|
|
|
|
|
|
|
বাংলা থিয়েটারের ‘বাকি ইতিহাস’ |
আমি মঞ্চে দেখা তো দূরস্থান, (তাঁকে) কোনও দিন চর্মচক্ষেই দেখিনি। তিনি যখন মারা যাচ্ছেন, আমি স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র।... অজিতেশকে জানতে শুরু করলাম আরও বেশ ক’বছর বাদে। কলেজ জীবনের গোড়া থেকে। যদিও সমুদ্রকে কি জানা যায়? দক্ষ নাবিকই কি পারেন? আমরা তো কোন্ ছার!’ ব্রাত্য বসু লিখছেন ‘অনির্বাণ অজিতেশ’-এ, নাট্যকর্মীদের নিজস্ব সংগঠন ‘নাট্যস্বজন’-এর পত্রিকা ...বাকি ইতিহাস-এর (প্রধান সম্পাদক: শোভন গুপ্ত) সূচনা সংখ্যায়। ব্রাত্যই শুরুতে জানিয়েছেন এ নাট্যপত্রটির ‘এই নামটা দেওয়ার পিছনে এইরকম একটা ভাবনা কাজ করে থাকবে হয়তো বা যে ইতিহাস লেখা হয়েছে এতদিন, তা যেন পুরোটা বলা হয়ে উঠেও বলা হয়ে ওঠেনি। এই যে অসম্পূর্ণ অংশটুকু... তার আনুপূর্বিক অনুপুঙ্খ অনুভূতিমালা ধরতে চাওয়ার অভিপ্রায়... ।’জেলার মুখ, বাংলার নাট্যসংবাদ, তরুণ নাট্যকর্মীদের সমালোচনা, সেমিনারের রিপোর্ট ইত্যাদি নানা বিষয়ে ঋদ্ধ এ-নাট্যপত্র আজকের বাংলা থিয়েটারের নতুন পরিস্থিতির মুখপত্র (সঙ্গে প্রচ্ছদের ছবি) জানিয়েছেন প্রধান সম্পাদক, ‘তিন দশকের অচলায়তনের বন্ধদুয়ার খুলে নতুন হাওয়া আমদানি করছে নাট্যস্বজন।’ রয়েছে অর্পিতা ঘোষের অনূদিত নাটক ‘গালিভার’স চয়েস’ ও প্রয়াত শ্যামল ঘোষকে নিয়ে স্মরণ। অন্য দিকে ‘কথাকৃতি’ তাদের পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই মার্চ মাসেই মঞ্চস্থ করতে চলেছে গিরিশ কারনাডের ‘হয়বদন’ অবলম্বনে যে ‘ঘোড়ামুখো পালা’, সে নামটিও শ্যামল ঘোষেরই দেওয়া। শঙ্খ ঘোষের ভাষান্তর ও অনুসৃজনে এই নাটকটির সম্পাদনাও শ্যামলবাবুরই। |
|
কথাকৃতি-র কর্ণধার সঞ্জীব রায়ের নির্দেশনায় নাটকটি মঞ্চস্থ হতে চলেছে শ্যামল ঘোষের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হিসেবে (সঙ্গে মহড়ার ছবি)। ১০ মার্চ কথাকৃতি-র জন্মদিন, এই উপলক্ষে ৭-১২ মার্চ বাংলা অ্যাকাডেমি-গিরিশ মঞ্চ-রবীন্দ্রসদনে একটি নাট্যায়োজন। অষ্টাদশ অজিতেশ স্মারক বক্তৃতা, এবং একটি আলোচনা: ‘পুরাণ ও প্রাচীন শাস্ত্রসাহিত্যে ভারতীয় নাট্যচর্চা’, বলবেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, নন্দিনী ভৌমিক ও শাঁওলী মিত্র। এ ছাড়া তাদের এতাবত্ মঞ্চস্থ উল্লেখযোগ্য প্রযোজনা ও কিছু শ্রুতি-উপস্থাপনা। ইতিমধ্যেই তাঁরা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন নাট্যব্যক্তিত্বকে নিয়ে প্রবন্ধের সংকলন। এই জন্মদিনে প্রকাশিত হবে আরও কিছু বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্বের স্মরণ ও মূল্যায়ন।
|
মানুষের গান |
