মনোরঞ্জন...
তারে জমিন পর

রাত তিনটে। হোটেলের লবিতে অত রাতেও শাহরুখ খান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাঁর বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে চুটিয়ে গল্প করছেন।
জিনাত আমন, খিল ধরে যাওয়া হাত-পাকে সচল করতে পায়চারি করছেন প্লেনের ভিতরে। বিশাল ভরদ্বাজ আর রাকেশ ওম প্রকাশ
মেহরা কাফের এক কোণে বসে তাঁদের নতুন ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে জোর আলোচনায় মগ্ন।
কঙ্গনা রানৌত জিজ্ঞেস করছেন শহরের কোথায় গেলে ভাল কেনাকাটা করা যাবে।


যদি মনে কৌতূহল জাগে এত সব ঘটনা ঘটছে কোথায়, তা হলে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি আইআইএফএ-পুরস্কারের রঙিন দুনিয়ায়। ছোট করে যার নাম আইফা। গত শনি-রোববার আয়োজিত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানকে অনায়াসে বলা যেতে পারে বলিউডের শ্রেষ্ঠ আউটডোর উৎসব।
দেশের বাইরে দূরের এক শহরে গত তিন দিনব্যাপী এই উৎসব ছিল আসলে বলিউডের বর্ণময় মেজাজেরই উদ্যাপন। তবে এ হল গল্পের একটা দিক। এই অনুষ্ঠানের ওজন বা চুম্বক-টান ঠিক কতটা সেটা সত্যি জানতে হলে আইফা উইকএন্ড-এ তিনটে দিন না কাটালে চলবে না। এসে দেখলেই বুঝতে পারবেন, এই অনুষ্ঠান কতটা স্পেশ্যাল।
স্পেশ্যাল, কারণ বলিউডের সব চেয়ে বড় নক্ষত্রদের সঙ্গে আপনি এখানে অনায়াসে কথা বলতে পারবেন। তোষামোদকারী ভক্তবৃন্দ তাদের ঘিরে নেই যে! ঋষি কপূর এখানে রাত বারোটায় এসএমএস পাঠিয়ে ডিনারে যাবার আমন্ত্রণ জানাতে পারেন আপনাকে। ধর্মেন্দ্র আপনার জন্য ড্রিংক্স বানিয়ে এগিয়ে দিতে পারেন। প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো বলিউড আকাশের উজ্জ্বল তারকা হোটেলের স্যুইটে বসে অনর্গল তাঁর স্কুল জীবনের গল্প করে যেতে পারেন আপনার সঙ্গে। এবং ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকা তারকারা ভক্তবৃন্দের সঙ্গে মিলেমিশে একই বাসে চেপে চলে যেতে পারেন নায়াগ্রা জলপ্রপাত দেখতে।

