|
|
|
|
হারলেও উইম্বলডনের জন্য সোনালি রেখা লি-হেশের |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
পৌনে দু’ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে শেষ মিনিট কুড়িই যা একটু মন্থর ছিল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস! আর তাতেই শেষ সোনালি স্বপ্নের রঙিন বাস্তব হয়ে ওঠার যাবতীয় সুযোগ। লিয়েন্ডার পেজ-মহেশ ভূপতি আর ব্রায়ান ভাইয়েরা টাইব্রেকারে একটা করে সেট জিতে ১-১ অবস্থায় সুপার টাইব্রেকে লি-হেশ ৫-২ এগিয়ে গিয়েও টানা ৮টা পয়েন্ট হেরে কুইন্স ক্লাব গ্রাস কোর্ট ডাবলস ফাইনাল থেকে মুছে গেলেন। বিশ্বসেরা মার্কিন জুটি পেশাদার ট্যুরে ৭২তম খেতাব জিতে নিজেদের বিশ্বরেকর্ডকে আরও উন্নত করলেন। ৬-৭ (২-৭), ৭-৬ (৭-৪), ১০-৫। বোপান্না-কুরেশির ইন্দো-পাক এক্সপ্রেস আগের দিন জার্মানির হ্যাল থেকে ডাবলস খেতাব পেলেও লন্ডনে একটুর জন্য খেতাব ফস্কে গেল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের। |
|
লি- হেশের লড়াই। সোমবার কুইন্স ক্লাবে। -রয়টার্স |
কিন্তু লি-হেশের গর্বের হারের মধ্যে সোনালি রেখা থাকছে সাত দিন বাদেই শুরু ঐতিহ্যশালী উইম্বলডনের জন্য। প্রিয় ঘাসের কোর্টে কিংবদন্তি ভারতীয় জুটির অমোঘ রসায়ন এখনও অটুট। যা দিয়েই লি-হেশ সেমিফাইনালে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে দু’নম্বর জুটি ম্যাক্স মির্নি-ড্যানিয়েল নেস্টরকে হারানোর পর ফাইনালে অবিশ্বাস্য লড়াই দিলেন বিশ্বের এক নম্বর ডাবলস টিম বব ও মাইক ব্রায়ানের বিরুদ্ধেও। ন’বছর পরে চলতি মরসুমে পেশাদার সার্কিটে জুটি বাঁধার পরে যমজ ব্রায়ান ভাইদের বিরুদ্ধে লি-হেশের স্কোর লাইন ০-২ হলেও, মির্নি-নেস্টরের বিপক্ষে কিন্তু সেটা ৩-০! এক জন (মহেশ) ছ’দিন আগে ৩৭ বছরে পা দিয়েছেন। অন্য জন (লিয়েন্ডার) চার দিন পর ৩৮ হবেন। ডাবলস যতই অর্ধেক কোর্টের খেলা হোক। যতই কোর্টে প্লেয়ারদের বেশি দৌড়ঝাঁপ করতে না হোক। নেটের সামনে রিফ্লেক্স তো সিঙ্গলসের তুলনায় বেশি দরকার পড়ে। ম্যারাথন লড়াইয়ে ফিটনেস আর স্ট্যামিনা তো সিঙ্গলসের মতোই দরকার হয়। এই বয়সেও সেগুলো টুর্নামেন্টের পর টুর্নামেন্টে লি-হেশ যে ভাবে পরিবেশন করে চলেছেন তা রীতিমতো গবেষণার বিষয়! এ বছর চারটে টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেললেন। চেন্নাই ওপেন ও মিয়ামি মাস্টার্স চ্যাম্পিয়ন। অস্ট্রেলীয় ওপেন ও কুইন্স ক্লাব রানার্স। দু’যুগেরও আগের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন (১৯৯৯) লি-হেশের এটাই প্রথম কুইন্স ক্লাব ফাইনাল। হারলেও সেই উজ্জ্বল হারের মধ্যেই সাত দিন পরে লন্ডনেই একই সারফেসের গ্র্যান্ড স্লামে ভারতীয় টেনিসকে ফের গর্বিত করার আশা জাগিয়ে তুললেন লি-হেশ।
ডাবলস ফাইনাল শুরুর আগে কুইন্স ক্লাব সিঙ্গলস খেতাব পেলেন স্থানীয় ব্রিটিশ টেনিস সুপারস্টার অ্যান্ডি মারে। গতকাল তুমুল বৃষ্টির সময় দুই ফাইনালিস্ট কুইন্স ক্লাবের ইন্ডোরে টেবিল টেনিস খেলেন। টিটি বোর্ডে জো সঙ্গা ২-১ গেমে হারিয়েছিলেন মারেকে। কিন্তু এ দিন টেনিস কোর্টের আসল লড়াইয়ে অবশ্য মারে ২-১ সেটে সঙ্গাকে হারিয়ে ট্রফি পেলেন।
এ দিকে, ইন্দো-পাক এক্সপ্রেস হ্যাল ওপেন জেতার পর রোহন বোপান্না বলেছেন, “আইসাম আর আমি দু’জনেই ঘাসের কোর্টে খেলতে ভালবাসি। ঘাসের কোর্ট আমাদের প্রিয় সারফেস। সে কারণে এই টুর্নামেন্ট জেতাটা আমাদের কাছে আরও বেশি আনন্দের। এই সাফল্য উইম্বলডনে ভাল করার ব্যাপারে আরও আত্মবিশ্বাস দেবে আমাদের। ভারতীয় বোপান্নার ভাবনাকে সমর্থন করছেন পাকিস্তানি সঙ্গী আইসাম কুরেশি। বোপান্না-কুরেশি এটিপি ট্যুরে ন’টা ফাইনাল খেললেন। জীবনের তৃতীয় ডাবলস খেতাবের পর বোপান্না বলছেন, “ফাইনালে আমরা এক সেট এগিয়ে ছিলাম। আবার সুপার টাইব্রেকে ১-৫ পয়েন্টে পিছিয়েও পড়েছিলাম। সে দিক দিয়ে নিজেদের কিছুটা ভাগ্যবানই বলব যে, ও রকম কঠিন জায়গা থেকেও ট্রফি জিততে পেরেছি। অনেকটা রাশিয়ান রুলেটে বেঁচে যাওয়ার মতোই।” |
|
|
|
|
|