আরও কত দিন, আরও কত গোলা, আরও কত মৃত্যু পার হয়ে তবে আসবে মুক্তি? হাওয়ায় হাওয়ায় এ-প্রশ্নের উত্তরের ঠিকানা ভাসিয়ে দিয়েছিলেন সেই মানুষটি। মানুষের গান গাইতেন তিনি, কয়েক দশক ধরে ছিলেন সংগ্রামী বিশ্বমানুষের সংগীত-বিবেক। দেশ ও ভাষার সীমান্ত ছাড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর গান, তাঁর কণ্ঠ, তাঁর অনন্য গায়কি। কবিতা, সুর আর সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী লড়াই মিলে গিয়েছিল অপ্রতিরোধ্য ঐক্যে। তাই আমেরিকার পিট সিগারের মৃত্যুতে বাঙালি অনুভব করেছে আত্মীয়বিয়োগের বেদনা। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধে সাড়ে ৫ টায় কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের তিন তলায় বই-চিত্র সভাঘরে এক স্মরণ-আসরের আয়োজন হয়েছে। আলোচনা ও গানে গণবিষাণের জলি বাগচী ও মলয় চট্টোপাধ্যায়। অন্য দিকে পারুল থেকে প্রকাশিত হয়েছে পৃথ্বীরাজ সেনের বিশ্বপথিক পিট সিগার, তাঁর জীবনকথা ও নির্বাচিত গানের উপহার। সঙ্গের স্কেচ: সোমনাথ অধিকারী
|
আমরা বাঁধনে |
তাঁর মৃত্যুর পর বারো বছর পেরিয়ে গেছে। শিল্পী বাঁধন দাসের জন্ম ১৯৪৪-এ শ্রীহট্টে। কলকাতার সরকারি চারুকলা বিদ্যালয় থেকে পেন্টিং নিয়ে পাশ করার পর তিনি পাঠ নেন যাদবপুরের কেন্দ্রীয় কাচ ও সেরামিক সংস্থানে। অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন নিজের শিল্পশিক্ষা কলেজে। আমৃত্যু ছিলেন সেখানেই। শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরিতে গড়ে তোলেন তাঁর স্বপ্নবাড়ি। সেখানে আদিবাসীদের নিয়ে তাঁর শুরু করা দুর্গাপূজা আজও চলছে। দেশ-বিদেশে প্রদর্শিত হয়েছে ওঁর শিল্পকলা, পেয়েছেন নানা সম্মান। তাঁর গুণমুগ্ধদের উদ্যোগে আজ বিকেলে জি সি লাহা শতবার্ষিকী গ্যালারিতে আয়োজিত হয়েছে একটি প্রদর্শনী। শিল্পীর কাজ ছাড়াও ছাত্রছাত্রী ও প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের কাজ নিয়ে ‘আমরা বাঁধনে...’ শীর্ষক প্রদর্শনী চলবে ১ মার্চ পর্যন্ত, ৩-৮ টা।
|
ডাচ ঐতিহ্য |
কলকাতা থেকে অল্প দূরত্বেই রয়েছে অন্য নানা ধরনের ঔপনিবেশিক স্থাপত্য। চন্দননগর, হুগলি, শ্রীরামপুর, ব্যান্ডেল বা চুঁচুড়া-য় এই সব স্থাপত্য পর্তুগিজ-ডাচ-ফরাসিদের কীর্তি। পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশনের উদ্যোগে এ সব সংরক্ষণের কাজ এগিয়েছে। উদ্যোগী ইউরোপও। শ্রীরামপুরে যেমন ডেনমার্কের বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন, তেমনই কলকাতায় এসেছেন হল্যান্ডের স্থাপত্য সংরক্ষণবিদ পল মেয়ুরস। তিনি নেদারল্যান্ডস-এর ডেলফ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি-র মুখ্য সংরক্ষণবিদ। আজ সকালে ডাচ দূতাবাসের উদ্যোগে এই শহরের সংরক্ষণবিদদের সঙ্গে তিনি যাচ্ছেন চুঁচুড়ায়, সেখানকার স্থাপত্য সরেজমিনে দেখতে। বিকেলে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে সংরক্ষণ নিয়ে জানাবেন তাঁর মতামত। ‘দ্য চিনসুরা ইনিশিয়েটিভ অ্যান্ড দ্য কালচারাল ভ্যালু অব আ প্লেস’ শীর্ষক এই খোলা আলোচনায় সঙ্গে থাকবেন মনীশ চক্রবর্তী ও ঐশ্বর্য টিপনিস। সঙ্গের ছবিতে চুঁচুড়ার গাড়ির মোড়ের ঘড়িঘর। এ দিকে ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশচন্দ্র বসু হল-এ বাংলায় ডাচ উপনিবেশ প্রসঙ্গে সারা দিনের আলোচনাচক্র, ডাচ দূতাবাসের সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় রাজ্য লেখ্যাগার ও পর্যটন বিভাগ।
