উত্তরের চিঠি

সংরক্ষিত অরণ্যে মৃত্যুর মিছিল
এ ভাবেই চলে নিত্য দিনের যাতায়াত। ছবি: ঝন্টু বড়াইক
কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তী প্রকল্পের পক্ষ থেকে ২০০৪-এ ৬টি রাজ্যের ২৩টি সংরক্ষিত অঞ্চলকে রেল-হাতি সংঘাতপ্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের তরাই-ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ অরণ্যভূমিও রয়েছে। যার মধ্যে দিয়ে দূরপাল্লার রেলপথ স্থাপনের ফলে এই অভয়ারণ্যগুলি আজ প্রাকৃতিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ১৯৮৭-২০০৯-এর মধ্যে রেল ইঞ্জিনের ধাক্কায় ১৫১টিরও বেশি হাতির মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য হাতি-মৃত্যুর এই সংখ্যাটি ২০০৩-এর পর থেকে বহু গুণ বৃদ্ধি পায়। কারণ, এই সময় নিউ জলপাইগুড়ি থেকে অসমের নয়া বঙ্গাইগাঁও পর্যন্ত ২৮০ কিমি ব্রড গেজে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এর ফলে তরাই ডুয়ার্সের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পরিযায়ী বন্য প্রাণী, বিশেষ করে হাতির চলাচলকে বিপদসঙ্কুল করে তুলেছে। যে সমস্ত অঞ্চল রেলওয়ে লাইনের দ্বারা বিশেষ ভাবে প্রভাবিত, সেগুলি হল ক) মহানন্দা অভয়ারণ্য মহানদী, নিম্ন চম্পাসারি, সিংগিমারি, গুলমা (১৬.৫০ কিমি) থেকে সেবক রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ১২.০৮ কিমি। খ) কালিম্পং ডিভিশনে মংপু থেকে বাগরাকোট পর্যন্ত বিপজ্জনক অঞ্চল। গ) বাগরাকোট (৪০.০৩ কিমি), ওদলাবাড়ি-ডামডিম (৪৯.১৪ কিমি), ডামডিম-নিউ মাল জংশন (৫৪.৯৭ কিমি)। ঘ) চাপরামারি অভয়ারণ্য পানঝোড়া/ শিলাঝোড়া বনবস্তি থেকে খুনিয়া-সিপচু রোড ক্রসিং পর্যন্ত প্রায় ৩.৭৫ কিমি বিপজ্জনক অঞ্চল। ঙ) চাপরামারি-নাগরাকাটা-কেরল চা-বাগান (৮১.০৮ কিমি)। চ) চেংমারি-বানারহাট চা বাগান-বিন্নাগুড়ি চা বাগান-দলগাঁও চা বাগান, মুজনাই-মাদারিহাট (১২১.১০ কিমি)। ছ) জলদাপাড়া অভয়ারণ্য ওয়েস্ট হাসিমারা হলং নদী থেকে তোর্সা নদী পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার বিপজ্জনক অঞ্চল। জ) মধু চা বাগান কালচিনি-আটিয়াবাড়ি চা বাগান ডিমা চা বাগান পর্যন্ত ১৫৫ কিমি। ঝ) বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে দমনপুর-আলিপুরদুয়ার (১৬৮.২১ কিমি)।
অবশ্য, শুধু হাতিই নয় বাইসন, চিতা, বনবিড়াল, ভাম এমনকী ময়ূরও ট্রেনে কাটা পড়ে মরছে। অথচ, রেল এবং বন বিভাগের মধ্যে মৌ স্বাক্ষরিত হলেও সংরক্ষিত অরণ্যের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণের বিধি মানা হচ্ছে না। এ ছাড়াও, কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন মন্ত্রক রেল বোর্ডকে বন্য পশুদের ‘মাইগ্রেশন রুট’ বা স্থানান্তর গমনের পথে ট্রেন ঘণ্টায় ২৫ কিমি গতিতে চালানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। তা ছাড়া, ট্রেন-হাতি সংঘর্ষ কমানোর জন্য কয়েকটি জরুরি পদক্ষেপ দরকার। যেমন, হঠাৎ বাঁক (শার্প কার্ভ), সুড়ঙ্গ, সেতু, প্রাচীর, সংবেদনশীল এলাকায় অতি সতর্ক ভাবে নিয়ন্ত্রিত গতিতে ট্রেন চালানো, রাতে মালগাড়ি চলাচল বন্ধ, এক্সপ্রেস ও প্যাসেঞ্জার ট্রেনের টাইমটেবল যতটা সম্ভব পরিবর্তন, নিয়মিত রাতে যৌথ টহলদারি, আধুনিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা, সংকটপূর্ণ জায়গায় অতিরিক্ত কেবিন খোলা ও উজ্জ্বল আলোর ব্যবস্থা, ট্রেনের চালক-গার্ডদের নিয়ে বিশেষ কর্মশালা, ট্রেনের গতিপথ পরিবর্তন, রেল ও রাজ্য বন দফতরের মধ্যে সদর্থক যোগাযোগ ও সমন্বনয়সাধন। এতে বাঁচবে অরণ্য, বাঁচবে পরিবেশ, সর্বোপরি মানুষ।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র চাই
জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত সাতকুড়া বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী স্থান। দীর্ঘ দিন ধরে এর অধিবাসীরা হাসপাতালের অভাবে দুর্ভোগের শিকার। দিনে এখানে প্রায় তিন-চারটি অ্যাম্বুলেন্সের আসা-যাওয়া লেগেই থাকে। প্রায় দশ কিমি দূরে হলদিবাড়িতে একটি নামমাত্র গ্রামীণ হাসপাতাল রয়েছে। সংকটাপন্ন রোগীদের এখান থেকে পাঠানো হয় প্রায় ২৬ কিমি দূরে অবস্থিত জলপাইগুড়ি হাসপাতালে। এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে প্রায়ই সংকটাপন্ন রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে।
তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে অনুরোধ, সাতকুড়ার অধিবাসীদের এই দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা করুন।
যানজট
করণদিঘি থেকে রায়গঞ্জ যাতায়াতে ভীষণ অসুবিধা। ৩৪ নং জাতীয় সড়ক জুড়ে টুঙ্গিদিঘি ও বিলাসপুর হাটের জন্য ভীষণ যানজট সৃষ্ট হয়; ফলে প্রায় দিনই কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হয়। মরণাপন্ন রোগী নিয়ে রায়গঞ্জ সদর হাসপাতাল কিংবা শিলিগুড়ি যেতে অসহায় অবস্থায় পড়তে হয়। এই ব্যাপারে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কাম্য।

‘উত্তরের চিঠি’, এ বি পি প্রাঃ লিঃ,
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড,
শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১
Previous Story Uttarbanga First Page



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.