গ্রেগের সময়টা সবথেকে দুঃস্বপ্নের, তোপ জাহিরের
নিজের দেশে যখন তাঁকে নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে তখন গুরু গ্রেগের বিরুদ্ধে নতুন করে তোপ দাগলেন জাহির খান। বলে দিলেন, গুরু গ্রেগ ভারতীয় দলের কোচ থাকার সময়টাই তাঁর ক্রিকেটজীবনের সবচেয়ে দুঃস্বপ্নের, সবচেয়ে হতাশাজনক অধ্যায়। যেহেতু গ্রেগ তাঁকে সব সময় বুঝিয়ে দিতেন যে, তোমাকে আমরা দলে চাইছি না। জাহিরের বক্তব্য অস্ট্রেলীয় প্রচারমাধ্যমেও হইচই ফেলে দিয়েছে। সাইমন কাটিচের চুক্তি তালিকা থেকে বাদ পড়া নিয়ে এমনিতেই গ্রেগ এবং অস্ট্রেলীয় নির্বাচকমণ্ডলী তোপের মুখে ছিলেন। জাহিরের মন্তব্য তুলে ধরে অস্ট্রেলিয়াতেও নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে গ্রেগের তারুণ্য নীতির।
ভারতীয় পেসার বলেছেন, ওই সময়টা তিনি পারফর্ম করতেই ভুলে গিয়েছিলেন। সব সময় ভাবতে হত, গ্রেগ তাঁকে টিমে চান কি চান না। জাহিরের পাশাপাশি সৌরভ, সচিন-সহ একাধিক সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে সংঘাত হয়েছিল গ্রেগের। সেটা মনে করিয়ে দিয়ে জাহির বলেছেন, ওই সময় ড্রেসিংরুমের আবহটাই খুব গুমোট হয়ে গিয়েছিল। “মনে হত যেন আমাকে কালো তালিকায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হত, পারফরম্যান্স কিছু নয়। তোমার আচরণ আমরা পছন্দ করছি না। তুমি ভারতীয় ক্রিকেটকে এগোতে দিচ্ছ না। শ্রীলঙ্কা সফরের পর সটান আমাকে বাদ দিয়ে দেওয়া হল। ওই সফরে আমার পারফরম্যান্স কিন্তু খারাপ ছিল না,” একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া চাঞ্চল্যকর সাক্ষাৎকারে বলেছেন জাহির। সঙ্গে যোগ করেছেন, “ওই সময়টা সারাক্ষণ কঠিন লড়াই চালিয়ে যেতে হত। যখন নিজের টিমের মধ্যেই যুদ্ধ করতে হয়, তখন সেই লড়াই জেতা খুব কঠিন।”
এমন একটা সময় জাহির মুখ খুললেন, যখন গুরু গ্রেগকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সাইমন কাটিচের বাদ পড়া নিয়ে গ্রেগের তারুণ্য নীতি সেখানেও কাঠগড়ায়। উত্তেজিত কাটিচ তাঁর বাদ পড়ার জন্য সরাসরি গ্রেগকে দায়ী করেছেন। গ্রেগ জমানা ঠিক যতটা দুঃস্বপ্নের ছিল, গ্যারি কার্স্টেন যুগ ঠিক ততটাই সুখের ছিল বলে মনে করেন জাহির। “গ্যারি সবাইকে ব্যক্তিগত জায়গাটা দিত। আমাদের অনেক ভাল বুঝতে পেরেছিল। শাসকের মতো না চালিয়ে ও সকলের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করেছিল। গ্যারি কোচ ছিল না, আমাদের বন্ধু ছিল,” বলে জাহির গ্রেগের তারুণ্য নীতিকে আক্রমণ করেন, “তরুণরা ভাল করলে সেটা নিঃসন্দেহে ভাল ব্যাপার। কিন্তু এক জন সিনিয়র ক্রিকেটার যে ভাল ভাবে তার কাজ করে চলেছে, তাকে বিসর্জন দিয়ে কিছুতেই এক জন তরুণকে দলে নেওয়া যায় না।”
ক্রিকেটজীবনের কঠিনতম সময়ের মধ্যে উস্টারশায়ারের হয়ে কাউন্টি খেলাটাই তাঁকে নতুন জীবন দিয়েছে বলে মনে করেন জাহির। ২০০৬ কাউন্টি মরসুমে এ দিকে যখন গুরু গ্রেগের রাজ চলছে তখন উস্টারের হয়ে কাউন্টিতে ৭৮ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটসংগ্রাহক হন জাহির। “উস্টার আমাকে শিখিয়েছিল কেন আমি ক্রিকেট খেলছি। দেশের হয়ে খেলছিলাম না বলে সেই চাপটা ছিল না। কাউন্টিতে আমি ক্রিকেটকে উপভোগ করা শিখেছিলাম।”
প্রত্যাবর্তনের পর থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের উত্তরণে অন্যতম প্রধান ভূমিকা নিয়েছেন জাহির। ধোনির ভারতের এক নম্বর টেস্ট দলের আখ্যা পাওয়ার পিছনে ব্যাট হাতে যেমন সচিনের অসাধারণ ফর্ম, তেমনই বল হাতে জাহিরের ধারাবাহিক সাফল্য। এ বারের বিশ্বকাপেও শাহিদ আফ্রিদির সঙ্গে তিনি যৌথ ভাবে সর্বোচ্চ উইকেটসংগ্রাহক। ওয়াংখেড়ের ফাইনালে প্রথম স্পেলে পর পর তিনটে মেডেন ওভার করেন। অথচ ২০০৩-এর ওয়ান্ডারার্স ফাইনালে হেডেন-গিলক্রিস্টের সামনে উড়ে গিয়েছিলেন। দু’টো ফাইনালের তুলনা করতে গিয়ে জাহির বলেন, “২০০৩-এ আমি অনেক কাঁচা ছিলাম। আবেগকে কী করে নিয়ন্ত্রণ করতে হয় জানতাম না। জাতীয় সঙ্গীত শেষ হতে না হতেই আমার রক্ত ফোটা শুরু হয়ে গিয়েছিল। আমার তখন শুধু মনে হচ্ছিল, অস্ট্রেলিয়াকে ধ্বংস করব। কিন্তু এই বিশ্বকাপ ফাইনালে আমি অনেক পরিণত ক্রিকেটার হিসেবে নেমেছিলাম। জানতাম আবেগ থাকবে আর আমাকে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নিজেকে বলছিলাম, মাঠে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় নিজের বোলিংটা করো।”
First Page Khela Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.