|
|
|
|
তদারকি সরকার আর নয়, আইন বাংলাদেশে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢাকা |
বাংলাদেশের নির্বাচনে আর কোনও ভূমিকা থাকবে না অরাজনৈতিক তদারকি সরকারের। ১৯৯৬ সাল থেকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে এ ধরনের সরকার গঠন করা হত। কিন্তু আজ একটি সংবিধান সংশোধনী বিলে তদারকি সরকারের ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হল। এখন থেকে সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ক্ষমতা ভোগ করবে নির্বাচন কমিশন। বিদায়ী সরকার শুধু রুটিন কাজ করবে।
নতুন বিলের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, রাষ্ট্রধর্মের বিষয়টি। বিলে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসাবে ইসলামই রাখা হয়েছে। তবে হিন্দু ধর্ম-সহ অন্যান্য ধর্মকেও সমান মর্যাদা দেওয়া হবে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ‘বাংলাদেশি’র পরিবর্তে ‘বাঙালি’ পরিচয়ই হবে নাগরিকদের। বিলটি এ দিন ২৯১-১ ভোটে পাশ হয়েছে। বিরোধী বিএনপি জোটের সাংসদরা ভোট দানে বিরত ছিলেন।
সংশোধনী বিলের দু’টি প্রধান দিক নিয়েই সমালোচনার মুখে পড়েছে সরকার। বিএনপি-র অভিযোগ, তদারকি সরকারের ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে আগামী নির্বাচনে রিগিং-এর পরিকল্পনা করেছে আওয়ামি লিগ। এই বিল তারই প্রস্তুতি। বিরোধীদের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “এটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দেশের নির্বাচনের দায়িত্ব কয়েক জন অ-নির্বাচিত লোকের হাতে ছেড়ে দেওয়া যায় না।” সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে তদারকি সরকার তুলে দেওয়ার সংস্থান আনা হয়েছে এই বিলে। বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া এর বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে পথে নেমে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন। চলতি মাসে এই বিষয়েই বনধ ডেকেছিল বিএনপি।
বিলে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামই বহাল থাকায় ক্ষুব্ধ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, “আমরা মর্মাহত। অপমানিত। সরকার আইন করে আমাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করতে উদ্যোগী হয়েছে। এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” সংগঠনের মতে, এই সংশোধনী প্রস্তাব মুক্তিযুদ্ধের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর চক্রান্ত।
বিলে মুজিবর রহমানকে বাংলাদেশের ‘জাতির জনক’-এর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এবং ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তাঁর বক্তৃতাকেই দেশের ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি না দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে স্বাধীনতার ‘ঘোষণা’ করেছিলেন, তা নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্ক বহু দিনের। |
|
|
|
|
|