খবর এক মুঠো
২২ কোটি টাকায় বিক্রি হল জাহাঙ্গির সবাভালার আঁকা একটি ছবি। ‘ভেস্পার্স ১’ (সান্ধ্যসঙ্গীত ১) নামের এই ছবিটি সম্প্রতি নিলামে তুলেছিল ব্রিটিশ নিলাম সংস্থা বনহ্যাম্স। শিল্পানুরাগী ও শিল্প সংগ্রাহকদের প্রত্যাশা ছিল, এক থেকে দেড় লক্ষ পাউন্ডে বিকোবে ছবিটি। সেই সব অনুমানকে পিছনে ফেলে সবাভালার ছবিটি বিক্রি হয়েছে দু’লক্ষ ৫৩ হাজার পাউন্ড, অর্থাৎ, ২১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকায়। বিদেশি নিলাম সংস্থার মাধ্যমে ভারতীয় শিল্পীদের আঁকা ছবি এর আগেও বহু মূল্যে বিক্রি হয়েছে। যেমন মকবুল ফিদা হুসেন, তায়েব মেটা বা এস এইচ রাজার ছবি। হুসেনের বেশ কিছু ছবি ২০ কোটি টাকা বা তার বেশি দামে কিনেছেন আন্তর্জাতিক শিল্প সংগ্রাহকরা। বনহ্যাম্স-এ এর আগে কোনও ভারতীয় শিল্পীর আঁকা ছবি এত দামে বিক্রি হয়নি। সবাভালার ছবিতে বার বার ফিরে আসে ধর্মীয় অনুষঙ্গ। প্রার্থনারত মানুষ, সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনীরা তাঁর অন্যতম প্রিয় বিষয়বস্তু। ‘ভেস্পার্স ১’-ও সে রকম একটি ছবি।

মেষপালকের বেশে বসে রয়েছে টিনটিন। পাশে তার পোষ্য স্নোয়ি। পিছনে দূরে দেখা যাচ্ছে এক দল আমেরিকান-ইন্ডিয়ান, হাতে কুঠার। সন্তর্পণে তারা টিনটিনের দিকে এগোচ্ছে। যদিও টিনটিনের অজান্তে। এটি টিনটিন সিরিজের নতুন সিনেমার দৃশ্য নয়। ১৯৩২ সালে আঁকা ‘টিনটিন ইন আমেরিকা’ বইয়ের প্রচ্ছদ। প্যারিসে আয়োজিত একটি নিলামে প্রায় ১৩ লক্ষ ইউরোয় (১৬ লক্ষ মার্কিন ডলারে) বিক্রি হয়েছে ছবিটি। যা রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এর আগে ২০০৮ সালে টিনটিনেরই অন্য একটি বইয়ের প্রচ্ছদ বিক্রি হয়েছিল ৭ লক্ষ ৬৪ হাজার ইউরোয়। সেটাও ছিল রেকর্ড। এর মধ্যে টিনটিনকে নিয়ে একটি ছবিও বানিয়ে ফেলেছেন স্টিভেন স্পিলবার্গ। সেই ছবিও দারুণ জনপ্রিয় হয়। এ বার ফের জনপ্রিয়তার নিরিখে নতুন নজির গড়ে নিজের রেকর্ডই ভাঙল টিনটিন। টিনটিনের লেখক তাঁর হার্জ ছদ্মনামেই বেশি পরিচিত। বেলজিয়ান এই লেখক এবং শিল্পীকে তাঁর আসল নাম জর্জেস রেমি বলে কম লোকই চেনে।

এক নয়, দুই নয় নিজের পাঁচটি শাবকের পাশাপাশি মা হারা ১০টি অনাথ শাবককে নিজের দুধ খাইয়ে বড় করে তুলে শ্রেষ্ঠ মায়ের সম্মান লাভ করল জলদাপাড়ার কুনকি হাতি চম্পাকলি। বিশ্ব মাতৃ দিবসে চম্পাকলিকে সাজিয়ে দিনটি পালন করল বন দফতর। বন দফতর সূত্রে খবর, আটের দশকে শোনপুর মেলা থেকে হাতিটি কিনে আনে বন দফতর। জঙ্গল পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি চম্পাকলির প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায় দলছুট মাতৃহারা হস্তি শাবকদের নিজের দুধ খাইয়ে বাঁচিয়ে তোলা। কোচবিহারের ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “নিজের শাবকদের পাশাপাশি অন্যের এতগুলি শাবককে দুধ খাইয়ে বড় করে তোলার নজির একমাত্র দেখাতে পেরেছে এই কুনকি হাতিই।”

