বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে রাত জাগছে কাটোয়ার দুই গ্রাম
খনও বছর ঘোরেনি। তার আগেই কোটি টাকা দিয়ে সংস্কার হওয়া দাঁইহাটে ভাগীরথীর উপরে তৈরি বাঁধের অস্তিত্ব সঙ্কটে।
ভাগীরথীর উপরে থাকা এই বাঁধটি দুর্বল থাকায় প্রতিবছর জল বাড়লেই বাঁধ ভাঙার সম্ভাবনা দেখা দেয়। স্থানীয় মানুষ থেকে সেচ দফতরের লোকজন রাত জেগে কোনওরকমে ‘ঠেকা’ দেওয়ার ব্যবস্থা করে। বর্ষাও চলে যায়। মানুষও আর এ নিয়ে কোনও কথা বলেন না।
বেশ কয়েক বছর ধরে এমনই চলছিল। গোল বাধল ২০০৮-এ। দাঁইহাট ও অগ্রদ্বীপ গ্রাম পঞ্চায়েতের চরসাহাপুর গ্রামের সংযোগস্থলে বাঁধ ভেঙে ভাগীরথীর জল ঢুকতে লাগল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বর্ধমান দামোদর ক্যানাল ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর নির্দেশে তৈরি হল রিং বাঁধ। ওই বছরই সেচ দফতর বাঁধটি সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৯-এ জমি অধিগ্রহণ করে ৫ মিটার চওড়া ও ১২ মিটার উঁচু করে বাঁধটি সংস্কার করা হয়। প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধটির সংস্কার করতে খরচ হয় ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা।
এই বাঁধ সংস্কারের পরে দাঁইহাট ও চরসাহাপুরের বাসিন্দারা ভেবেছিলেন, বর্ষায় তাঁদের আর আতঙ্কে দিন কাটাতে হবে না। কিন্তু ভাগীরথীর জল বাড়তেই ভাঙন শুরু হয়ে গিয়েছে। পাড় তলিয়ে গিয়ে এ বার ভাগীরথী ‘আক্রমণ’ করেছে সদ্য সংস্কার হওয়া বাঁধটিকে। যার ফলে বাঁধের গায়ে লেগে থাকা বোল্ডারের একাংশ এখন জলের তলায়।
ভাগীরথীর জল এখনও সে ভাবে বাড়েনি। তাতেই যদি এই হাল হয়, তবে ভরা বর্ষায় কী হবে তা ভেবে কুল পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। চরসাহাপুরের বাসিন্দা ভিখারি মণ্ডল, রাজেন্দ্র চৌধুরীরা বলেন, “বাঁধের অবস্থা দেখে গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হচ্ছে। এ বছর ভেবেছিলাম নিশ্চিন্তে ঘুমোব। হল না! মনে হচ্ছে এটাই ভবিতব্য।” তাঁরা জানান, সোমবার বিকেল থেকে প্রায় ১০০ মিটার জমি গ্রাস করে এ বার ভাগীরথী বাঁধের দিকে তেড়ে আসছে। তাঁদের শঙ্কা, এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে বাঁধটির একাংশ ভাগীরথীর গর্ভে চলে যাবে। আর বাঁধ ভেঙে গেলে চরসাহাপুর, দাঁইহাট শহর-সহ কাটোয়া ২, কাটোয়া ১, পূর্বস্থলী ও মন্তেশ্বরের একাংশ জলের তলায় চলে যাবে বলে জানিয়েছে সেচ দফতর।
বিধানসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরেই বাঁধের ওই অংশ দেখতে গিয়েছিলেন কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। এ নিয়ে তিনি বর্ধমান দামোদর ক্যানাল ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে চিঠিও দেন। মঙ্গলবার বিধায়ক বলেন, “জলের তোড়ে বাঁধের গায়ে থাকা বোল্ডার সরে যাচ্ছে খবর পেয়েছি। সেচ দফতরকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। সেচমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।” বর্ধমান দামোদর ক্যানাল ডিভিশনের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “নদিয়ার দিকে চর পড়ছে বলে দাঁইহাটের কাছে ভাগীরথী চলে আসছে। আপাতত এই প্রবণতা আটকানোর জন্য বাঁশের খাঁচা ফেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে ওই জায়গার জন্য একটা প্রজেক্ট নেওয়ার কাজ হবে।”
First Page Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.