ভুটান সীমান্তবর্তী জয়গাঁর বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের জমির অধিকার দিতে প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। শনিবার জয়গাঁয় জমি জট ছাড়ানোর জন্য নবগঠিত কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। ওই কমিটির চেয়ারম্যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, ২০০৭ সালের একটি সমীক্ষা ধরে একটি রিপোর্ট তৈরি করে সেই মতো ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের জমির অধিকার দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। কমিটি প্রাথমিক ভাবে ঠিক করেছে, বসবাসকারীদের মধ্যে বিপিএল তালিকাভুক্ত ও অর্থনৈতিক ভাবে যাঁরা দুর্বল তাঁদের বিনে পয়সায় জমির পাট্টা দেওয়া হবে। নিজ ভূমি নিজ গৃহ প্রকল্পে ওই বাসিন্দাদের ঘর দেওয়া হবে। কিন্তু অর্থনৈতিক ভাবে যারা সম্পন্ন তাঁদের ক্ষেত্রে জমি বাবদ কিছু দাম নেওয়ার কথা ভাবছে কমিটি। প্রসঙ্গত, ওই এলাকায় গড়ে রোজ কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা হলেও জমির মালিকানা না থাকায় কোনও রাজস্বই প্রায় সরকারের খাতায় জমা পড়ছে না কমিটি সূত্রের খবর, জয়গাঁয় ৩৬৪ একর সরকারি জমি রয়েছে। ওই জমিতে বসবাসকারী ব্যবসায়ী ও বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করলেও কারও কাছেই জমির কোনও নথিপত্র নেই। তা নিয়ে বাসিন্দারা বহুদিন ধরেই আন্দোলন করছেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডুয়ার্স সফরে গিয়ে ওি জমি জট কাটিয়ে বসবাসকারীদের হাতে জমির অদিকার দেওয়ার জন্য কী করণীয় তা খতিয়ে দেখতে ওই কমিটি গড়ে দেন। সেই মতো বৈঠক করে কী ভাবে জমি দেওয়া যেতে পারে তার রূপরেখা তৈরি করেছে কমিটি। কাল, সোমবার ওই রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত ওই জমি সমস্যা মিটিয়ে দিতে চান। কারণ, বাসিন্দাদের জমির অধিকার না থাকাতে নানা সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি খুব শীঘ্র ওই সমস্যা মিটে যাবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুটানের সীমান্ত এলাকা জয়গাঁ উত্তরবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। ওই এলাকার জমি সমস্যা দীর্ঘদিনের। স্বাধীনতার ষাট বছর কেটে গেলেও ওই সমস্যা মেটেনি। বাসিন্দারা সেখানে কেউ বাড়ি করেছেন। কেউ আবার ওই জমি দখল করে দোকান তৈরি করেছেন। বাম সরকারের আমলে ২০০২ সালে জমি সমস্যা মেটাতে সর্বদলীয় বৈঠক হয়। ২০০৭ সালে জমি সমস্যা মেটাতে একটি সমীক্ষা করা হয়। কিন্তু, কাজের কাজ হয়নি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, জমির কোনও কাগজপত্র না থাকার সুযোগ নিতে একটি দুষ্ট চক্র সক্রিয়। |