লোকালয়ে ঢুকে পড়া উন্মত্ত দাঁতাল কিংবা ‘রোগী’ ঘোষণা করা বুনো হাতি ধরে পোষ মানানোর কথা ভাবছে বন দফতর। আর তাদের বশে আনতে উত্তরবঙ্গে একটি ‘রেসকিউ সেন্টার’ তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) সীতাংশুবিকাশ মণ্ডল বলেন, “রেসকিউ সেন্টার তৈরির অনুমতি চেয়ে ‘সেন্ট্রাল জু অথরিটি’র কাছে আবেদন করা হয়েছে। সে আবেদন যদি মঞ্জুর হয় তবেই দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে একটি করে রেসকিউ সেন্টার হবে।” বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে একশো হেক্টর এলাকায় ওই রেসকিউ সেন্টার তৈরি হবে। সেখানে চার দিকে পরিখা ও বৈদ্যুতিক তারের বেড়া দিয়ে হাতি রাখা হবে।

বাঘ সংরক্ষণে সরকারের সব রকম চেষ্টা সত্ত্বেও গত চার মাসে দেশে ৩২টি বাঘ মারা গিয়েছে। মাত্র চার মাসের ব্যবধানে এতগুলি বাঘ মারা যাওয়ার ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন বন ও পরিবেশমন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজন। গ্লোবাল টাইগার রিকভারি প্রোগ্রাম (জিটিআরপি)-এর প্রথম বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন পরিবেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, “এই ৩২টি বাঘের মধ্যে ১৮টির স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যু হয়েছে।” মন্ত্রী জানান, ২০১২-র মে মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১৪টি বাঘ মেরেছে চোরাশিকারিরা। তিনি আরও বলেন, “চোরাশিকার অবশ্যই অন্যতম কারণ। এ ছাড়া খাদ্য, বাসস্থানের মতো বিষয়গুলি নিয়ে মানুষ-প্রাণী সংঘাতও একটা কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এতগুলি বাঘ কী ভাবে মারা গেল, আরও গভীরে গিয়ে তার কারণ খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে।” এরই পাশাপাশি, নটরাজন জানান, গত কয়েক বছরে দেশে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। ২০০৬-এর হিসেব অনুযায়ী দেশে বাঘের সংখ্যা ছিল ১৪১১। বর্তমানে এই সংখ্যা ১৭০৬।

উত্তর-পূর্বে ব্যাঘ্র সংরক্ষণের ব্যয়ভারের প্রায় পুরোটাই নিজেদের হাতে তুলে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। অসমের রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় ‘ব্যাঘ্র প্রকল্প’ গুলির ব্যয়ভারের ৫০ শতাংশ এত দিন রাজ্য সরকারকে বহন করতে হত। সম্প্রতি, প্রধানমন্ত্রীর অসম সফরের সময় মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ যে দাবিপত্র পেশ করেন, সেখানে ব্যাঘ্র প্রকল্পে রাজ্যের দায়ভার হ্রাস করার প্রস্তাব ছিল। উত্তর-পূর্বে ব্যাঘ্র সংরক্ষণের বিকাশে উৎসাহিত হয়ে রাজ্যের আবেদনে সম্মত হয় কেন্দ্রও। কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন, এখন থেকে ব্যাঘ্র প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ব্যয়ভারই কেন্দ্র বহন করবে। কেবল অসম নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত এই সুবিধা পেতে চলেছে।

সম্প্রতি অরণ্য সুরক্ষায় দেশের মধ্যে সেরা হয়েছে কাজিরাঙা। তবু এখানকার অরণ্য ও পরিবেশের উপরে নিয়ত নানা আঘাত আসছে। বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রে এই জাতীয় উদ্যানকে ঘিরেই অসমে প্রথম বার সবুজ ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হল। এই দৌড়ের মূল উদ্দেশ্য জনসাধারণকে এ কথা বোঝানো যে, অরণ্য ধ্বংস হলে শুধু বনের প্রাণী নয়, বিপদ মানুষেরও। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে রাজ্যের বনমন্ত্রী, প্রধান মুখ্য বনপাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন অংশের প্রকৃতি প্রেমিকরা একজোট হন কাজিরাঙায়। মোট ১৭৯ জন প্রকৃতিপ্রেমী, পরিবেশ রক্ষার বার্তা হাতে কাজিরাঙার বুক চিরে ২২ কিলোমিটার দৌড়লেন। রাজ্য বন দফতরের পাশাপাশি, প্রথম, সবুজ ম্যারাথনের উদ্যোগে হাত মিলিয়েছিল আরণ্যক, ডব্লিউডব্লিউএফ, ওয়াইল্ড ইস্ট, নুমালিগড় শোধনাগার, বোকাখাত প্রেস ক্লাবসহ বেশ কিছু সরকারি ও অসরকারি সংগঠন। দৌড় শেষ হয় কোহরায়।