আইফা আর বলিউড, ভারতের ‘গুডউইল’ রাষ্ট্রদূত

একটা গতে বাঁধা ধারণা হল আইফা আসলে একটা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। ব্যাপারটা একেবারেই তা নয়। পুরস্কার এই উৎসবের একটা ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। আসলে এ হল বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারতীয় হিসেবে গর্বিত হওয়ার উৎসব। এবং সেই গর্বের সঙ্গে একই সুতোয় গেঁথে রয়েছে বলিউডের সমৃদ্ধির ইতিহাসও। এই চিন্তাভাবনাতেই আর পাঁচটা উৎসবের চেয়ে অনেক আলাদা হয়ে যায় আইফা পুরস্কার অনুষ্ঠান। বলিউডের তামাম বিখ্যাত পুরস্কার অনুষ্ঠান, যেগুলো নানা ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়ে থাকে, তার থেকে একেবারেই আলাদা হয়ে যায় আইফা তার স্বকীয়তায়। বলিউডের ঝলমলে তারকাদের সান্নিধ্য পেতে সারা দুনিয়ার ভক্তকুল ঝাঁপিয়ে পড়ে তিন দিনব্যাপী আইফা উৎসবের আঙিনায়। আর তাই মাত্র আট মিনিটে এই অনুষ্ঠানের ২৫ হাজার টিকিট হু-হু করে বিক্রি হয়ে গেলে অবাক হবার মতো কিছু থাকে না।
আইফা উইকএন্ডে তিনটে দিন কাটালে অনায়াসে বুঝে যাবেন বলিউড ব্র্যান্ড নামটি আজ কী অসম্ভব জোরালো, কী অসম্ভব শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। গত উইকএন্ডে, কানাডার মান্যগণ্য ব্যক্তিরা দেখতে এসেছিলেন এই অনুষ্ঠান। কানাডার ওন্টারিওর শিল্পমন্ত্রী স্বয়ং শাহরুখ খানকে ডেকে বললেন, যেন তাঁর ব্যবসায়ী বন্ধুবান্ধবেরা কানাডার ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসেন। কত রকম মেলবন্ধন যে ঘটল তিন দিনের এই আসরে! মাইকেল জ্যাকসনের ভাই গান গেয়ে গেলেন সোনু নিগমের সঙ্গে। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন অস্কার বিজয়িনী অভিনেত্রী হিলারি সোয়াঙ্ক। এখানেই শেষ নয়। বলিউডকে আদানপ্রদানের মাধ্যম হিসেবে কাজে লাগিয়ে কী ভাবে ভারত এবং কানাডার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সমৃদ্ধি ঘটানো যায় তা নিয়ে আয়োজিত হয়েছিল একটি আলোচনা চক্র। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শশী তারুর। স্বাভাবিক, যে কেন্দ্রীয় অসামরিক পরিবহণমন্ত্রী প্রফুল্ল পটেল আইফা এবং বলিউড প্রসঙ্গে বললেন, “বিশ্বের দরবারে ভারতের দুই গুডউইল অ্যাম্বাসাডর।”
ফ্লাইট মে মুঝে থোড়া ব্রেথলেস লগতি হ্যায়

আইফার মজাটা শুরু হয়ে যায় প্লেনে চাপার আগে থেকেই। মানে মুম্বই বিমানবন্দরেই। স্টারেরা বিমানবন্দরে পৌঁছবার পর সিকিউরিটি চেকিং শুরু। তার মধ্যেই তারকারা এন্তার অটোগ্রাফ বিলোচ্ছেন। আবহাওয়াটাই অন্য রকম। একই বিমানে তারাদের সহযাত্রী অন্যান্য অভ্যাগতরাও।
সেখানে সাংবাদিকরাও আছেন। এবং তারকারা সহজ, স্বাভাবিক মেজাজে সব সহযাত্রীর সঙ্গে মিশছেন।
এমন অনায়াস আদানপ্রদান শেষ কবে দেখা গেছে? বোধহয় গত বছরের আইফায়।
এই রকম একটা খোলামেলা পরিবেশে কত কী-ই যে হল! জানা গেল, রণধীর কপূরের হাঁটুতে ব্যথা আছে। জানা গেল, কঙ্গনা রানৌত উচ্চতাকে ভয় পান। জানা গেল, রাকেশ রোশন বিমানে মদ্যপান করেন না। সব দেখে শুনে মনে হচ্ছিল বলিউডের তাবড় স্টারেরা যেন আইফাতে একটা পিকনিক করতে চলেছেন। শুধু তফাত একটাই। পিকনিকটা দেশের মাটিতে না হয়ে কানাডায় হচ্ছে এই যা।
বিমানের এই দীর্ঘযাত্রায় (এ বারের আইফা টরন্টোয় হওয়ায় বিমান যাত্রায় সময় ছিল ১৬ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট) আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে যেতেই পারত জিনাত আমনের। জিনাতের আবার প্লেনে উঠলে দমবন্ধ হয়ে আসে। “ফ্লাইট মে মুঝে থোড়া সা ব্রেথলেস লগতি হ্যায়,” বহু বছর ধরে পরিচিত সেই হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে বললেন জিনাত আমন। যত দিন নায়িকা হয়েছেন, পর্দায় তিনি এলে তাঁর পুরুষ ফ্যানেরা দম বন্ধ করে তাঁকে দেখতেন। সেই জিনাতেরও দম বন্ধ হয়। ভাবা যায়?
এটাই বোধহয় সাংবাদিক হওয়ার সুবিধে। আইফার প্লেনে, অতলান্তিকের ৩২ হাজার ফুট ওপরে ভাসতে ভাসতে জিনাত আমনের সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়া। গত চার বছর ধরে আইফার শো সঞ্চালনা করছেন বোমান ইরানি। স্বাভাবিক যে, তিনিই সঠিক ভাবে পুরো ব্যাপারটা বোঝাতে পারেন। “আইফার সব থেকে ভাল দিক হল, পুরো অনুষ্ঠানটাই হয় সহজ খোলামেলা ভাবে। অন্য সব পুরস্কার অনুষ্ঠান এতটা উপভোগ করা যায় না। আইফা হলে নতুন নতুন দেশে যাওয়া যায়। বিলাসবহুল বন্দোবস্তের মধ্যে ক’দিন আনন্দ করা যায়। সেই সঙ্গে নানা ধরনের ইন্টারেস্টিং মানুষজনের সঙ্গে আলাপ হয়। এই সব কিছু মিলিয়ে হল আইফা,” বোমানের বক্তব্য।

