ছোট আঙারিয়া মামলা
কোর্টে গোপন জবানবন্দি বক্তার ও দুই প্রত্যক্ষদর্শীর
শ বছর ধরে ‘ফেরার’ সিপিএম কর্মী দিল মহম্মদ ধরা পড়ার পরে কফিনে চলে যাওয়া ছোট আঙারিয়া মামলা নতুন করে প্রাণ পেয়েছে। পুনর্তদন্তও শুরু করেছে সিবিআই। রাজ্যে পালাবদলের পরে নতুন করে মুখ খুলেছেন মামলার সাক্ষী, প্রত্যক্ষদর্শীরাও।
সেই সূত্রেই মঙ্গলবার মেদিনীপুরের বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (ফার্স্ট কোর্ট) অমিতাভ দাসের কাছে গোপন জবানবন্দি দিলেন মামলার মূল অভিযোগকারী বক্তার মণ্ডল। ‘প্রত্যক্ষদর্শী’ রফিক মণ্ডল এবং শেখ হাবিবুলও এ দিন জবানবন্দি দেন বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সেকেন্ড কোর্ট) ইন্দ্রনীল চক্রবর্তীর কাছে।
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য সুকুর আলির ছেলের রক্ত নেওয়া হচ্ছে ছবি রামপ্রসাদ সাউ
পুনর্তদন্তে ইতিমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ কিছু সূত্র ও তথ্য মিলেছে বলে দাবি করে সিবিআই সূত্রে জানানো হয়েছে, দিল মহম্মদের সঙ্গেই এর আগে ‘প্রমাণাভাবে’ খালাস পেয়ে যাওয়া সিপিএম নেতা তপন ঘোষ, সুকুর আলি-সহ ৮ অভিযুক্তের ‘পুনর্বিচার’-এর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে এখনও ‘ফেরার’ চার অভিযুক্ত---প্রশান্ত পাল, মোক্তার শেখ, আজিজুল মিদ্যা ও আবদুল খানের খোঁজে তল্লাশিও চলছে। সিবিআইয়ের আইনজীবী তাপস বসুর আশা, “সাক্ষীরা এ বার আদালতে সত্য বলবেন, চাপের কাছে নতিস্বীকার করবেন না বলেই মনে করছি।” ২০০১-এর ৪ জানুয়ারি যাঁর বাড়িতে সিপিএমের ‘হামলা’ হয়েছিল, অগ্নিসংযোগ-গুলিবর্ষণে অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছিলেন বলে অভিযোগসেই বক্তার মণ্ডল এর আগের দফায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে ‘বিরূপ’ হয়েছিলেন। মামলা এক দফা ভেস্তে যাওয়ার যা অন্যতম কারণ। রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর পরে সেই বক্তারই সংবাদমাধ্যমকে জানান, সিপিএমের ‘হুমকি’র ফলেই এর আগে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। ফের আদালতে ডাকা হলে সত্যি কথা বলবেন। কয়েক দিন আগে ছোট আঙারিয়ায় গিয়ে সিবিআই অফিসারেরা বক্তারের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরে গত শুক্রবার কলকাতায় নিজেদের দফতরে ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে জেরা করেন এসপি (সিবিআই) এম এন সিংহ।
অন্য দিকে, সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষের আদিবাড়ির কাছে দাসেরবাঁধ থেকে উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এ দিনই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে কেশপুর-গড়বেতার কিছু বাসিন্দার রক্তের নমুনা নেওয়া হয়। তৃণমূলের দাবি, ২০০২-এর ২২ সেপ্টেম্বর কেশপুরের পিয়াশালায় সিপিএমের হামলার পর থেকে ‘নিখোঁজ’ পাঁচ দলীয় কর্মী--অজয় আচার্য, স্বপন সিংহ, দিলওয়ার শেখ, নবকুমার লাহা ও সুকুর আলির হাড়গোড়ই মিলেছে দাসেরবাঁধে। এ দিন রক্ত দেন অজয় আচার্যের দুই ছেলে শ্যামল ও গৌতম, স্বপনের বাবা
আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বেরোচ্ছেন বক্তার মণ্ডল । সৌমেশ্বর মণ্ডলের ছবি।
মনোরঞ্জন সিংহ ও ভাই সঞ্জীব, দিলওয়ারের বাবা তাইসুদ্দিন শেখ ও মা রাবিয়া বিবি, নবকুমারের দুই দাদা ষষ্ঠী ও মুরারি এবং সুকুর আলির নাবালক ছেলে অমর শেখ। পিয়াশালার ঘটনার সময় অমর ছিল তিন মাসের শিশু।
গত রবিবার কেশপুরের পাঁউশখালি সংলগ্ন ডলঙ্গ জঙ্গলের কাছেও খুলি, হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছিল। সেগুলি ২০০০-এর ২২ এপ্রিল থেকে সিপিএমের লোকজনের হাতে ‘অপহৃত’ তৃণমূল কর্মী মওদুদ হোসেনের বলে দাবি করেছিলেন তাঁর দাদা মাকসুদ। এ দিন মাকসুদ, তাঁর বাবা বসির আলি, মা মাহমুদা খাতুনও দেহাবশেষ শনাক্তকরণের জন্য রক্ত দেন মেডিক্যাল কলেজে।
অস্ত্র-উদ্ধার, সেই সূত্রে ধরপাকড়ও সমানে চলছে। এ দিন বাঁকুড়ার জয়পুর থানার হিজলডিহা গ্রামের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় ছ’টি দেশি পাইপগান ও একটি একনলা বন্দুক। সোমবার রাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থানার চুনপাড়া থেকে একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি-সহ সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য হরিমোহন দিগারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতকে জেরা করে এলাকায় আরও কিছু বেআইনি অস্ত্রের সন্ধান মিলেছে বলে পুলিশের দাবি। পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-২ ব্লকের ধুসুরদা গ্রামে এ দিন সিপিএমের শাখা অফিসে বেআইনি অস্ত্রের খোঁজে তল্লাশি চলে। একটি বাক্স থেকে ৬টি তলোয়ার মেলে। পুলিশ সিপিএমের লোকাল কমিটি ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দীপক মান্নাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
First Page Medinipur Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.