যা ছিল এত দিন বিক্ষুব্ধ জনমত, ততটা না হলেও এ বার মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠে পড়ল ভারতীয় বোর্ডের অন্দরমহলেও।
প্রকাশ্যে নয়, ঠারেঠোরে। কিন্তু বিদেশে টানা তিন বছর ধরে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারতীয় দলের হতশ্রী পারফরম্যান্স দেখার পর কোনও কোনও বোর্ড কর্তা বলতে শুরু করে দিলেন, ধোনি-ফ্লেচারের কাছে জবাবদিহি চাওয়া হোক। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর নিউজিল্যান্ডে গিয়েও টিম ইন্ডিয়া বিধ্বস্ত হওয়ার পর বোর্ড কর্তারা ধোনি-ফ্লেচার জুটি বা কোনও এক জনকে সরানোর কথা ভাবছেন, এমনটা মোটেও নয়। কিন্তু কোথায় গণ্ডগোলটা বারবার হচ্ছে, সেটা এ বার নাকি জানতে চায় বোর্ড।
শুক্রবার এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক বোর্ড কর্তাকে বলতে শোনা গিয়েছে যে, তাঁরা পরিস্থিতির ব্যাখ্যা চান ধোনিদের কাছ থেকে। জানতে চান, কোথায় সমস্যা এবং সেই সমস্যার সমাধানের রাস্তাটা কী? তবে ওই কর্তা জানিয়ে দিয়েছেন জনমত যে ধোনির অপসারণের দাবি তুলেছে, সেটা বোর্ডের মনঃপূত নয়। ধোনি-ফ্লেচারের পাশেই তাঁরা থাকবেন।
কিন্তু ততক্ষণে আবার নতুন বিতর্ক বেঁধে গিয়েছে মিডিয়ার এক রিপোর্টকে ভিত্তি করে। যেখানে বলা হয়, ডানকান ফ্লেচারের পরিবর্ত খোঁজা শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। ইংল্যান্ডের সদ্য প্রাক্তন কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সঙ্গে নাকি একপ্রস্ত কথাবার্তাও হয়ে গিয়েছে। |
ধোনির পাশে কি এ বার অন্য মুখ? |
আগামী ১ এপ্রিল ফ্লেচারের চুক্তি পুনর্নবিকরণ হওয়ার কথা। এমনিতেই দেশজ প্রচারমাধ্যমে জল্পনা চলছে ফ্লেচারের ভবিষ্যৎ নিয়ে। ২০১১ থেকে ২০১৪ এই তিন বছরে বিদেশ সফরে ফ্লেচারের ভারতের কপালে শুধু কলঙ্কই জুটেছে, গৌরব নয়। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের কাছে সব ক’টা টেস্ট হেরে ০-৮ বিপর্যয়। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ডের কাছে ০-১ হার। জয় বলতে শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। কোনও কোনও চ্যানেলে দেখানো শুরু হয়ে যায়, ফ্লাওয়ারকে পরিবর্তে এনে ভাল কিছু ঘটানো যায় কি না ভাবতে শুরু করে দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। প্রাথমিক কথা হয়েছে ফ্লাওয়ারের সঙ্গে। বোর্ড নাকি আবেদনপত্রও নেবে আরও কয়েক জনের থেকে।
কিন্তু বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল আবার সেটা পত্রপাঠ উড়িয়ে দিলেন। বলে দিলেন, “পুরোটাই ফালতু। আমি বোর্ডের সচিব। ফ্লাওয়ারের সঙ্গে কথাবার্তা হলে আমি জানব না? বরং আমি জানতে চাই কে এটা বলেছেন?” তবে বিদেশে-বিপর্যয় ধোনি-ফ্লেচারের সঙ্গে যে কথা বলা হবে, সেটা জানিয়ে দিয়েছেন বোর্ড সচিব। বলেছেন, যা হবে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর হবে।
|
বিদেশে ফ্লেচার-জমানায় |
জুন-জুলাই ২০১১: ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তিন টেস্টের সিরিজে ১-০ জয়।
জুলাই-অগস্ট ২০১১: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ০-৪ হোয়াইটওয়াশ।
ডিসেম্বর ২০১১-জানুয়ারি ২০১২: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ০-৪ হোয়াইটওয়াশ।
ডিসেম্বর ২০১৩: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দু’টেস্টের সিরিজে ০-১ হার।
ফেব্রুয়ারি ২০১৪: নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দু’টেস্টের সিরিজে ০-১ হার। |
|