বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমার
সম্ভাবনায় উঠতে পারে সেনসেক্স
বেশ কয়েক দিন বাদে খরা কাটল শেয়ার বাজারে। ছোটখাটো নয়, শুক্রবার এক ধাক্কায় সেনসেক্স উঠেছে ৫১৩ পয়েন্ট। সূচক আবার ফিরেছে ১৮ হাজারে। এই ভাল খবরের পাশাপাশি খারাপ খবরও ছিল লগ্নিকারী তথা সাধারণ মানুষের জন্য। তেল-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি আঘাত করবে সবাইকে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে দাম বাড়বে বহু পণ্যের। ফলে আরও শক্তিশালী হবে মুদ্রাস্ফীতি নামের ‘দৈত্যটি’। এমনিতেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হানা ‘শক্তিশেল’-এ কোনও কাজ হচ্ছিল না। এর পর যদি ব্রহ্মাস্ত্র হানতে হয়, তবে তা শুধু মুদ্রাস্ফীতিকেই আঘাত করবে না, আঘাত করবে শিল্প এবং শেয়ার বাজারকেও। অর্থাৎ ৫০০ পয়েন্ট উত্থানে পুলকিত হওয়ার তেমন কারণ নেই।
তা সত্ত্বেও প্রশ্ন হল, প্রতিকূল পরিবেশে বাজার এতটা তেতে উঠল কেন? কারণ হিসাবে পাওয়া যাচ্ছে দুটি তথ্য:
(১) অর্থনীতির পতনের হাত থেকে গ্রিসের রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা এবং
(২) আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কিছুটা নিম্নমুখী হওয়া।
এই দুই কারণে শুক্রবার শুরু থেকেই তেতে ওঠে ইউরোপের বাজার। এরই বড় প্রভাব পড়ে ভারতীয় বাজারে। তবে মনে রাখতে হবে, শুক্রবার মার্কিন বাজার কিন্তু বন্ধ হয়েছে বেশ দুর্বল অবস্থায়। অবশ্য আশার আলো যে একদম নেই তা নয়। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কিছুটা নেমেছে। সম্ভাবনা আছে আরও নামার। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি আগামী ৩০ দিনে তাদের ভাণ্ডার থেকে ৬ কোটি ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বিরাট সরবরাহ (বিশ্ব উৎপাদনের ২.৫%) বাজারে এলে তেলের দাম আরও কমার সম্ভাবনা প্রবল। এর ফলে ভারতের তেল আমদানির বিল কমবে। চাপ কমবে মুদ্রাস্ফীতির উপরেও। বিশ্ব বাজারে দাম কমলে সেনসেক্স-নিফ্টি কিছু দিন পর ফের চাঙ্গা থাকার সম্ভাবনা বাড়বে।
ভারতকে তেল-গ্যাসের দাম বাড়াতে হল এমন এক সময়ে, যখন বিশ্বের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম নিম্নমুখী। তেল সংস্থাগুলির ঘাটতি এমন এক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল যে, এই সিদ্ধান্ত না-নিয়ে উপায়ও ছিল না সরকারের। বৃদ্ধির ফলে ভারতীয় তেল উৎপাদন এবং বিপণন সংস্থাগুলির আয় বাড়বে ২১,০০০ কোটি টাকা। তবে এর পরেও চলতি বছরে তাদের ঘাটতি থেকে যাবে ১.২০ লক্ষ কোটি টাকা। শুল্ক কমানো বাবদ ভারত সরকারের আয় কমবে ৪৯,০০০ কোটি টাকা। তেল-গ্যাসের দাম বাড়ায় কোম্পানিগুলির শেয়ারের দাম শুক্রবার বেড়েছে ১ থেকে ৬ শতাংশ। বাজার উঠেছে প্রায় ৩ শতাংশ। চলতি বছরে এক দিনে এইটিই সব থেকে বড় উত্থান। ১০০ টাকারও বেশি বেড়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক এবং হিরো হোন্ডা শেয়ারের দাম।
বাজারের কাছে আর একটি ভাল ইঙ্গিত হল বর্ষার শুভাগমন। এখনও পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যা বৃষ্টিপাত হয়েছে তা মোটের ওপর ভালই বলতে হবে। রাজস্থান ও পশ্চিমবঙ্গে তো বন্যার উপক্রম। ভাল বর্ষা এবং নিম্নমুখী তেলের দাম মুদ্রাস্ফীতির উপর চাপ কমাবে বলে আশা করা যায়। তা যদি হয়, তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে হয়তো আর সুদ বৃদ্ধির পথে হাঁটতে হবে না। এই সব যদি ঠিকঠাক ঘটে, তবে সূচক আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে।
শেয়ার বাজারে নথিবদ্ধ কোম্পানিগুলির বার্ষিক সাধারণ সভা তথা ডিভিডেন্ড ঘোষণা এবং বণ্টনের মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। ই মেল-এর মাধ্যমে সদস্যদের কাছে কোম্পানির বার্ষিক রিপোর্ট পাঠানো আইনগত স্বীকৃতি পেয়েছে। এর ফলে খরচ বাঁচবে, কাগজ বাঁচবে, বাঁচবে পরিবেশ। কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘গ্রিন ইনিশিয়েটিভ’। ই-মেলের মাধ্যমে কোম্পানি সংক্রান্ত তথ্য পেতে হলে সদস্যদের ই-মেল আইডি নথিবদ্ধ করাতে হবে কোম্পানি, কোম্পানির শেয়ার রেজিস্ট্রার অথবা সংশ্লিষ্ট ডিপজিটরি বা ডি পি-র দফতরে। ই সি এস-এর মাধ্যমে সরাসরি ব্যাঙ্কে ডিভিডেন্ড পেতে হলে ডি পি অথবা কোম্পানির দফতরে দেরি না-করে নথিবদ্ধ করুন আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত তথ্য। এর সুবিধা অনেক। ই-মেল অথবা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরের পরিবর্তন হয়ে থাকলে তাও জানিয়ে দিন চটজলদি।
Previous Story Business Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.