|
|
|
|
ভাঙড়ে খুন তৃণমূল নেতা, ৫ তিরবিদ্ধ গোয়ালতোড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দেগঙ্গা ও মেদিনীপুর |
দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হলেন দেগঙ্গা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের কাশীপুর থানার ভোগালি-২ অঞ্চলের যুব তৃণমূল সভাপতি। রবিবার রাতে দেগঙ্গা থানার আমুলিয়া পঞ্চায়েতের ঝিকুরিয়া গ্রামের কাছে পৃথীবা রোডে মহিউদ্দিন মোল্লা (৩০) নামে ওই তৃণমূল নেতার গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের কপালে, বুকে, পিঠে পাঁচটি গুলির দাগ পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
দলীয় নেতাকে খুনের প্রতিবাদে সোমবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা, অশোকনগর, বেড়াচাঁপা ও দেগঙ্গা থেকে তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকেরা পৃথীবা রোডে ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেই সময় ওই রাস্তা দিয়ে বেড়াচাঁপার দিকে দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় একটি মিনিট্রাক ভিড়ের মধ্যে কয়েক জনকে ধাক্কা মেরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। দুর্ঘটনায় ৩ জন মারা যান। খুনের ঘটনা এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রতিবাদে এ দিন সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পথ অবরোধ করেন স্থানীয় মানুষ। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি বুলেট এবং একজোড়া জুতো পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। মহিউদ্দিনের ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসা ছিল। ব্যবসা সংক্রান্ত কারণেই এই খুন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গভীর রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। |
|
ঘটনাস্থলে পুলিশ। দেগঙ্গায় সোমবার।-নিজস্ব চিত্র |
তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে সিপিএমের দিকে। ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক আরাবুল ইসলামের অভিযোগ, “বিধানসভা নির্বাচনে ভাঙড়ে জেতার পর থেকেই সিপিএম ওই এলাকায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা করছে। আমরা তার প্রতিবাদ করাতেই এই খুন।”
তৃণমূলের অভিযোগ অস্বীকার করে সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কেউ জড়িত নন। আমরা চাই দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাক।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ১০টা নাগাদ বদর থেকে বেড়াচাঁপা যাওয়ার পৃথীবা রোড ধরে কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কয়েকজন। দেগঙ্গা থানার ঝিকুরিয়া গ্রামের কাছে তাঁরা দেখেন রাস্তার উপরে একটি মোটরবাইক উল্টে পড়ে রয়েছে। রাস্তায় রক্তের দাগ এবং কিছু দূরেই পড়ে রয়েছে এক জোড়া জুতো। পুলিশ গিয়ে মহিউদ্দিনের দেহ উদ্ধার ও শনাক্ত করে।
অশান্তি অব্যাহত পশ্চিম মেদিনীপুরেও। এ বার রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল গোয়ালতোড়ে। তিরবিদ্ধ হলেন ৫ তৃণমূল-কর্মী। আহত হয়েছে দুই ছাত্রও। সবাইকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপরে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে সিপিএমের ‘সশস্ত্র’ লোকজন। সিপিএম অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। |
|
হাসপাতালে জখম মুক্তিপদ মান্না। - রামপ্রসাদ সাউ |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার রাতে হঠাৎই গোয়ালতোড় ব্লকের গোয়ালডাঙার শুটকুঝুরি গ্রামে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে তৃণমূলের লোকজনের সংঘর্ষ বাধে। মুক্তিপদ মান্না, শিবশঙ্কর মণ্ডল, দীনবন্ধু মণ্ডল, রাখাল মণ্ডল ও মদন মান্না নামে ৫ জন তিরবিদ্ধ হন। রাতেই তাঁদের মেদিনীপুর মেডিক্যালে আনা হয়। সঙ্গে শুভ মান্না ও সন্দীপ মান্না নামে দুই ছাত্রকেও আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মুক্তিপদবাবুর পেটে তির ঢুকে যায়। সেই অবস্থাতেই হাসপাতালে আসেন। তাঁর কথায়, “আচমকাই ওরা (সিপিএম) হামলা করে। গ্রামে সন্ত্রাসের পরিবেশ জিইয়ে রাখতে চাইছে ওরা।” পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা সিপিএম কর্মী-সমর্থক বলেই পরিচিত। |
|
|
|
|
|