দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে পরিবেশ বাঁচানোর চেষ্টাই যে শহরে পুরসভার বড় চ্যালেঞ্জ, সেই হাওড়ায় ক্ষমতায় আসার পরে পরিবেশকে কার্যত পিছনের বেঞ্চে পাঠিয়ে দিল তৃণমূল-পরিচালিত নতুন পুরবোর্ড। হাওড়া পুরসভায় এখন মোট ৪৩টি দফতর। যার মধ্যে ১৪টি নতুন। মেয়র পারিষদের সংখ্যা ১০। অথচ, পরিবেশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ দফতরকে পাঠানো হয়েছে সেই ১২টি দফতরের ভিড়ে, যেগুলি মেয়র রথীন চক্রবর্তী নিজের হাতে রেখে দিয়েছেন। একা এত দায়িত্ব সামলে কী ভাবে তিনি পরিবেশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরের কাজ সামলাবেন, ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন উঠেছে।
নয়া বোর্ড শপথ নেওয়ার প্রায় আড়াই মাস পরে শনিবার হাওড়া পুরভবনে মেয়র রথীনবাবু কে কোন দফতরের দায়িত্ব পেয়েছেন, তার তালিকা ঘোষণা করেন। মেয়র নিজের হাতে রেখেছেন স্বাস্থ্য, অর্থ, সাধারণ প্রশাসন, তথ্যপ্রযুক্তি-সহ মোট ১২টি দফতর। যার মধ্যে পরিবেশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ দফতরও আছে। |
এখানেই প্রশ্ন, যে শহরের পরিবেশ সব থেকে ‘সঙ্কটজনক’ বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, সেই শহরের পুরবোর্ডে পরিবেশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের কি আলাদা গুরুত্ব প্রাপ্য ছিল না?
মধ্য হাওড়ার বাসিন্দা, পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের মতে, “কোনও দিনই সম্ভব নয়। যে শহরে পরিবেশের অবস্থা গোটা দেশের নিরিখে এতটা সঙ্কটজনক, সেখানে এই বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দেওয়ার অর্থ, নতুন পুরবোর্ড পরিবেশ রক্ষার
প্রয়োজনটাই অনুধাবন করতে পারছে না। যা আগের পুরবোর্ডও পারেনি গত ২৭ বছরে।”
সুভাষবাবুর আরও বক্তব্য, হাওড়া শহরে ৩৪ হাজার ছোটবড় অসংগঠিত শিল্প রয়েছে। রয়েছে জঞ্জাল অপসারণ ও নিকাশি নিয়ে সমস্যা। শহরে সবুজ প্রায় উধাও। কলকাতায় মাঝেমধ্যে তবু গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা হয়, হাওড়ায় তার বালাই নেই।
মেয়রের অবশ্য দাবি, তিনি হাওড়ার পরিবেশ নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত। বলেন, “আমি যেহেতু চিকিৎসক, তাই স্বাস্থ্য ও পরিবেশ আমার দায়িত্বে রয়েছে। এ বিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব। নতুন পুরবোর্ডের স্লোগানই হল: ক্লিন হাওড়া, গ্রিন হাওড়া।”
মেয়র এ দিন যে সব নতুন দফতর ঘোষণা করেছেন, তা হল: শিল্প, খাদ্য, নবান্ন এলাকার উন্নয়ন, জল পরিবহণ, হাওড়া স্টেশন এলাকার উন্নয়ন, সংযুক্ত এলাকার উন্নয়ন, সাঁতরাগাছির উন্নয়ন, হোর্ডিং, ভূতল পরিবহণের উন্নতি প্রভৃতি। |