বৈশাখের নাম মধুসূদন। জ্যৈষ্ঠের নাম ত্রিবিক্রম। এই দুই মাস ধরে নবদ্বীপের বৈষ্ণব মঠ-মন্দিরে নিত্যসেবার ধারাটাই যায় বদলে। রাধা-কৃষ্ণকে ঘিরে যে উৎসব পরিক্রমা চলে সারা বছর ধরে, তারই নতুন রূপ মেলে এই দুই মাসে। দেবতাকে আপনজন, ঘরের লোক হিসেবে দেখাটাই ভক্তিরসের একটি লক্ষণ বলে মনে করেন গবেষকেরা। পালিত হয় রাস বা দোলের মতো এমন উৎসব, যা মহাকাব্যের নায়ক কৃষ্ণের ব্যক্তিগত জীবনের কোনও না কোনও ঘটনার উদযাপন। তাঁর রথযাত্রা, নৌকাবিলাস ও চন্দনযাত্রাও তাঁকে বড় আদরের আপনজন বলে ভেবে নেওয়ার নানা দিক। তাই তাঁকে ঘিরে যে পুণ্যচর্চা করা হয়, তাতে প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিগ্রহকে এমন ভাবে রাখার আগ্রহও তৈরি হয়, যা এই ভূপ্রকৃতির মধ্যে যাঁদের বাস, তাঁদের পক্ষে প্রয়োজনীয় বা স্বাভাবিক। তাই প্রথমেই যা নজরে পড়ে, তা হল ভোগের পরিবর্তন। গুরুপাক পঞ্চব্যাঞ্জনের বদলে সাধারণত ক্ষীর, মালপোয়া, পরমান্নের জায়গা নেয় শুক্তো, মরসুমী ফল, নানা রকমের শরবত, ঘোল, দই। তার পরে, যত বড় মন্দির তার বিগ্রহের পোশাকের জৌলুসও তত বেশি। ভেলভেট, মখমল, জরি-চুমকির পোশাক কিন্তু এখন রীতি নয়। তার বদলে বিগ্রহকে পরানো হয় আদ্দির পোশাক। তাঁর শোওয়ার জায়গায় পাতা হয় শীতলপাটি। বিগ্রহের গায়ে পুরু করে দেওয়া হয় চন্দনের প্রলেপ। গ্রীষ্মের দ্বিপ্রহরে একটি বড় পাত্রে সুগন্ধী মেশানো জলের মধ্যে রাখা হয় বিগ্রহকে। ব্যতিক্রমী এই সেবার পোশাকী নাম ‘জলকেলি’। সারা বৈশাখ ধরেই চলে নানা রকমের উৎসব। বিষ্ণুপ্রিয়া ও মহাপ্রভুর বিবাহের তিথিতে গোটা মন্দির ফুলে ফুলে সাজানো হয়। সেই দিন মহাপ্রভুকে পরানো হয় গরদের জোড়। রাতে দেবতাকে দেওয়া হয় ‘পখাল’। সাদা ধবধবে চালের অন্ন পাক করে সারা দিন সুগন্ধী জলে ভিজিয়ে রাখা হয়। সন্ধ্যায় তার সঙ্গে মেশানো হয় সাদা দই, আদা-কাঁচা লঙ্কা, জিরে গুঁড়ো, গোলমরিচ। সঙ্গে থাকে গন্ধরাজ লেবু।

আমেরিকার টেনেসি প্রদেশের মেমফিসে পৃথিবীখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী এলভিস প্রেসলির সমাধিগৃহের নিলাম হবে। টেনেসি-র এই ছোট শহরেই প্রথম এলভিসকে সমাধিস্থ করা হয়। আশা করা হচ্ছে, নিলামে সমাধিগৃহের দর উঠবে ১ লাখ ডলারের মতো। হলিউডে ২৩ ও ২৪ জুনের এই নিলামে এলভিস ছাড়াও রক গ্রুপ ‘রোলিং স্টোন’-এর কিংবদন্তীসম গিটারবাদক কিথ রিচার্ডস ও সদ্য প্রয়াত গায়িকা অ্যামি ওয়াইনহাউসের পোশাকও নিলাম হবে। যদিও সকলের নজর থাকবে এলভিস প্রেসলির সমাধিগৃহের দিকে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ১৯৭৭ সালে গ্রেসল্যান্ডের বাড়িতে তাঁর শেষকৃত্যের পর প্রেসলিকে অস্থায়ী ভাবে সমাধি দেওয়া হয় মেমফিসের ফরেস্ট হিল সমাধিস্থলে। সে সময় গ্রেসল্যান্ড থেকে ফরেস্ট হিলে প্রেসলির শবযাত্রায় পা মিলিয়ে ছিলেন তাঁর প্রায় ৮০ হাজার ভক্ত। দু’মাস পর প্রেসলি ও তাঁর মা-র দেহ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রেসল্যান্ডের স্থায়ী ঠিকানা মেডিটেশন গ্রাউন্ডে।