ক্যামেরায় বন্দি হচ্ছে বাঘ, আশার আলো পলামুতে
চার বছর ধরে টালবাহানার পরে ক্যামেরা-ফাঁদ চালু হতেই ছবিতে বাঘ-বন্দি হল পলামুতে। ঝাড়খণ্ডে রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতায় বাঘ বাঁচানোর প্রকল্পে কার্যত অচলাবস্থা সৃষ্টি হলেও প্রযুক্তির প্রয়োগ সামান্য আশার আলো দেখাচ্ছে। তবে ক্যামেরার সংখ্যা এখনও নেহাতই কম বলে মনে করেন বন দফতরের কর্তা ও বিশেষজ্ঞেরা। গত ৬ জুন, পলামু ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীদের তালিম দিয়ে ক্যামেরা বসানো ও তার ব্যবহার শেখানোর কাজ সারা হয়েছে।
জাতীয় ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ বা ন্যাশনাল টাইগার কনজার্ভেশন অথরিটির ‘ইভ্যালুয়েশন টিম’-এর সদস্য দয়াশঙ্কর শ্রীবাস্তব গত বছর পলামু, সুন্দরবন ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল-সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাঘ সুমারির কাজে যুক্ত ছিলেন। তাঁর তত্ত্বাবধানেই পলামুতে ক্যামেরা-ফাঁদ ব্যবহারের তালিম দেওয়া হয়েছে। শ্রীবাস্তব বলেন, “কেন্দ্র বাঘ-সংরক্ষণ ও বাঘ গোনার কাজে টাকা দিলেও সরকারের গা-ছাড়া হাবভাবে তা পড়ে থাকাটাই দস্তুর। গত বছর বেশির ভাগ সময় ঝাড়খণ্ডে সরকার ছিল না। এর ফলেও ভুগতে হয়েছে। ২০১০-১১ সালের আর্থিক বছর শেষ হওয়ার এক দিন আগে টাকা মেলে। তা দিয়ে স্রেফ কিছু বকেয়া পাওনা মেটানো গিয়েছে। অর্থের বেশির ভাগটাই ফের সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হয়েছে। গত বার পলামুর বাঘ-গণনার কাজ আগের থেকে খুঁটিয়ে ও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে করা হলেও টাকার অভাবে শতকরা ৩০ ভাগ জায়গায় যাওয়া যায়নি। ক্যামেরা-ফাঁদের উপস্থিতি এ সব খামতি অনেকটা পুষিয়ে দেবে।”
বন্যেরা বনে সুন্দর। পলামুতে ক্যামেরাবন্দি।
শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ড বন দফতরের আর্জিতে ২০০৮ থেকে দফায় দফায় পলামুর জন্য ৪৮টি ক্যামেরা দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু প্রকল্পের ‘ছন্নছাড়া’ দশায় তা এতদিন চালু করতে পারেনি রাজ্য। পলামু ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা সৈয়দ এহ্তেসাম হুসেন কাজমিও কর্মীর অভাবে প্রকল্পের কাজ চালানোয় সমস্যার কথা স্বীকার করেন। তাঁর কথায়, “জঙ্গলের প্রতি পাঁচ বর্গ কিলোমিটারে একটি ক্যামেরা থাকা উচিত। পলামুতে ১০২৬ বর্গ কিলোমিটারের প্রকল্পের জন্য ২০০টিরও বেশি ক্যামেরা থাকাটা আদর্শ।”
বন দফতর সূত্রের খবর, ক্যামেরা-ফাঁদে ধরা পড়া বাঘটিকে গত ৯ জুন বেতলার এক নম্বর কম্পার্টমেন্টে শিবনালার কাছে দেখা গিয়েছে। সকাল সাড়ে আটটা থেকে ঘণ্টাখানেকের ফুটেজে বাঘটি নানা ভঙ্গিমায় শুয়ে-বসে দৃশ্যমান। কাজমি বলেন, “বাঘের ছবিতে তার গায়ের কালো দাগের হেরফের জরিপ করে এক না একাধিক বাঘের ছবি উঠল, তা যাচাই করা সম্ভব।”
গত বাঘ সুমারির সরকারি হিসেবে পলামুতে ১০টি বাঘ রয়েছে। এদের মধ্যে তিনটি বাঘিনি। সম্প্রতি রাজ্য বন দফতরের ট্র্যাক সেনসাসে (জঙ্গলের একটি নির্দিষ্ট লাইন ধরে হেঁটে দু’ধারের পশু-পাখির হিসেব-নিকেশ) ১১টি বাঘের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। ক্যামেরায় এই নজরদারি উন্নততর হবে বলে আশা বন দফতরের কর্তাদের।
বছর পাঁচেক আগে কর্নাটক ও কেরলে ক্যামেরা-ফাঁদ চালুর পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তা ছড়িয়েছে। বছরখানেক আগে সুন্দরবনে এই ফাঁদ চালুর পরেও সেখানে বাঘ ও অন্য জীবজন্তুর বৈচিত্র্য নিয়ে চিত্তাকর্ষক তথ্য মিলেছে। শ্রীবাস্তব বলেন, “উষ্ণ রক্তের কোনও প্রাণী সামনে দিয়ে গেলেই ক্যামেরা তার ছবি তুলে ফেলবে। পলামুতে আপাতত নিচুতে রাখা ক্যামেরাগুলি। তাতে সজারু, বেজির মতো খুব ছোট জন্তুও ধরা পড়বে। কিন্তু নিচুতে বসানোর জন্য চোরাশিকারিদের পুরো ছবি সহজে আসবে না।
First Page Jibjagat Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.