|
|
|
|
 |
জোড়া ঘোড়ায় বাজিমাত টলিউডের
ইন্দ্রনীল রায় ² কলকাতা |
|
সুখের দিন ফিরেছিল আগেই। এ বার বলিউডের সঙ্গে লড়াইয়েও এগিয়ে গেল টলিউড। সিনেমা হলগুলোর সামনে তুমুল ভিড়ে সেটাই দেখাল শহর ও শহরতলি। জিতের ‘শত্রু’ ও দেবের ‘পাগলু’। মুক্তির আগেই সমানে টক্কর চলছিল সলমন খানের ‘রেডি’র সঙ্গে। শুক্রবার সকাল থেকেই টিকিটের তুমুল চাহিদায় বাজিমাত জিৎ-দেব জুটির!
টালিগঞ্জের একটি সিনেমা হলের সামনে সকালে সলমনের নতুন ছবি দেখার চেনা ভিড়। নায়কের মতো গেঞ্জি পরে গাড়িবারান্দায় উদ্দাম নাচ কিশোর ফ্যানদের। টলিউডের দাপট চোখে পড়ল ভবানীপুরে ঢুকতেই। হলের সামনে লম্বা লাইন। টিকিটের চাহিদা এমন যে সকাল দশটাতেই কালোবাজারি তুঙ্গে! ‘পাগলু’ ও ‘শত্রু’র টিকিটের দাম ছুঁয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। সিনেমা শুরু হতে তখনও চার ঘণ্টা বাকি। “দেবের ছবি প্রথম দিনের প্রথম শো দেখতে ২০০ টাকা কোনও ব্যাপার নয়!” সাফ বললেন সত্যজিৎ গুহ। সোনারপুর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে এসেছেন ‘পাগলু’ দেখতে। পিছিয়ে নেই জিৎ-ভক্তরাও। যেমন, অশোক তরফদার। আমতলায় ছোট মুদিখানা চালান। ভোর ৪টেয় উঠে জিতের সাফল্যের জন্য পাড়ার মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন। “আজ দোকান বন্ধ রেখেছি। জিৎ আমার হিরো। প্রথম দিনের প্রথম শো দেখতেই হবে,” বললেন অশোকবাবু। |
|
দুই নায়কের ছবি নিয়ে মাতোয়ারা ভক্তেরা। শুক্রবার, শহরের দুই প্রেক্ষাগৃহে। সুদীপ আচার্য |
উচ্ছ্বসিত প্রযোজকেরাও। “বাংলা ছবি জিতছে। পাগলুর প্রথম শো-এ সলমন খানের ছবির থেকেও বেশি সাড়া মিলেছে। শুধু কলকাতা নয়। রানাঘাট, কদমতলা থেকেও ফোন পাচ্ছি। কোথাও কোথাও গেটের বাইরে কয়েক হাজার দর্শক অপেক্ষায়। এমন সাড়া দেবের ছবি আগে কখনও পায়নি,” বললেন ‘পাগলু’র প্রযোজক ‘সুরিন্দর ফিল্মস’-এর অন্যতম কর্তা নিশপাল রানে।
প্রায়ই একই বক্তব্য ‘শত্রু’র প্রযোজক অশোক ধানুকারও। বললেন, “পুলিশের ভূমিকায় জিতের অভিনয়ে দর্শকরা যে ভাবে সাড়া দিয়েছেন, আমি খুশি। মনে হয় আগামিদিনেও এই আকর্ষণ থাকবে।” অশোকবাবুর কথার সমর্থন মিলল টলিউড-মহলেও। ছুটির দিন ছাড়াও মঙ্গলবার জামাইষষ্ঠী। পরিবারের সবাই মিলে সিনেমা দেখার দিন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক হল মালিক বললেন, “দুটো ছবিরই শুরু খুব ভাল হল। সোম-মঙ্গলবার চাহিদা বাড়বে। এমন চললে প্রথম ছ’দিনেই পয়সা উঠে আসবে।”
খুশি দুই নায়কও। আবেগের জোয়ারে অবশ্য ভাসেননি কেউই। “সকাল থেকেই প্রশংসার ফোন আসছে। কিন্তু এখনও ভয় করছে। এ ভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য ফ্যানদের ধন্যবাদ। আশা করি পাগলু আমার কেরিয়ারের অন্যতম হিট হবে,” বললেন দেব। আর জিতের কথায়, “আমি অভিভূত। দশ বছর ফ্যানরা আমার সঙ্গে। তাঁদের ধন্যবাদ।”
এর মধ্যেই অবশ্য সমানে সমানে টক্কর দিয়েছেন দেব আর জিৎ। দক্ষিণের এক হলে ‘পাগলু’র বিশাল হোর্ডিংয়ের সামনে দিয়ে তুমুল হইচই করে মিছিল করে গিয়েছেন ‘শত্রু’র জিৎ-বেশী ফ্যানেরা। তবে বলিউডের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রথম দিনের শেষে অন্তত বাজি মেরে দিল টলিউডই। আসল ছবিটা কী দাঁড়ায়, তা অবশ্য সময়ই বলবে!
হলে ভাঙচুর। প্রথম শো-এই গণ্ডগোল। শুক্রবার দুপুরে বরাহনগরের একটি হলে ‘পাগলু’র শো শুরুর আধ ঘণ্টার মধ্যেই হঠাৎ আওয়াজ বন্ধ। দর্শকদের হইহল্লায় শব্দ ফিরলেও একটি গানের দৃশ্যে ফের নির্বাক। উত্তেজিত দর্শকেরা ভাঙচুর করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি সামলায়। হল-কর্তৃপক্ষ জানান, যান্ত্রিক গোলযোগেই এই বিভ্রাট। ব্যারাকপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুবজ্যোতি দে জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
|
|
 |
|
|