|
অশ্রুত রবীন্দ্রনাথ |
‘রবীন্দ্রনাথের পদাবলিতে কবি ছাড়া অপর কেউ সুরারোপ করবেন এমনতরো কথা কল্পনা করাও ছিল তখন দুঃসাধ্য। পঙ্কজকুমার দুঃসাহসিক সেই ঝুঁকি নিয়েছিলেন, চূড়ান্ত সার্থকও হয়েছিলেন।’ লিখেছেন অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত। পঙ্কজকুমার মল্লিক-ই একমাত্র সুরকার, যাঁকে রবীন্দ্রনাথ অনুমতি দিয়েছিলেন তাঁর কথায় সুর সংযোজন করে গান গাওয়ার। ১৯৩৭-এ ‘মুক্তি’ ছবিতে ছিল পঙ্কজবাবুর সংগীত পরিচালনায় ও স্বকণ্ঠে প্রথম গাওয়া ‘দিনের শেষে ঘুমের দেশে’ গানটি। কবির অনেক কবিতায় সুরারোপ করেছেন পঙ্কজকুমার, কিন্তু রেকর্ডে তার সবটা সংরক্ষিত হয়নি। পঙ্কজ মল্লিক মিউজিক অ্যান্ড আর্ট ফাউন্ডেশন এবং সেনসোরিয়াম-এর উদ্যোগে সেই সব গান এ বার শোনা যাবে আইসিসিআর-এ, ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় পঙ্কজকুমারের দৌহিত্রবধূ ঝিনুক গুপ্তর কণ্ঠে, সঙ্গে কবির কবিতাংশের ইংরেজি ও বাংলা আবৃত্তি দৌহিত্র রাজীব গুপ্তর কণ্ঠে। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বাণী বসু।
|
অর্কেস্ট্রায় রবীন্দ্রগান |
অর্কেস্ট্রায় রবীন্দ্রসঙ্গীত। সিম্ফনি অর্কেস্ট্রায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুর নির্মাণ করেছেন ভায়োলিন ব্রাদার্সের দেবশঙ্কর রায়। ‘টেগোর সিম্ফনি’ নামে তাঁর সেই প্রকল্প সম্প্রতি রূপ পেল ‘টরন্টো সেন্টার ফর দি আর্টস’-এ। দেবশঙ্করের পরিচালনায় ‘টরন্টো ইউথ অর্কেস্ট্রা’র ২৫ জন বাদক ও ৩০ জন কণ্ঠশিল্পী সিম্ফনিতে রবীন্দ্রসঙ্গীতের উপস্থাপন করলেন। সাড়া পেলেন কেমন? ‘প্রেক্ষাগৃহ পূর্ণ ছিল। তরুণ অর্কেস্ট্রাশিল্পীরা রীতিমতো উত্সাহিত রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে এই কাজ করতে পেরে,’ বললেন দেবশঙ্কর। এর পরে উস্তাদ আমজাদ আলি খানের সুরনির্মাণ নিয়ে ‘বন্দিশ সিম্ফনি’র কাজে হাত দিয়েছে ভায়োলিন ব্রাদার্স, জানালেন তিনি।
|
সমকালে শিশিরকুমার |
শিশিরকুমার ভাদুড়ি যেমন বিরাট এক সময়কালকে তৈরি করেছেন, সময়ও তেমনই তাঁকে তৈরি হতে সাহায্য করেছে। তবে, শিশিরকুমারের জন্য তাঁর সময় অতটা তৈরি ছিল না। ফলে তিনি হয়তো সে ভাবে সেই কালে পূর্ণতা পাননি, বলছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অগ্রজ অভিনেতার প্রতি তাঁর এই বক্তব্যই প্রতিফলিত হবে ২ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলা আকাদেমি সভাঘরে। সৌমিত্র বলবেন ‘শিশিরকুমার ও তাঁর সময়’ নিয়ে। উপলক্ষ: কুমার রায়ের জন্মদিনে তাঁকে স্মরণ, আয়োজনে ‘বহুরূপী’। আলোকিত বৃত্তের বাইরে যে সব দল নিষ্ঠায় নাট্যচর্চা করে তাদের সম্মানিত করার পরম্পরা তৈরি করেছে কুমার রায়ের পরিবার। কুমার রায় স্মৃতিরক্ষা সমিতির উদ্যোগে এ বার সেই সম্মান পাচ্ছে মুর্শিদাবাদের ‘নাট্যম বলাকা’।
|
চরৈবেতি |
