সিরিজে লড়াইটা ছিল গতির সঙ্গে গতির। এ বার সেই লড়াইয়ে অন্য মাত্রা নিয়ে এলেন ডেভিড ওয়ার্নার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বল বিকৃতির অভিযোগ তুলে।
ওয়ার্নারের লক্ষ্য এবি ডে’ভিলিয়ার্স। দ্বিতীয় টেস্ট চার দিনে হারার পর ওয়ার্নার এক সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের বেশি মাত্রায় রিভার্স সুইং পাওয়ার পিছনে ডেভিলিয়ার্সের কারসাজি আছে। রান তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনাররা ১২৬ রান তুলে দেওয়ার পর মাত্র ৯০ রানের মধ্যে দশ উইকেট হারায় তারা। পুরোনো বলে বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন ডেল স্টেইনরা।
ওয়ার্নারের এই অভিযোগেই মঙ্গলবার হঠাৎ তেতে উঠল চলতি অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজের আবহাওয়া। হাওয়া ক্রমশ গরম হয়ে উঠছে দেখে ওয়ার্নার নিজেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কের সাহায্য নিয়ে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেন প্রথমে। লেখেন, “আমার সাক্ষাৎকারটা ভাল ভাবে শুনুন। আমি কিন্তু কোথাও জোচ্চুরির অভিযোগ করিনি।” কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে এর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে সেই টুইট মুছে দেন তিনি। কাণ্ডকারখানা দেখে ক্রিকেটমহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ওয়ার্নারের অভিযোগ কি তা হলে শুধু তাঁর ব্যক্তিগত ধারণা নয়? অস্ট্রেলিয়া শিবিরও একই কথা বলছে?
এক রেডিও সাক্ষাৎকারে ওয়ার্নার দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটকিপারের উদ্দেশে বলেন, “প্রতি ডেলিভারির পর ডে’ভিলিয়ার্স কেন নিজের গ্লাভস দিয়ে বলের রাফ দিকটা ঘষছিল, এটাই প্রশ্ন”। ওয়ার্নারের ইঙ্গিতটা হল, স্টেইন যাতে যথাসম্ভব দ্রুত রিভার্স সুইং পান, তাই বলের এক দিকটা কিপিং গ্লাভস দিয়ে ঘষা হচ্ছিল। “রিভার্স সুইং পেতে বলের এক দিকের পালিশ তোলার একটা প্রচলিত প্রথা আছে। তা হল বারবার বলের এক দিক উইকেটে আছড়ে ফেলা। আমরা এবং সব দলই তা করে থাকি। এতে কোনও অন্যায় নেই”, এই কথা স্বীকার করে নিয়েই ওয়ার্নার বলেন, “যে দল এ ভাবে তাড়াতাড়ি বল রিভার্স সুইংয়ের উপযোগী করে নিতে পারে, সেই দল তত বেশি লাভবান হয়। আউটফিল্ডে বারবার বল ড্রপ করিয়েও কাজ হয়। কিন্তু সেন্ট জর্জ পার্কের আউটফিল্ড এতটা নরম ও স্যাঁতসেঁতে ছিল যে, সেটা করা যায়নি। সে জন্যই বোধহয় অন্য কোনও পন্থা অবলম্বন করেছিল ওরা (দক্ষিণ আফ্রিকা)।” তার পরই ডেভিলিয়ার্সকে নিয়ে সেই বিতর্কিত মন্তব্য অজি ওপেনারের। যাকে প্রায় প্রতারণার অভিযোগ ধরে নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায় স্মিথের দেশের মিডিয়ায়। সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও দুই দেশের সমর্থকদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়ে যায় তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। এবি-র সমর্থকরা নিউল্যান্ডসে আগামী টেস্টে ওয়ার্নারকে ‘যোগ্য অভ্যর্থনা’ জানানোর হুমকিও দিয়ে রাখেন।
দক্ষিণ আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে বল বিকৃতির অভিযোগ এই প্রথম নয়। দুবাইয়ে এক টেস্টে পাকিস্তানও ফাফ দু’প্লেসির বিরুদ্ধে বল বিকৃতির অভিযোগ করেছিল। টিভি ফুটেজে সেই অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হওয়ায় আম্পায়াররা বল বদলে দেন এবং পাকিস্তানকে পেনাল্টি রান হিসেবে বাড়তি পাঁচ রান দিয়েছিলেন। কিন্তু সে বার আবহাওয়া এতটা গরম হয়ে ওঠেনি। |