পশ্চিমে অশান্তি বন্ধে কড়া হচ্ছে তৃণমূল
নির্বাচনে রাজ্যে পালাবদল ঘটেছে। ‘বদলা নয়, বদল চাই’ স্লোগান তুলেছিল যারা, তারাই ক্ষমতায় এসেছে। বদলে গিয়েছে এমনকী ‘লালদুর্গ’ পশ্চিম মেদিনীপুরও। কিন্তু বদলার মনোভাব কি দূর হয়েছে? জেলার একের পর এক জায়গা থেকে প্রতি দিনই অশান্তির খবর আসছে। সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা, পার্টি অফিসে তালা, জরিমানা আদায় সমানে চলছে। কোথাও কোথাও আবার তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোটের মধ্যেও সংঘর্ষ ঘটেছে। এমনটা চলতে থাকলে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে নতুন সরকারের। এই আশঙ্কা থেকেই দলীয় পর্যায়ে নির্বাচনোত্তর ঘটনাবলির তদন্ত শুরু করলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও তদন্ত-রিপোর্ট পাঠানো হবে বলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রণব বসু জানিয়েছেন। প্রণববাবুর বক্তব্য, “কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাচ্ছি। কেন তা হচ্ছে, তার রিপোর্ট সংগ্রহের কাজ চলছে। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ রয়েছে, সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে হবে। উন্নয়নে প্রশাসনকে সাহায্য করতে হবে। যিনি বা যাঁরা এই নির্দেশ অমান্য করে সন্ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করবেন, তাঁদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না। তিনি তৃণমূলের বড় নেতা হলেও তাঁর প্রতি কঠোর মনোভাবই নেবে দল।”
জেলায় সব থেকে বেশি অশান্তির ঘটনা ঘটছে কেশপুর ও গড়বেতায়। এই দুই এলাকা অবশ্য দীর্ঘ দিন ধরেই ‘স্পর্শকাতর’। দীর্ঘ দিন এই দুই এলাকায় কার্যত একদলীয় শাসন চালিয়েছে সিপিএম। গণতান্ত্রিক অধিকার নির্মম ভাবে দলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ছোট আঙারিয়ার ঘটনা ভুলে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কেশপুর ও গড়বেতার বিভিন্ন এলাকা থেকে সম্প্রতি কঙ্কাল ও হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনাও মানুষকে অতীত সন্ত্রাসের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এতে ক্ষোভের বিস্তার হওয়া অসম্ভব না-হলেও সাধারণ নেতা-কর্মীরা অশান্তি চাইছেন না বলেই তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের পর্যবেক্ষণ।
তা হলে অশান্তি ছড়াচ্ছে কারা? দলীয় সূত্রের খবর, গুটিকয় নেতা, তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার পরিবর্তনের পরে হঠাৎ নেতা হয়ে গিয়েছে, এমন লোকজনই সমস্যার মূলে। জরিমানা আদায়ের নামে নির্ভেজাল তোলা তুলে পকেট মোটা করাই তাদের লক্ষ্য। প্রণববাবু বলেন, “সিপিএম এ সব কাজ করত। এখন কিছু ক্ষেত্রে আমাদের দলের নাম করে কেউ কেউ এই ধরনের কাজ করছে বলে অভিযোগ আসছে। এ সব কিন্তু বরদাস্ত করা হবে না।”
কেশপুরে দলের তরফে তদন্তের দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক শিবু পানিগ্রাহির বক্তব্য, “মানুষ শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যেই আমাদের ভোট দিয়েছেন। এখন কিছু ক্ষেত্রে আমাদের দলের নাম করে কেউ কেউ জরিমানা আদায়ের চেষ্টা করছেন। আবার কেউ সিপিএমকে আড়াল করার জন্যও টাকার দাবি করছেন বলে অভিযোগ পাচ্ছি। সব খতিয়ে দেখে জেলা সভাপতিকে রিপোর্ট দেব। দলের কেউ অসামাজিক কাজে যুক্ত থাকবে, এটা বরদাস্ত করা হবে না। দল কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না।”
প্রায় প্রতি দিনই সিপিএম নেতার বাড়িতে হামলা, পার্টি অফিসে হামলা, এমনকী কেশপুর কলেজে ছাত্র পরিষদ-তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ থেকে একটা ব্যাপার স্পষ্টকেউ কেউ দলের ঊর্ধ্বে উঠে ক্ষমতা দেখাতে চাইছে। আর তাতেই বাধছে গোলমাল। এ দিকে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভাবে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। দলতন্ত্রের পরিবর্তে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা তৈরি করতে বলেছেন। জেলার প্রশাসনিক কর্তারা এই অবস্থায় নতুন শাসকদলের জেলাস্তরের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। নেতারা প্রশাসনিক কর্তাদেরও জানিয়ে দিয়েছেন, দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশই শেষ কথা।
দলের এক নেতার কথায়, “পুলিশ-প্রশাসনও নিশ্চয়ই অশান্তির কারণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রিপোর্ট দেবে। আমরাও দলীয় ভাবে তদন্ত করে জানাতে চাইছি। সব খতিয়ে দেখে নেত্রী নিজেই নিশ্চয়ই কড়া পদক্ষেপ করবেন। খারাপ কাজের জন্য দু’চার জনকে দল থেকে বাদ দিলেই বাকিরা ভয়ে সাবধান হয়ে যাবে। তা না করা পর্যন্ত টাকার লোভে কিছু মানুষ জরিমানা নেওয়া, চাঁদা তোলার কাজ চালিয়ে যাবে।” যত দ্রুত সম্ভব দলীয় ভাবে নেত্রীর কাছে বিশদ রিপোর্ট পেশ করার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
সাংবাদিক স্মরণে। মুম্বইয়ের সাংবাদিক হত্যার নিন্দায় শোকসভা হল রেলশহর খড়্গপুরে। সোমবার বিকেলে শহরের ইন্দা মোড়ে এই সভার আয়োজন করেন খড়্গপুরের সাংবাদিকেরা। মোমাবাতি জ্বালিয়ে নিহত সাংবাদিককে শ্রদ্ধা জানানো হয়। গত শুক্রবার মুম্বইয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন সাংবাদিক জ্যোতির্ময় দে।
Previous Story Medinipur Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.