নিয়ন্ত্রিত বাজারে দুর্নীতির অভিযোগ,
তদন্তের নির্দেশ দিলেন কৃষি বিপণনমন্ত্রী
স্টল বিলি, কর ফাঁকি ও সরকারি জমি সস্তায় বিক্রি করে অন্তত ৫ কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে। ব্যবসায়ীদের কাছে অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার এখানে পরিদর্শনে এসেছিলেন কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি ওই অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মূলত যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তির, তিনি হলেন ওই নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব মোহন রিজাল। বৃহস্পতিবার তিনি অবসর নিয়েছেন। এখন ওই পদের দায়িত্ব সামলাবেন শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক। তিনি যোগ না-দেওয়া পর্যন্ত অবশ্য মোহনবাবুই দায়িত্ব সামলাবেন। এ দিন মোহনবাবুর সামনেই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ। কৃষি বিপণনমন্ত্রী বলেন, “শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। অবৈধ ভাবে বিশেষ কিছু মানুষকে জমি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগে পেয়েছি। জেলাশাসককে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে। পুরনো সমস্ত অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সমিতি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই নানা দুর্নীতির অভিযোগ পৌঁছেছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও। ফল এবং সব্জি বিক্রেতাদের প্রতিনিধিদের আগামী ১৭ জুলাই তিনি মহাকরণে দেখা করতে বলেছেন।
শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার পরিদর্শনে অরূপ রায়। বিশ্বরূপ বসাক্র
এই ব্যাপারে অভিযুক্ত সচিব মোহনবাবু খোলাখুলিই রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, তিনি কিছু দিন আগে এক রেভিনিউ ইন্সপেক্টরকে শো-কজ করে দফতরের মন্ত্রীকে বিস্তারিত জানিয়েছেন। মোহনবাবু বলেন, “নিয়ন্ত্রিত বাজারের জমি বিক্রি হয়নি। সমস্ত জমিই ৩০/৩৫ বছরের লিজে দেওয়া হয়েছে। বাম জমানায় এই দফতরের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কথা মতো আমাদের চলতে হত। স্টল বিলিতে কাউকে কম জায়গা, কাউকে বেশি দেওয়া হচ্ছে দেখে আমরা আপত্তি করলেও তা আমল দেওয়া হত না। তদন্ত হলে নিশ্চয়ই সব প্রকাশ হবে।”
মোহনবাবুর সামনেই অভিজিৎ দে-র মতো অনেক ব্যবসায়ী মন্ত্রীকে ‘দুঃখের কথা’ বলতে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অভিজিৎবাবুর অভিযোগ, ১৯৯২ সালে স্টলের জন্য অগ্রিম ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তাঁর বাবা বিমলচন্দ্রবাবু। দোকান পেতে বাকি ১০ হাজার টাকা নির্ধারিত সময়ে দিতে গেলে তাঁর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। অথচ ওই জায়গা মোটা টাকার বিনিময়ে অন্য জনকে দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীদের অনেকে ৪০ হাজার টাকা করে দিয়েও জায়গা পাননি বলে তিনি মন্ত্রীকে জানান। বাপি সরকারের অভিযোগ, বাজারের চত্বরে এক সিটু নেতার ছেলেকে জমি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। নার্সারি গড়ার জন্য জমি নেওয়া হলেও সেখানে দোতলা ভবন করে হোটেল চালু করা হয়েছে। ফল এবং সব্জি বিক্রেতা বিপ্লব রায় এবং অন্যরা জানান, আবেদন করে টাকা জমা দিলেও অনেকে জমি পাননি। অথচ সচিব তাঁর ঘনিষ্ঠ লোকদের মোটা টাকার বিনিময়ে বেশি জমি পাইয়ে দেন বলেও অভিযোগ। পার্কিংয়ের জায়গায় স্টল করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রুট মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য বিপ্লব রায় অভিযোগ করে বলেন, “রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া, বাজারের জায়গা মোটা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া, স্টল বিলি নিয়ে অন্তত ৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। মোহনবাবু-সহ অনেকেই যুক্ত।”
First Page Business Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.