সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত রেজ্জাক
নিজস্ব সংবাদদাতা |
দলবিরোধী কার্যকলাপ এবং দলের ভাবমূর্তিকে জনসমক্ষে হেয় করার অভিযোগে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাকে বহিষ্কার করল সিপিএম। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী বুধবার সন্ধ্যায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বেশ কিছু দিন ধরেই রেজ্জাকের সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়ছিল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনের বিরুদ্ধে একাধিক বার বিষোদ্গার করেছেন রেজ্জাক। প্রকাশ্যে সরব হয়েছেন দলের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। এই টানাপোড়েন আরও চরমে ওঠে দু’দিন আগে একটি ইংরেজি দৈনিকে রেজ্জাকের সাক্ষাত্কার ঘিরে। সেই সাক্ষাত্কারে দলের পলিটব্যুরো সদস্যদের ‘দালাল’ আখ্যা দিয়েছেন প্রবীণ এই বিধায়ক। সেখানে পলিটব্যুরো সদস্যদের চরিত্রহননের চেষ্টাও হয়েছে বলে সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ। এই প্রেক্ষিতেই এ দিনের বৈঠকে রেজ্জাককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আর এক ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা লক্ষ্মণ শেঠের ব্যাপারে অবশ্য এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি আলিমুদ্দিন। লক্ষ্মণ-অনুগামীদের হাতে রাজ্য সিপিএমের নেতাদের হেনস্থার ঘটনার তদন্তের কাজ শেষ করার জন্য পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা নেতৃত্বকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে কোনও চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে চাইছে না সিপিএম।
|
সাবমেরিনে আগুন, দায় নিয়ে ইস্তফা নৌ প্রধান ডি কে জোশীর
সংবাদ সংস্থা |
ফের বিস্ফোরণ নৌসেনাবাহিনীর ডুবোজাহাজে। বুধবার সকালে ভারতীয় নৌবাহিনীর ডুবোজাহাজ আইএনএস সিন্ধুরত্নে আগুন লেগে যায়। ঘটনার জেরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন নৌসেনার সাত জন অফিসার। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না আরও দুই অফিসারের। ঘটনার দায় স্বীকার করে এ দিন ইস্তফা দিয়েছেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল ডি কে জোশী। তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রক এ কে অ্যান্টনি। নতুন নৌসেনা প্রধান নিযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত পদের দায়িত্ব সামলাবেন ভাইস অ্যাডমিরাল আর কে ধবন। গত বছর অগস্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের জেরে মুম্বই বন্দরের অদূরে সমুদ্রে তলিয়ে যায় নৌবাহিনীর ডুবোজাহাজ আইএনএস সিন্ধুরক্ষক। দুর্ঘটনার জেরে মৃত্যু হয়েছিল নৌবাহিনীর ১৮ জন অফিসারের। |
ইস্তফা দিচ্ছেন নৌপ্রধান ডি কে জোশী। ছবি: পিটিআই। |
নৌবাহিনী সূত্রে খবর, এ দিন সকালে মুম্বই উপকূলের দিকে আসার সময় আইএনএস সিন্ধুরত্নে ছোটখাটো বিস্ফোরণ হয়। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় সাবমেরিনটিতে ৭০ জন অফিসার ছিলেন। ধোঁয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন সাত জন অফিসার। তাঁদের হেলিকপ্টারে নৌ সেনার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নৌবিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়েছে সাবমেরিনটি মুম্বই উপকূলের কাছে সমুদ্রে মহড়া দিচ্ছিল। তাই জাহাজে কোনও রকম বিস্ফোরক বা অস্ত্র মজুত করা ছিল না। এই দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক।
|
২১ জুলাই গুলি এড়াতে পারেনি পুলিশ, কমিশনে বুদ্ধ
নিজস্ব সংবাদদাতা |
ঘটনার পরে তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু যা বলেছিলেন, ২১ জুলাই কমিশনের মুখোমুখি হয়ে সেই কথাই বললেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কমিশনে সাক্ষ্য দিতে এসে বুধবার তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের ‘মহাকরণ অভিযান’-এ গুলি চালানো এড়াতে পারেনি পুলিশ। যে কোনও মৃত্যুই দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেও বুদ্ধবাবুর দাবি, সেই দিন মহাকরণ অভিযানকে কেন্দ্র করে বড় আকারের হিংসা ছড়িয়েছিল কলকাতায়। যে পরিস্থিতির মোকাবিলায় গুলিচালনা এড়াতে পারেনি পুলিশ।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন কমিশনের কাঠগড়ায় বুদ্ধবাবু এ দিন বলেছেন, “আন্দোলন মানেই গণতান্ত্রিক নয়। আবার পুলিশের পদক্ষেপ মানেই অন্যায় নয়। কোন পরিস্থিতিতে পুলিশ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা-ও বিচার করতে হবে। সদর্থক আন্দোলন এক জিনিস। সে দিনের পরিস্থিতিতে পুলিশ বাধ্য হয়েছিল ওই ধরনের পদক্ষেপ করতে।” পরিস্থিতি অনুযায়ী পুলিশের ভূমিকা যাচাই করার বিষয়টি স্পষ্ট করে বোঝাতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের উদাহরণও ব্যবহার করেছেন বুদ্ধবাবু। বলেছেন, “১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ড আক্রমণ করেছিলেন হিটলার। আবার ১৯৪৫ সালে বার্লিন আক্রমণ করেছিল ইঙ্গ-মার্কিন-রুশ বাহিনী। দু’টোই আক্রমণ। কিন্তু একটা অন্যায়, আর একটা ন্যায্য!” নীতিগত ভাবেই বামফ্রন্ট সরকার ঘটনার পরে বিচারবিভাগীয় তদন্তের কথা ভাবেনি এবং এখনও তিনি তা-ই মনে করেছেন, সে কথাও জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। |
