রাজনৈতিক সংঘর্ষে জখম ৬ খণ্ডঘোষে
‘আক্রান্ত’ কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে ইস্তফা দিলেন সিপিএম সভাপতি
সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে অশান্তি ছড়াল খণ্ডঘোষে। রবিবার রাতে খন্ডঘোষের কেঁউদিয়া লতিফপুরে এই ঘটনায় জখম হন ৬ জন। পুলিশ তিন সিপিএম সমর্থককে গ্রেফতার করেছে। সিপিএমের অবশ্য দাবি, বেশ কিছু দিন ঘরছাড়া থাকা তাদের কয়েক জন সমর্থক রবিবার গ্রামে ফেরায় তৃণমূলের লোকজনই তাঁদের উপরে হামলা চালায়। এ দিকে, খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের অর্পণপ্রসাদ ঘোষ সোমবার পদত্যাগপত্র জমা দেন। সংগঠনের কাজে বেশি সময় দিতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংঘর্ষে জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি তৃণমূল নেতা শেখ মনসুর আলি এ দিন বলেন, “রবিবার রাতে গ্রামের ২০-২৫ জন সিপিএম কর্মী আমাকে ডাকতে আসে। বাড়ি থেকে বেরোতেই তারা আমাকে মারতে শুরু করে। আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।” তাঁর স্ত্রী নুরজাহান বিবির অভিযোগ, “আমার স্বামী গ্রামে পঞ্চায়েতের নানা প্রকল্পের কাজকর্মের হিসাব চাইছিলেন। এর জেরেই তাঁকে সিপিএমের লোকজন এমন করেছে।”
বর্ধমান মেডিক্যালে ভর্তি মনসুর আলি। নিজস্ব চিত্র।
সিপিএমের খণ্ডঘোষ জোনাল কমিটির সম্পাদক মহফুজ রহমানের অবশ্য অভিযোগ, “বিধানসভা ভোটের পর থেকে আমাদের ওই এলাকার শাখা সম্পাদক-সহ ২৮ জন গ্রামছাড়া ছিলেন। রবিবার রাতে তাঁরা ফিরে আসেন। রাতেই তৃণমূলের লোকেরা হামলা চালায়। আমাদের ৫ জন জখম হয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি।” তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। সিপিএম অবশ্য সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি।
অন্য দিকে, এ দিনই বর্ধমানের (দক্ষিণ) মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্পণপ্রসাদ ঘোষ। মহকুমাশাসক মৃণালকান্তি রানো বলেন, “ব্যক্তিগত কারণে এই সিদ্ধান্ত বলে তিনি জানিয়েছেন।” সহ-সভাপতি হীরেন রায় আপাতত তাঁর জায়গায় কাজ চালাবেন বলে জানানো হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে ব্যক্তিগত কারণের কথা জানালেও এ দিন অর্পণবাবু জানান, ভোটের ফল বেরোনোর পর থেকেই এলাকায় তৃণমূলের অত্যাচারের মুখে পড়ছেন তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা। তিনি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে দলীয় সমর্থকদের পাশে দাঁড়াতে ও সংগঠনের কাজে বেশি সময় দিতেই এমন সিদ্ধান্ত।
সিপিএমের খণ্ডঘোষ জোনাল কমিটির সম্পাদক মহফুজ রহমানও বলেন, “অর্পণবাবু শুধু পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নন, তিনি দলের খণ্ডঘোষ পশ্চিম লোকাল কমিটির সম্পাদকও। বোঁয়াই, নারায়ণপুর গ্রামে ২০০৮-এর পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই আমাদের কর্মীদের উপরে তৃণমূলের হামলা চলছে।” তাঁর দাবি, “প্রায় ৫৫ জন কর্মী গ্রামছাড়া। তাঁদের পাশে দাঁড়াতেই অর্পণবাবু প্রশাসনিক পদ ছেড়েছেন।”
সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, খণ্ডঘোষে তৃণমূলের লোকেরা তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। ফসল ঘরে তুলতে দিচ্ছে না। গ্রামের পর গ্রামে চলছে সিপিএমের সমর্থক কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর, লুঠ, অগ্নিসংযোগ। দলের বেশ কিছু দফতর জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ সব ব্যাপারে বারবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ বা স্মারকলিপি পেশ করা হলেও ফল হয়নি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি (গ্রামীণ) স্বপন দেবনাথ বলেন, “অভিযোগ কতটা সত্য, তা খতিয়ে দেখে প্রশাসনের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.