কিছুদিন ধরেই জেলা স্তরে দলের সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে আলোচনা চলছিল। এ বার তা বাস্তবায়িত হল। সোমবার রাতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে সরানো হল প্রণব বসুকে। নতুন সভাপতি হলেন দীনেন রায়, তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ সৈনিক হিসাবে পরিচিত। একটা সময় অবশ্য দীনেনবাবুর সঙ্গেও মমতার সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থীপদ নিয়ে বিরোধ বাধে ২০০৬-এ। মেদিনীপুর বিধানসভায় প্রার্থী করা হয়েছিল রমাপ্রসাদ তিওয়ারিকে। দীনেনবাবু নির্দল হিসেবে ভোটে লড়েন। তখন তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ‘গণতান্ত্রিক তৃণমূল ফ্রন্ট’ গড়েন দীনেনবাবু। পরে ফের তৃণমূলে ফিরে আসেন। আইএনটিটিইউসি-র দায়িত্ব পান। এ বার জেলা সভাপতি। নতুন দায়িত্ব সম্পর্কে দীনেনবাবুর |
প্রতিক্রিয়া, “কঠিন দায়িত্ব। নেত্রীর নির্দেশ মেনে সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে।” জেলা তৃণমূলেও সাংগঠনিক রদবদল হয়েছে। পুরনো কমিটি ভেঙে ৩৬ জনের কোর কমিটি তৈরি হয়েছে। চেয়ারম্যান থেকে গিয়েছেন মৃগেন মাইতি। কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ। প্রণব বসু, আশিস চক্রবর্তীর পাশাপাশি সদ্য কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা নির্মল ঘোষ, দুর্গেশ মল্লদেবও রয়েছেন কোর কমিটিতে। তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কেরাও আছেন। শীঘ্রই কোর কমিটির বৈঠক হবে। তার পর ব্লক থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত কমিটি গড়া হবে। এ দিকে, প্রণববাবুকে সভাপতি পদ থেকে সরানো নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রণববাবুর আমলেই পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো লাল দুর্গেও ‘উত্থান’ হয়েছে তৃণমূলের। তাহলে তাঁকে সরানো কেন? দল সূত্রের খবর, মেদিনীপুর পুরসভা ঠিক ভাবে চালাতেই একপদ, এক নেতার তত্ত্বে সরানো হল প্রণববাবুকে। দীনেনবাবু বরাবর মমতা-ঘনিষ্ঠ। মমতা যখন রাজ্য যুব কংগ্রেসের সভাপতি, তখন দীনেনবাবু সহ-সভাপতি। দীনেনবাবুকে মেদিনীপুর বিধানসভায় প্রার্থী করতে দিল্লি পর্যন্ত দরবার করেছিলেন মমতা। আর তৃণমূলের সূচনালগ্ন থেকেই তিনি দলে আছেন। প্রতিটি কর্মীকে নামে চেনেন। দীনেনবাবুর উপরই তাই দলীয় সংগঠন গড়ার ক্ষেত্রে ভরসা রেখেছেন তৃণমূল নেত্রী। দীনেনবাবুও বলেন, “নেত্রীর নির্দেশ মতো সংগঠনকে মজবুত করতে প্রানপণ লড়ব।” |