ডাউনটাউন টরন্টোর হোটেলে চুলবুল পাণ্ডে

বোমান সত্যিই কিছু ভুল বলেননি। কথাটা একেবারে সত্যি। আইফা মানে সত্যিই চূড়ান্ত বিলাসব্যসন। আন্তর্জাতিক মানে সম্ভ্রান্ত পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা। এ বছর যেখানে স্টারদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল, সেটি ১০০ বছরের প্রাচীন একটি হোটেল। নাম ফেয়ারমন্ট হোটেল। গত বছর ঘটনাক্রমে এই হোটেলেই জি-২০ শীর্ষ বৈঠক হয়েছিল। বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন বারাক ওবামার মতো মানুষ। বলিউডের প্রতাপ যে কতটা তা দেখাতেই বোধহয় তারকাদের জন্য এ হেন ফেয়ারমন্ট হোটেল গোটাটাই বুক করা হয়েছিল গত উইক এন্ডে। আইফার জন্য।
বলরুমের পরে বলরুম সাজ বদলে হয়েছে সাংবাদিক বৈঠকের জায়গা। হোটেলের লবি সাজানো হয়েছে ‘দাবাং’, ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’, ‘ইশকিয়া’র মতো ছবির পোস্টার দিয়ে। এমনকী রেস্তোরাঁগুলো থেকে ভেসে এসেছে শুধু হালের হিন্দি গান, “উড় দাবাং দাবাং’, ‘দিল তো বাচ্চা হ্যায় জি’। এখানেই প্রশ্ন ওঠে, কী ভাবে এমন এলাহি আয়োজন সম্ভবপর হল? কারা করল এই আয়োজন? “উত্তরটা খুব সোজা। যখনই ‘আইফা’ অন্য কোনও দেশে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, সেই দেশের সরকার অনুষ্ঠানটির অন্যতম উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করে। তার ফলে এই উদ্যোগটি আর পুরস্কার বিতরণী উৎসবের সীমায় আবদ্ধ থাকে না। বাণিজ্যিক সম্পর্কের সম্ভাবনাও অনুসন্ধান করে সেই দেশের সরকার। এবং এই ভাবেই আইফা উইকএন্ড কালে কালে বিপুল অবয়ব নিয়ে চলেছে,” আইফা প্রদর্শনীর অন্যতম উদ্যোক্তা উইজক্রাফ্ট-এর জনৈক সদস্য এমনটাই বলছিলেন।

