আল কায়দার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরির তথাকথিত ভিডিও-বার্তাটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ জামাতে ইসলামির এক ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের সন্দেহ, টাঙ্গাইলের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই ছাত্র রাসেল বিন সাত্তারের সঙ্গে আল কায়দার যোগাযোগ রয়েছে। নেটে
এই ভিডিও-বার্তাটি ছড়িয়ে দেওয়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছে রাসেল।
আল কায়েদার নামে প্রচারিত জাওয়াহিরির ছবি দেওয়া এই ভিডিও-বার্তায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামাত নেতাদের বিচারের বিরোধিতা করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, ‘শরিয়ত-বিরোধী, ধর্মনিরপেক্ষ’ শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করে ধর্মবিশ্বাসীদের খুন করছে। বাংলাদেশে জেহাদ শুরুর ডাকও দেয় আল কায়দা।
এই ভিডিওটির উৎস নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দেখা গিয়েছে, আমেরিকার অ্যারিজোনায় ডোমেন থাকা একটি জেহাদি ওয়েবসাইটে প্রথম ২৯ মিনিটের এই ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়। তার পরে তা ফেসবুক-সহ নানা ওয়েবসাইট ও ব্লগে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। গোয়েন্দারা জানতে পারেন, আল কায়দার নামে প্রচারিত জাওয়াহিরির ওই ভিডিও-বার্তাটি বাংলাদেশ থেকেই কেউ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছে। সূত্র ধরে এগোতে এগোতেই পুলিশ জামাতে ইসলামির ছাত্রশাখা ইসলামি ছাত্র শিবিরের নেতা রাসেলকে চিহ্নিত করে। খালেদা জিয়ার দল বিএনপি-র জোটসঙ্গী এই জামাতে ইসলামির সঙ্গে ওসামা বিন লাদেনের আল কায়দার যোগাযোগের অভিযোগ বারবারই উঠেছে। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, আফগানিস্তানে লাদেনের জেহাদে বাংলাদেশ থেকে যোদ্ধা পাঠাতেন জামাত নেতারা।
মঙ্গলবার ভোররাতে টাঙ্গাইলের মাঝিপাড়ায় তার বাড়ি থেকেই রাসেলকে গ্রেফতার করে পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব। তিনটি মোবাইল ফোন, দুটি ল্যাপটপ ও বেশ কিছু জেহাদি বইও আটক করা হয়। র্যাবের এডিসি জিয়াউল আহসান বলেন, “আল কায়দার সঙ্গে ধৃতের যোগাযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। জাওয়াহিরির বার্তাটি সে-ই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছে।” র্যাবের আর এক কর্তা এটিএম হাবিবুর রহমান জানান, টাঙ্গাইলের ছাত্র শিবির নেতা এই রাসেল বিভিন্ন নামে অজস্র ব্লগ ও সাইট চালায়। সেই সব সাইটে ধারাবাহিক ভাবে উস্কানিমূলক নানা জেহাদি বার্তা ও সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হয়। ৭ মে এই সব ভুয়ো তথ্য সে ইরানের প্রেসিডেন্টকেও ই-মেল করে পাঠায়।
র্যাব তাকে সাংবাদিকদের কাছে হাজির করলে ওই ভিডিওটি নেটে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে রাসেল। তবে আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ অস্বীকার করে জামাতের এই ছাত্র নেতা। রাসেলের দাবি, নিয়মিত সে নানা জিহাদি সাইট ঘাঁটাঘাঁটি করে। ‘জিহাদোলজি ডটনেট’ নামে তেমনই একটি ওয়েবসাইট থেকে ভিডিওটি পেয়ে সে ইন্টারনেটে প্রচার করে। রাসেল জানিয়েছে, ওই ভিডিও-য় যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা হয়েছে, তা সে বিলক্ষণ জানত। তার পরেও সে এ কাজ করেছে। |