শুধু মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম নয়। একই অবস্থা কাটোয়া ও দাঁইহাটে ভাগীরথীর উপরে থাকা এক্স-জমিদারি বাঁধেরও। বেশ কয়েক বছর আগে বর্ধমানের তৎকালীন জেলাশাসকের উদ্যোগে পুর দফতর ওই এক্স-জমিদারি বাঁধের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছিল। বর্তমানে সেই বাঁধেরও অবস্থা খারাপ। আর তাই বাঁধের পাড়ে থাকা বাসিন্দারা দুশ্চিন্তাকে সঙ্গী করেই বেঁচে থাকেন বর্ষায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কেতুগ্রামের চড়খি, বিল্লেশ্বর, ত্যাওড়া, রসুই, গণফুল, ভাণ্ডারগড়িয়া, মঙ্গলকোটের মাঝখাঁড়া, পালিগ্রাম, সাঁতলা, ব্রহ্মপুর-সহ বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ বেশ পলকা। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, জল বাড়লেই বাঁধ ভাঙার উপক্রম হবে। কেতুগ্রামের রসুই গ্রামের বাসিন্দা তপন রায় কিংবা সিপিএম নেতা শের আলি বলেন, “প্রতি বছর অজয় নদের কেতুগ্রামের দিকে বাঁধ ভাঙবে, এমনটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রামবাসীরাই তৎপর হয়ে বাঁধ সংস্কার করে থাকেন।” মঙ্গলকোটের পালিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান নবকুমার মণ্ডলের কথায়, “জল বাড়লে কী হবে, বুঝতে পারছি না।”
অজয় ও ভাগীরথীর এক্স-জমিদারি বাঁধের অবস্থার পরিবর্তন হোক, এমনটাই চান বাসিন্দারা।
কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এক্স-জমিনদারি বাঁধগুলি সেচ দফতরই অধিগ্রহণ করলে ভাল হয়। বিশেষজ্ঞরা বাঁধ সংস্কার করলে মানুষেরও দুশ্চিন্তা কিছুটা কমবে।”
কিন্তু সেচ দফতরের দামোদর ক্যানাল ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “এক্স-জমিদারি বাঁধ আমরা সংস্কার করছি না। জেলা পরিষদকেই এগিয়ে আসতে হবে।” আবার, ময়ূরাক্ষী ক্যানাল ডিভিশনের সালারের সহকারী বাস্তুকার প্রদীপ দাস বলেছেন, “কেতুগ্রামের অজয় নদের উপরে রসুইগ্রামের বাঁধের কিছুটা অংশ আমাদের। বাকিটা কাদের দায়িত্বে রয়েছে ঠিক বলতে পারব না।” বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি উদয়শঙ্কর সরকার অবশ্য বলেন, “এক্স জমিদারি বাঁধ শুধু মাত্র জেলা পরিষদের পক্ষে সংস্কার করা সম্ভব নয়। সেচ দফতরকেও এগিয়ে আসতে হবে।”
বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কারসিংহ মিনা বলেন, “সেচ দফতরের আধিকারিকদের সমস্ত বাঁধ ঘুরে রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছি। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বাঁধ সংস্কার নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বাসিন্দারা এখন সেই অপেক্ষাতেই। |