায়, “সেতু দুটির পরিস্থিতি দেখে আতঙ্কে আছি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শুক্রবার পূর্তমন্ত্রীকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার অনুরোধ জানিয়েছি।” এ দিকে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের টেকনিক্যাল ম্যানেজার পঙ্কজ মিশ্র বলেছেন, “তিস্তা এবং জলঢাকা সেতু মেরামতের জন্য ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাতে অনুমোদন পাওয়া গেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.