ভারতের প্রথম বাতানুকূল ট্রাম ‘চরৈবেতি’-র যাত্রা শুরু হল নতুন ভাবে। ২১ ফেব্রুয়ারি ধর্মতলা ট্রামডিপো-য় এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। ছুটির দিন সহ শনি রবি ও বুধবার এই ট্রাম ধর্মতলা থেকে যাবে খিদিরপুর, শ্যামবাজার ও কালীঘাট। ভেতরে প্রদর্শিত হবে স্বামী বিবেকানন্দের ওপর একটি তথ্যচিত্র। সঙ্গের যাত্রী-সহায়ক পরিচয় করিয়ে দেবেন কলকাতার বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে। মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটি ডিপো নতুন ভাবে সাজানো হবে। প্রতিটি ট্রাম নীল-সাদা রঙে সেজে উঠবে। |
|
ছোটদের জন্য থাকবে নানা আকর্ষণীয় ব্যবস্থা। কলকাতার ট্রামের নানা ইতিহাস সংগ্রহে উদ্যোগী হয়েছে ট্রাম কর্তৃপক্ষ, জানালেন সংস্থার এম ডি নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য। বিভিন্ন ডিপো থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ছবি, পুরনো টিকিট, নথি ইত্যাদি। এ থেকে বাছাই করে এসপ্লানেডে ১৯৩৮-এ তৈরি একটি ট্রামের মধ্যে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে ছোট মাপের প্রদর্শশালা, সঙ্গে থাকবে কাফেটেরিয়া। পাওয়া যাবে নানা স্মারক। এই প্রথম ট্রামের টিকিটে সংযোজিত হল চল্লিশের দশকে ধর্মতলার একটি ছবি নিয়ে পিকচার পোস্টকার্ড (নকশা: সৌভিক রায়, সঙ্গের ছবি)। টিকিট মিলবে অনলাইনে অথবা ৮৬৯৭৭৩৩৭৪৫ নম্বরে। ইচ্ছে করলে বুক করা যাবে পুরো ট্রামটাই।
|
সুবর্ণজয়ন্তী |
পঞ্চাশ বছরে পদার্পণ করল কলকাতার ঐতিহ্যমণ্ডিত স্কুল টাকী হাউস বয়েজ। টাকীর জমিদাররা শিয়ালদহের সার্কুলার রোডের ধারে তাঁদের ‘আউট হাউস’, পাশে গোলাপবাগান সহ বেশ খানিকটা জমি, বিধানচন্দ্র রায়ের সরকারকে একটি ডে-স্টুডেন্টস হোম (ঈশ্বরচন্দ্র পাঠভবন) এবং টাকী স্কুল গঠনের জন্য দান করেছিলেন। ১৯৫৬-য় আউট হাউসটিতে হোম প্রতিষ্ঠা হলেও টাকী স্কুল গড়ার সরকারি সিদ্ধান্ত হয় ১৯৬২-তে। ভবন তৈরির পর হিন্দু স্কুলের তত্কালীন প্রধান শিক্ষক কানাইলাল মুখোপাধ্যায় টাকী স্কুলের দায়িত্ব পান। ১৯৬৫-র ৪ মার্চ প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি তাঁর কর্মদক্ষতায় অচিরেই কলকাতার অন্যতম বিশিষ্ট স্কুল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। টাকী হাউস বয়েজ গোল্ডেন জুবিলি সেলিব্রেশন কমিটি বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক, প্রাক্তন-বর্তমান ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, অভিভাবকদের নিয়ে ৪ মার্চ থেকে বর্ষব্যাপী নানা অনুষ্ঠান ও একটি সুবর্ণজয়ন্তী স্মারক প্রকাশের পরিকল্পনা করেছে। এখানে শিক্ষকতা করেছেন নারায়ণচন্দ্র ইন্দ্র, দেবতোষ বসু, অরুণ মহাপাত্র, সুদীপ্ত চক্রবর্তী, রূপম ইসলাম, আরও অনেকে।
|
ছক ভেঙে |
|
ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য। |