একটা টিকিটের দাম ৫০০ ডলার

সত্যিই ব্যাপারটা বিশালাকার। ঐতিহাসিক সি এন টাওয়ারের পাশে রজার্স সেন্টারে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান শিগ্গির দেখানো হবে স্টার প্লাসে। সে এক ঝলমলে পুরস্কার বিতরণীর রাত্রি। সেখানে চল্লিশ বছর ধরে চলচ্চিত্র শিল্পের ইতিহাসে অবদান রাখার জন্য পুরস্কৃত হলেন শর্মিলা ঠাকুর, সেখানে শাহরুখ নাচলেন তাঁর ভাঙা হাঁটু নিয়ে, সেখানে আশা ভোঁশলে নিজে থেকেই গেয়ে উঠলেন ‘ও মেরে সোনা রে সোনা’। তাঁর সেই গান শুনে প্রেক্ষাগৃহের দর্শক-শ্রোতা আপনা থেকেই উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে সম্মান ও অভিবাদন জানাল।
অবশ্য এরই পাশাপাশি আজকের বলিউডের গ্ল্যামারাস নায়িকাদের ভিড়েরও ঢল নেমেছিল। আশা ভোঁশলের গানের মূর্ছনায় নাচলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। কঙ্গনা নাচার চেষ্টা করেও খুব একটা ভাল জমাতে পারলেন না। ‘শীলা’ আর ‘মুন্নি’র সঙ্গে অন্তত মঞ্চের অনুষ্ঠানে তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পারফরম্যান্স দিলেন বিপাশা।
পুরস্কারের রাতে টিকিটের জন্য পাগলামির অন্ত ছিল না। শো-এর টিকিট রীতিমতো ব্ল্যাক হয়ে ৫০০ ডলারে বিক্রি হয়েছে। এমনকী শাহরুখও যা বললেন তা শুনে তাজ্জব লাগল। বললেন, “আমার কয়েক জন বন্ধুর জন্য টিকিট জোগাড় করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু টিকিট পেতে গিয়ে খুবই নাকাল হতে হয়েছে।” বোমান ইরানি আর রীতেশ

বিপাশা
দেশমুখ সঞ্চালিত এই আসরে ধর্মেন্দ্র খুব মজাদার পঞ্জাবি কৌতুক পরিবেশন করলেন। সঙ্গে ছিল আরও নানা রকম সব মজাদার ‘স্কিট’।

আয়োজন নিখুঁত


আইফার সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হল মসৃণ, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আকর্ষণীয় একটি অনুষ্ঠান পরিবেশন। ৫০০ জন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী ২৪ ঘণ্টা ধরে হাজির থাকতেন দেখভালে, তত্ত্বাবধানে। আয়োজনে কোথাও কোনও ত্রুটি ছিল না। সংগঠকদের আতিথেয়তা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগও ছিল না তাই। স্টাররা খাওয়া-দাওয়া নিয়ে অভিযোগ তোলেননি। প্রেসের লোকজন ইন্টারনেট সংযোগের অব্যবস্থা নিয়ে নালিশ করেননি। জলের অভাব নিয়ে অভিযোগ করেননি কেউ। এটাও ভুলবেন না যে প্রত্যেক তারকার (এমনকী সঞ্জয় কপূর-সহ) জন্য ছিল বিলাসবহুল গাড়ি। তিন দিন ধরে যাতে তাঁরা মনের সুখে ঘুরে বেড়াতে পারেন। বাছাই করা সেরা জাতের ওয়াইন, আর অঢেল খাবার-দাবার সাজানো পার্টি চলত ভোর ছ’টা পর্যন্ত। কানাডার মন্ত্রীদের অপেক্ষায় রাখা হত যাতে, শাহরুখ এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গদের গাড়ির মিছিল বাধা না পায়। আয়োজক সরকারের ওপর আইফা কর্তৃপক্ষের এতটাই দখল যে সিএন টাওয়ারের মতো শহরের দর্শনীয় জায়গাগুলিতে ঢোকার জন্য এক পয়সাও লাগত না, সঙ্গে যদি থাকত আইফার ব্যাজ।
“আমি কোনও তুলনায় যাচ্ছি না, তবে প্রত্যেক আইফা উইকএন্ডে এসে মনে হয়, যে শহরে আমরা অনুষ্ঠান করছি সেই শহরের সবাই যেন আইফার হাতের তালুতে চলে আসে। এ রকম হয় বড় বড় খেলাধুলোর অনুষ্ঠান হলে,” স্বীকার করলেন উইজক্রাফ্টের সাবাস জোফেফ।

