|
|
|
|
|
কুৎসিত হারের দিনে
হতাশ করল মনোজও দীপ দাশগুপ্ত |
|
মনোজ তিওয়ারিকে দিয়ে ওপেন করানোর সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল কি না তা নিয়ে তর্ক উঠতে পারে। যেটা নিয়ে কোনও তর্ক নেই তা হচ্ছে, সুরেশ রায়নার ভারত সিরিজ জিতে নেওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে উপহার তুলে দিল। সোমবার অ্যান্টিগায় ওরা যে রকম কুৎসিত ব্যাটিং করে ১০৩ রানে হারল, সেটা দেখে মাঝেমধ্যে গুলিয়ে যাচ্ছিল, টি-টোয়েন্টি হচ্ছে না পঞ্চাশ ওভারের ওয়ান ডে! ইউসুফ পাঠান আবার ব্যর্থ। সুরেশ রায়না অধিনায়ক হয়েও যে রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন শটে উইকেট দিয়ে গেল, বিস্ময়কর! ভারতীয়দের দেখে মনে হচ্ছিল, ওদের বোধ হয় সিরিজ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানদের জন্য খারাপ লাগছিল। তাই সান্ত্বনা হিসেবে এই ম্যাচটা উপহার দিল! |
|
সোমবার ভারতের সফলতম বোলার প্রবীণ কুমারের সঙ্গে রায়না। অ্যান্টিগায়। |
মনোজের কথায় ফেরা যাক। আমি মনে করি, মিডল অর্ডারে জায়গা না পেয়ে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকার চেয়ে ওপেনারের বরাত পেয়ে প্রথম একাদশে ঢোকাটা অনেক গ্রহণযোগ্য সওদা। একটা সময় দেশের হয়ে খেলতে নেমে আমাকেও ওপেন করতে হয়েছে। নিজের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এই সিদ্ধান্তগুলোয় আমাদের কোনও বক্তব্য থাকে না। আমাদের শুধু নিজেকে বোঝাতে হয়, মনে করো এটাই তোমার সোনার সুযোগ আর জানপ্রাণ দিয়ে সুযোগ কাজে লাগাও।
সে দিক দিয়ে অ্যান্টিগার মাঠে ১৭ বলে ২ মনোজকে নিয়ে তৈরি প্রত্যাশাকে সাময়িক ধাক্কা দিয়ে গেল। ঠিক তার আগের ওভারেই স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়ে ও বেঁচে গেল। আইপিএলে ওপেন করেছে মনোজ। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ওপেন করা আর পঞ্চাশ ওভারের ওয়ান ডে-তে করার মধ্যে তফাত আছে। তবু বলব, ঝটকা লাগলেও সব কিছু এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। ওপেনারের অনভ্যস্ত জায়গায় যখন ওকে নামানো হয়েছে, তখন আর একটা সুযোগ না দিলে ওর প্রতি অন্যায় হবে। কিন্তু সেটাই হতে যাচ্ছে মনোজের মরণ-বাঁচন ম্যাচ। |
|
উইকেট নিয়ে অমিত মিশ্রর উল্লাস। সোমবার অ্যান্টিগায়। |
আলোচনায় টিঁকে থাকতে গেলে ভাল কিছু করে দেখাতে হবে ওকে। কারণ ওর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে রোহিত শর্মা চলতি সিরিজে ভাল খেলে দিয়েছে। বদ্রিনাথ তেমন কিছু করতে পারেনি। এ দিনও (২৭ বলে ১২) ব্যর্থ হল। কিন্তু ও টেস্ট টিমে রয়েছে বলে আরও সুযোগ পাবে। মনোজের কিন্তু খুব বেশি হলে আর একটা সুযোগ পড়ে রয়েছে।
