দিল্লি দরবার

রাষ্ট্রপতি ভবনের বিশাল প্রাসাদে কার্যত একাই কাটান প্রতিভা পাটিল। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তাঁর স্বামী, ছেলে রাইসিনা হিলের এই বাড়িতেই থাকতেন। কিন্তু তাঁদের নিয়ে বিতর্ক হওয়ার পর থেকেই তিনি সচেতন হয়ে যান। তখন থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে তিনি একাই থাকেন। সারা দিন অসংখ্য লোকের সঙ্গে দেখা করেন। সেনাপ্রধানদের সঙ্গে বৈঠক তো করতেই হয়। প্রধানমন্ত্রীও মাসে এক বার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। আমলাদের ডেকে না পাঠালেও প্রয়োজনে মন্ত্রীদের কখনও-সখনও তিনি ডেকে পাঠান। তার বাইরেও রয়েছে ছাত্র-ছাত্রী, বিজ্ঞানী, অসংখ্য অনুরাগীর ভিড়। কিন্তু এর মধ্যেও তিনি যথেষ্ট নজর দেন স্বাস্থ্যের প্রতি। সকালে নিজের ঘরে নিয়মিত ট্রেড-মিল করে তবেই নীচে নামেন রাষ্ট্রপতি। সকালের কর্মব্যস্ততার পরে দুপুরে একটু বিশ্রাম। তার পর আবার ব্যস্ততা। সব কাজ সেরে সন্ধ্যায় যখন নিজের ঘরে যান, সেই সময় পছন্দের বই পড়া, গান শোনা, টেলিভিশনে খবর দেখতে ভালবাসেন রাষ্ট্রপতি। যত্ন নেন রাষ্ট্রপতি ভবনের গাছপালা, পশুপাখিরও। দেশে-বিদেশে সরকারি সফরও করেন। এত কিছুর পরেও কোথাও যেন একটু নিঃসঙ্গতা ঘিরে রাখে তাঁকে।

বিজ্ঞানী-চিকিৎসক সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার এখন পশ্চিমবঙ্গের নতুন পরিবেশ মন্ত্রী। সুদর্শনবাবুর স্ত্রী তথা সাংসদ কাকলির অবশ্য রাজনীতিতে অনেক দিন হল। কিন্তু সুদর্শনবাবু এখনও নবাগতই। কিন্তু এখন তিনিও বুঝে গিয়েছেন রাজনীতি আর মন্ত্রিত্ব করতে গেলে আগের মতো ঘন ঘন বিদেশ যাত্রা নৈব নৈব চ। স্টকহলমে আন্তর্জাতিক এক চিকিৎসক সম্মেলনে সুদর্শনবাবু শুধু নন, কাকলি দেবীরও আমন্ত্রণ ছিল। বক্তৃতা দেওয়ার জন্য। স্ত্রী-রোগের উপর এই বিশেষ আলোচনা সভার আমন্ত্রণটা এসেছিল রাজ্যের নির্বাচনের আগেই। সব কিছু তৈরিও ছিল। কিন্তু সুদর্শন-কাকলি ‘দিদি’কে জিজ্ঞাসা না করে কিছু করেন না। তাই জানতে চেয়েছিলেন, এখন এই সম্মেলনে তাঁরা যাবেন কি না। মমতা তাঁদের জানিয়ে দেন, এখন রাজ্যে অনেক কাজ। তাই অন্য কোনও কাজে মন দেওয়া চলবে না। ফলে সফর বাতিল করেছেন সুদর্শন-কাকলি। তবে প্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের বড় ছেলে বিশ্বনাথ এই সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবারই বিদেশে পাড়ি দিলেন।

নন্দিনী চক্রবর্তীকে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর করা নিয়ে দিল্লির আমলা মহলে জোর আলোচনা চলছে। নন্দিনীর বয়স কম। এই বয়সেই তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের বিশেষ সচিব, আবার রাজ্য শিল্প পরিকাঠামো নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। প্রশ্ন, এ বার কি তবে নন্দিনীকে তথ্য ও সংস্কৃতি সচিবের পদ ছাড়তে হবে? দিল্লিতে গুঞ্জন, এই পদে কি আসবেন টুকটুক কুমার? তিনি এখন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিব। কিন্তু বহু আমলার ধারণা, রাজ্যের তথ্য সংস্কৃতি সচিব পদেও এখন নন্দিনীকেই রাখতে চান তৃণমূল নেত্রী। নন্দিনীকে এত দায়িত্ব কেন? মমতার ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, নন্দিনীকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রধান কারণ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। নন্দিনী দ্রুত কাজ বুঝে যান, ভাল ড্রাফট করেন। সংস্কৃতি সচিব হলেও নিজের কবি বা সাহিত্যিক হওয়ার বাসনা নেই। সম্প্রতি অফিসারদের কাছেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সি ইজ অ্যা গুড অফিসার।” যেমন দিল্লির আর এক অফিসার, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের যুগ্ম সচিব সঞ্জয় মিত্রকেও পছন্দ করেন মমতা। সঞ্জয় ৫ জুলাই দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরছেন। প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি হিসেবে।

হায়দরাবাদে এ বার সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক চলার সময়ও ঘুরে ফিরে এসেছে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গ। কিন্তু সোমনাথকে দলে ফেরাতে যে এখনও নারাজ দলের সাধারণ সম্পাদক সেটাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। পলিটব্যুরো বৈঠকে তো সীতারাম ইয়েচুরিকে কলকাতায় সোমনাথবাবুর বাড়ি যাওয়ার জন্য রীতি মতো জবাবদিহিও করতে হয়েছে। সম্প্রতি কলকাতা গিয়ে তিনি কেন সোমনাথবাবুর বাড়ি গিয়েছিলেন, তা সীতারামের কাছে জানতে চান বৃন্দা কারাট। সীতারাম জবাবে নাকি বলেছেন, তিনি আলিমুদ্দিনে গিয়ে আগে বুদ্ধবাবুর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁকে বলেই তিনি সোমনাথবাবুর বাড়ি যান। ভোটের সময় সোমনাথবাবুকে পার্টি রাজ্যে কাজে লাগিয়েছে। বহিষ্কৃত এক জন নেতার কাছ থেকে যখন এই সাহায্য নেওয়া হয়েছে, তখন তাঁর বাড়ি যেতে অসুবিধা কোথায়? বিমান বসুও সমর্থন করেন সীতারামকে। কিন্তু ওই পর্যন্তই! এই কথোপকথন থেকে স্পষ্ট, সীতা যতই আগ্রহী হোন, সোমনাথকে নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশে এখনও প্রবল বাধা। হায় সীতা!
Previous Story Desh First Page


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.