পরের বছর আপনিও চলুন

এই লেখা পড়ে আপনার যদি ইচ্ছে হয় আইফা উইকএন্ডটা কী, সেটা চাক্ষুষ করতে, তবে সেই ইচ্ছেপূরণে কোনও অসুবিধে নেই। অন্য পুরস্কার অনুষ্ঠানে প্রবেশপত্র পাওয়ার জন্য প্রচুর লোকজনকে ধরতে হয়। কিন্তু আপনার যদি পকেটে পয়সা থাকে তা হলে আইফা উইকএন্ডটা একটা হলিডে প্যাকেজ হিসেবে আসতে পারে। যে ভ্রমণসূচিতে আইফা পুরস্কার অনুষ্ঠানের টিকিট-সহ যে শহরে আইফা হবে সেই শহর ঘোরার বন্দোবস্ত, স-অ-ব থাকবে। পয়সাওয়ালা এনআরআইরা শুধু নয়, এ বার বেঙ্গালুরু-দিল্লির বহু লোকজনকে দেখলাম আইফাতে ভিড় জমাতে।
তা হলে বাঙালিই বা পিছিয়ে থাকবে কেন?
পরের বছর আইফার জন্য এখন থেকেই তাই পরিকল্পনা করে ফেলুন। বলা যায় না, সেই সফরে বিমানে আপনারই পাশে পেয়ে যেতে পারেন ‘ব্রেথলেস’ জিনাত আমনকে।


আইফার তারকা যুদ্ধ
যেখানে এমন তাবড় সুপারস্টারদের সমাবেশ, সেখানে ওপরটা যতই পিকনিক-পিকনিক হোক, ভেতরে ভেতরে একটা চোরাগোপ্তা লড়াই চলেই।
যে দিন থেকে আইফা শুরু হয়েছে, সে দিন থেকে সেটা ছিল অমিতাভ বচ্চনের সন্তান। লোকেশন ঠিক করা থেকে অতিথি তালিকা তৈরি, সব কিছুতেই বচ্চন পরিবারের হাত থাকত। ওই আইফাতেই ঐশ্বর্যা, অমিতাভ আর অভিষেক ‘কাজরা রে’র সঙ্গে নেচেছিলেন। সেটা হয়েছিল প্রথম পাতার খবর। কিন্তু গত বছর থেকে সরে দাঁড়ান বচ্চনরা। ভেতরের খবর, কারণটা হল টাকায় না পোষানো। কিন্তু বচ্চনদের সরে দাঁড়ানো যে আইফার চমক কিছুটা হলেও কমিয়েছে, সে কথা অনস্বীকার্য।
“বচ্চনরা প্রত্যেক বছর আইফায় অন্তত চার জন স্টারকে উপস্থিত করার ব্যাপারটা দেখতেন। অমিতাভ বচ্চন ছিলেন আইফার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। সুতরাং তিনি নিজে আয়োজক দেশের সঙ্গে মিটিং করতেন, সে দেশের রাজনীতিকদের নিমন্ত্রণ করতেন। অমিতজির মতো সিনিয়র এক জন যখন এগুলো করতেন, পুরো ব্যাপারটায় একটা বিশ্বাসযোগ্যতার সিলমোহর পড়ত। সেটা সামান্য হলেও ধাক্কা তো খেয়েইছে গত বছর থেকে,” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আয়োজক সংস্থার এক সিনিয়র ডিরেক্টর টরন্টোয় বলছিলেন।
সত্যি বলতে, এমন কানাঘুসোও শোনা গেছে যে, অমিতাভ বচ্চন সরে দাঁড়াবার পর, শাহরুখ আর সলমনের মধ্যে আইফাকে কব্জা করার জন্য বিরাট ‘লবিং’ হয়। গত বছর, শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সলমন খান ছিলেন সেরা আকর্ষণ। এ বারে, টরন্টোয় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু শাহরুখ। তবে এটা পরিষ্কার যে, দু’জনের কেউই একসঙ্গে আইফার মঞ্চে কখনওই আসবেন না। হয় ইনি আসবেন, নয় উনি।
এক সুপারস্টার আইফা ছাড়তে হওয়ায় পরিষ্কার অখুশি। অন্য দু’জন আইফার মঞ্চ দখলের জন্য অনবরত ঠান্ডা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এর থেকেই বোঝা যায়, বলিউডের তাবড় স্টারদের শক্তিপরীক্ষার খেলাটা কোন পর্যায় চলে গেছে। পাশাপাশি এটাও বোঝা যায়, আইফা বলিউডের আকাশে কত বড় নক্ষত্র হিসেবে হাজির হয়েছে।

ছবি: এ এফ পি, রয়টার্স
First Page Patrika Next Item


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.