জাপানের কিয়োতো-তে জন্ম জুংকো য়ামাগিশি-র। বাড়ির বড় মেয়ে, ওরিগামি ছবি আঁকা বাঁশি বাজানো এ সব তো তাঁর ভিতরেই ছিল। কর্মজীবন শুরু সাঁতার শেখানো দিয়ে, কিন্তু গতানুগতিক কাজে শান্তি ছিল না। আধ্যাত্মিক চেতনার খোঁজে কুড়ি বছর বয়সে ভারতে আসা। হৃষীকেশের শিবানন্দ আশ্রমে হাতে পেলেন গসপেল অব শ্রীরামকৃষ্ণ। পড়ে আপ্লুত হয়ে দেখা করলেন স্বামী চিদানন্দ মহারাজের সঙ্গে। এর পর নানা দেশ ঘুরে আবার ভারতে ফেরা। শ্রীরামকৃষ্ণের আধ্যাত্মিক ভাবধারার সঙ্গে মানসিকতার মিল পেলেন। কানাডায় স্বামী লোকেশ্বরানন্দের সঙ্গে দেখা করে ভারতপ্রীতির কথা বলায় তিনি স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দেন। বিভিন্ন দেশের আধ্যাত্মিক সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনো করা জুংকো মূল বাংলা ভাষায় রামকৃষ্ণ কথামৃত পড়ার জন্য কলকাতায় এলেন। গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনে তাঁর সঙ্গে রাজকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের পরিচয় ও পরে পরিণয়। এখন এ শহরই তাঁর ঘরবাড়ি। ২০১১-তে তাঁর অলঙ্করণে জাপানি রূপকথার গল্প জাপানের ফুলঝুরি স্বামী রাজকৃষ্ণ-র বাংলা অনুবাদে বই আকারে বেরিয়েছে। জুংকো সম্প্রতি কলকাতায় জাপান কনসুলেটের উদ্যোগে সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে দুই দিন দুটি অরিগ্যামি কর্মশালায় শেখালেন ছাত্র ও আগ্রহীদের।
|
|
|
|
|
শিল্পী-স্মরণ |
ছোটবেলা থেকেই মন টেনেছিল পশুপাখির শরীরী রেখা। সেই রং ও রেখার সাধনা করে গেলেন তিনি একটি জীবন ধরে। সাম্প্রতিক অসুস্থতা নিয়ে কেউ কিছু জানতে চাইলে হেসে বলতেন ‘ও কিছু নয়, এই তো দিব্যি কাজ করছি।’ শিল্পী শ্যাম কানু বরঠাকুরের জন্ম ১৯৫৪-য়, অসমের বামুনগাঁওতে। ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়ে চলে আসেন কলকাতায়। ফাইন আর্টস নিয়ে পড়লেন ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজে, একই সঙ্গে কলেজ অব ভিসুয়াল আর্টসেও। ঘুরে বেড়িয়েছেন অসমের চা-বাগানে, এঁকেছেন শ্রমিক আর নিসর্গ দৃশ্য। মানুষের মুখের রেখা আর গাছের ছন্দ ওঁকে খুব টানত। পরের দিকে ছবিতে ফিরে আসে ষাঁড়, বুনো শুয়োর, ঘোড়া, হাতি ইত্যাদির বন্য রূপ। বিশ্বের সাম্প্রতিক নানা ঘটনাও ছাপ ফেলত ওঁর ছবিতে। সেই অনুভব রয়ে গেছে শিল্পীর লেখা ডায়েরিতে। কলকাতার আর্টস একরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ছিলেন তিনি। প্রতিষ্ঠা করেন অসমের সোসাইটি অব কনটেম্পোরারি আর্টিস্টস। দেশবিদেশে বহু প্রদর্শনীতে দেখানো হয়েছে ওঁর কাজ, সংগৃহীত হয়েছে বিশ্ব জুড়ে। বিড়লা আকাদেমি থেকে ভাস্কর্যে এক বার সেরার সম্মান পেয়েছেন। সব বাঁধন ছিন্ন করে চলে গেলেন সম্প্রতি। বিড়লা আকাদেমিতে সদ্য প্রয়াত দুই শিল্পী বি আর পানেসর ও শ্যাম কানু বরঠাকুরকে নিয়ে হয়ে গেল একটি স্মৃতিসভা। শ্যাম কানু-র পূর্বাপর কাজ নিয়ে একটি প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে যতীন দাশ রোডের গ্যাঞ্জেস আর্ট গ্যালারিতে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (১১-৭টা), রবিবার বাদে। |
|
|
|
|
|
|