কমিশনের কাছে সাক্ষ্য দিয়ে বেরোচ্ছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ছবি: সুদীপ আচার্য। |
কমিশনের চেয়ারম্যান এ দিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, সে দিনের ঘটনার প্রশাসনিক রিপোর্ট, ঘটনাস্থলে মোতায়েন পুলিশ অফিসারদের রিপোর্ট বা হাসপাতালে জখম পুলিশকর্মীদের চিকিত্সার কাগজ কোনও নথিই এখন পাওয়া যাচ্ছে না। এই ঘটনাকেও দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করে বুদ্ধবাবু দাবি করেছেন, নথিপত্র কেন পাওয়া যাচ্ছে না, তা নিয়েও আলাদা তদন্ত হওয়া উচিত। ঘটনার সময় বুদ্ধবাবু ছিলেন বাম সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী। পুলিশ কমিশনার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, সেটাই পৌঁছেছিল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী হিসাবে বুদ্ধবাবু যে হেতু তখন মহাকরণে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্বে ছিলেন, তাই মুখ্যমন্ত্রী ওই রিপোর্টের প্রতিলিপি তাঁকেও দেখিয়েছিলেন। মহাকরণের কর্মী-আধিকারিক ও সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেও ঘটনার দিন কিছু খবর পেয়েছিলেন। এর বাইরে তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল না বলে দাবি করেন বুদ্ধবাবু। কিন্তু কমিশনের তরফে তাঁকে জানানো হয়, রাজ্যের এক মন্ত্রী (মদন মিত্র) সাক্ষ্য দিতে এসে বলেছেন ঘটনার দিন পুলিশ বারে বারে বুদ্ধবাবুকেই রিপোর্ট দিচ্ছিলেন। বুদ্ধবাবুর মন্তব্য, “আমার অনুরোধ, নির্বোধ, অর্বাচীনের দাবিকে কমিশনের প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়!” যার প্রেক্ষিতে পরিবহণমন্ত্রী মদনবাবু কটাক্ষ করেছেন, “কমিশনে ওই কথা বলে এলেন। আলিমুদ্দিনে ফিরে কয়েক ঘণ্টা পরেই হয়তো বলবেন, আমি ওই কথা বলিনি। আমার ভুল হয়েছে!” |
অধিনায়ক কোহলির কাঁধে ভর করে মসৃণ জয় ভারতের
নিজস্ব প্রতিবেদন |
এশিয়া কাপের প্রথম খেলায় বংলাদেশের বিরুদ্ধে জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করল ভারত। সৌজন্যে অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বুধবার ফাতুল্লার মাঠে প্রথম ইনিংস যদি হয় বাংলাদেশের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ‘ওয়ান ম্যান শো’। তবে দ্বিতীয় ইনিংস ছিল তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী অধিনায়কের অসাধারণ শতরান। কাকতালীয় ভাবে দু’দলের ইনিংসেই অধিনায়কের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করে গেলেন আনানমুল হক এবং অজিঙ্ক রাহানে। তাঁরা দু’জনেও আউট হন ৭০-এর কোটায়। |
শতরানের পর মুশফিকুর ও কোহলি। ছবি: এএফপি রয়টার্স। |
টসে জিতে প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায় ভারত। ১৬ রানে প্রথম উইকেট তুলে নেন মহম্মদ শামি। ৪৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর থেকে শুরু হয় মুশফিকুর রহিম ও আনামুলের পার্টনারশিপ। ইনিংস গড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত রান তোলার কাজটিও খুব সুচারুভাবেই সারেন তাঁরা। ১১৭ রান করে যখন মুশফিকুর থামেন তখন স্কোর বোর্ডে রান ২৭৬। শেষ পর্যন্ত ২৭৯ রান করে ভারতকে শক্ত চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করায় বাংলাদেশে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৫০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় ভারত। দুই ওপেনার শিখর ধবন ও রোহিত শর্মা যথাক্রমে ২৮ ও ২১ রান করেন। তার পর প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি। অধিনায়ক কোহলির সঙ্গে চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা অজিঙ্ক রাহানে তৃতীয় উইকেটে ২১৩ রান যোগ করে ভারতের জয়কে সহজ করেন। এক ওভার বাকি থাকতেই জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২৮০ রান তুলে নেয় ভারত। কেরিয়ারের ১৯তম শতরান করে ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’-এর সম্মান জিতে নেন কোহলি।
|
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ৫০ ওভারে
২৭৯-৭
ভারত ৪৯ ওভারে ২৮০-৪ |