মনোজ নিয়মিত ওপেনার নয় বলে ওর সামনে এ দিন চ্যালেঞ্জটা অনেক কঠিন ছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এমন নির্মম, কঠিন জায়গা যে, কিছু করারও নেই। এই ওপেনারের দায়িত্বটাই বুক চিতিয়ে গ্রহণ করে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। মনোজকে আমার পরামর্শ হচ্ছে, ইতিবাচক ভাবে এটাকে একটা সুযোগ হিসেবে দেখো। এমনিতে এ দিন প্রথমার্ধে দারুণ ফিল্ডিং করেছে ও। তিনটে ভাল ক্যাচ নিয়েছে। সরাসরি থ্রোতে একটা দুর্দান্ত রান আউট করেছে। শরীরীভাষাটা দারুণ ছিল। কিন্তু ব্যাটে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার আসল কাজটাই পড়ে থাকল।
তবে মনোজকে দিয়ে ওপেন করানো নয়। আমি সবথেকে অবাক হয়েছি, টসে জিতে আজও ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত দেখে। এ তো সেই আগের ম্যাচগুলোরই অ্যাকশন রিপ্লে হয়ে গেল। তফাতের মধ্যে হচ্ছে, রান তাড়া করতে গিয়ে এ বার আমরা ম্যাচ হারলাম। আর রায়ানদের জন্য শিক্ষা হয়ে থাকল যে, ক্রিকেটে সেট প্যাটার্ন বলে কিছু হয় না। বুঝলাম না, সিরিজ জিতে যাওয়ার পরেও প্রথম ব্যাটিং করে ব্যাটসম্যানদের বড় রান করার একটা সুযোগ কেন দেওয়া হল না! |
|
কোহলির উইকেট নিয়ে মার্টিনের উচ্ছ্বাস। |
প্রথম ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেলে কারও ব্যাট থেকে সেঞ্চুরি দেখার সম্ভাবনাও অনেক বেশি থাকত।
কায়রন পোলার্ড অবশেষে রান পেল। এ বারের আইপিএলে তেমন কিছু করতে পারেনি পোলার্ড। চলতি সিরিজেও খারাপ ফর্ম চলছিল। অথচ ক্রিস গেইল না থাকায় ও-ই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সবথেকে আলোচিত ক্রিকেটার। এ দিন ৭২ বলে ৭০ (৬টা চার, ২টো ছয়) করে সুনাম কিছুটা পুনরুদ্ধার করল পোলার্ড।
|
ওয়েস্ট ইন্ডিজ
|
সিমন্স রান আউট ৬৭
হায়াত ক মনোজ বো ইশান্ত ১
সারওয়ান ক মনোজ বো প্রবীণ ১
ড্যারেন ব্রাভো ক মনোজ বো অমিত ১৫
স্যামুয়েলস এলবিডব্লিউ অমিত ৮
পোলার্ড ক ইশান্ত বো অশ্বিন ৭০
বাও ক কোহলি বো প্রবীণ ৩৯
রাসেল ক কোহলি বো প্রবীণ ২৫
স্যামি ন.আ. ১
রোচ ন.আ. ৪
অতিরিক্ত ১৮
মোট (৫০ ওভারে) ২৪৯-৮।
পতন: ৩, ১২, ৬৫, ৮৯, ১০৩, ১৯৯, ২৪০, ২৪০।
বোলিং: প্রবীণ ১০-৩-৩৭-৩, ইশান্ত ১০-০-৬০-১, অশ্বিন ১০-১-৩৯-১,
অমিত ১০-৩-৫৬-২, ইউসুফ ৬-০-২৪-০, মনোজ ৪-০-২৬-০।
|
ভারত
|
পার্থিব ক ও বো স্যামি ২৬
মনোজ ক বাও বো স্যামি ২
কোহলি স্টা. বাও বো মার্টিন ২২
বদ্রিনাথ ক বাও বো রাসেল ১২
রোহিত ক ব্রাভো বো মার্টিন ৩৯
রায়না ক পোলার্ড বো মার্টিন ১০
ইউসুফ ক রোচ বো সিমন্স ১
অশ্বিন ক স্যামুয়েলস বো রাসেল ১৫
প্রবীণ ক স্যামি বো রাসেল ৬
অমিত ন.আ. ৫
ইশান্ত স্টা. বাও বো মার্টিন ০
অতিরিক্ত ৮
মোট ১৪৬ অল আউট (৩৯ ওভারে)।
পতন: ২০, ৪১, ৬২, ৮২, ১১১, ১১৪, ১২৪, ১৩৮, ১৪৫।
বোলিং: রোচ ৮-১-২২-০, স্যামি ৯-০-৪৩-২, রাসেল ৭-০-১৬-৩,
পোলার্ড ৪-০-২০-০, মার্টিন ১০-০-৩৬-৪, সিমন্স ১-০-৩-১। |
|
|
ছবি এপি |
|
|
|
|
|