আদালত-সহ প্রশাসনিক দফতরগুলিতে লেখালিখির কাজ বাংলা ভাষায় চালুর দাবিতে ফের আওয়াজ তুললেন চুঁচুড়া আদালতের দেওয়ানি বিভাগের মুহুরিরা। শুক্রবার ভাষা দিবসে ওই মর্মে হুগলির জেলা বিচারক সুব্রত মিত্রের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেয় রাজ্য ল’ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের চুঁচুড়া শাখার সিভিল ইউনিট।
ওই মুহুরিদের বক্তব্য, ছোটবড় নানা পেশার মানুষকে নানা প্রয়োজনে আদালতে আসতে হয়। একই ভাবে সাধারণ মানুষকে প্রতিদিন বিভিন্ন সরকারি দফতরে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু প্রশাসনিক ওই সমস্ত দফতরে যাবতীয় নথিপত্র ইংরেজিতে লেখা হওয়ায় বহু মানুষ কিছুই বুঝে উঠতে পারেন না। সংগঠনের সম্পাদক অমিতকুমার দে বলেন, “গত কয়েক বছর ধরেই আমরা আদালত এবং অন্যান্য প্রশাসনিক দফতরের যাবতীয় কাজকর্ম বাংলায় করার দাবি জানিয়ে আসছি। সাধারণ মানুষের সুবিধা এবং মাতৃভাষার গরিমা রক্ষার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। কিন্তু সংবিধানে প্রাদেশিক ভাষায় কাজ করার বিধি থাকা সত্ত্বেও বাংলা ভাষা প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে এখনও অবহেলিত।”
তাঁদের আরও বক্তব্য, বিহার-সহ দেশের বেশ কিছু রাজ্যে আঞ্চলিক ভাষায় কাজকর্ম চলে। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র বাংলাদেশের যাবতীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম সম্পূর্ণ ভাবে বাংলাতেই করা হয়। অথচ এ রাজ্যে বিভিন্ন আদালতে বাংলায় কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত স্টেনোগ্রাফার এবং টাইপমেশিন পর্যন্ত নেই বলে সংগঠনের নেতাদের ক্ষোভ। এই সব কারণকে সামনে রেখেই গোটা প্রক্রিয়া বাংলায় চালু করার দাবি জানানো হয়। বহু আইনজীবীও মুহুরিদের ওই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন।
গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে নানা অনুষ্ঠান হয়েছে হুগলির বিভিন্ন প্রান্তে। শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সভাগৃহে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। শহিদ বেদিতে মাল্যদানের পর গান, কবিতা পাঠ-সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক মৃণালকান্তি হালদার, মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক লিপিকা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্য সরকারি অফিসারেরা।
চন্দননগর মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগেও বিশেষ দিনটি সাড়ম্বরে পালন করা হয়। চন্দননগরে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সভাগৃহে ওই অনুষ্ঠান হয়। শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করা হয়। ছিল আলোচনা ও নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছিলেন মেয়র রাম চক্রবর্তী-সহ অন্য বিশিষ্টজনেরা। শ্রীরামপুরের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির উদ্যোগে ভাষা দিবসে পদযাত্রা বের করা হয়। |