মঙ্গল-রবি তুঙ্গে, পুলিশ সুপারকে বলল নিত্যানন্দ
কই পরিবারের তিন মহিলা খুনের ঘটনায় জ্যোতিষ নিত্যানন্দ দাস পুলিশ হেফাজতে। সেখানেই সে চালিয়ে যাচ্ছে ভাগ্যগণনা। বহরমপুর থানা সূত্রে খবর, খোদ জেলা পুলিশ সুপারকে নিত্যানন্দ পরামর্শ দিয়েছে ‘ক্যাটস্ আই’ ধারণের। বলেছে, “আপনার শত্রু সংখ্যা অনেক। মঙ্গল ও রবি তুঙ্গে থাকলেও শত্রু থেকে সাবধানে থাকবেন। অবিলম্বে ক্যাটস্ আই ধারণ করুন।” বহরমপুরের আইসি মোহায়মেনুল হক ও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্র চক্রবর্তীরও হাত দেখতে চেয়েছিল নিত্যানন্দ। তাঁরা অবশ্য রাজি হননি। নিত্যানন্দকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার সকালে মালদহ গিয়েছে।
যার নিজের ভাগ্যে ফাঁসি থেকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, যে কোনও শাস্তি হতে পারে, তার এই মনোভাব দেখে তাজ্জব পুলিশও। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, “নিত্যানন্দের স্নায়ুর জোর তারিফ করার মতো। শিলিগুড়ি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার পর থেকে ওকে সামলাতে গিয়ে আমাদের রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছে। নিত্যানন্দ দিব্যি রয়েছে।” পুলিশসূত্রে খবর, তার রক্তচাপ স্বাভাবিক। নিয়ম করে খাওয়া দাওয়া করছে। ধরা পড়ার প্রথমদিন নিত্যানন্দের আবদার ছিল মুরগির মাংস। এখন অবশ্য সে দু’বেলা ভাত, ডাল, মাছ, তরকারি খাচ্ছে।
পুলিশসূত্রে খবর, জেরার মুখে খুনের প্রসঙ্গ এড়িয়ে বার বার নিত্যানন্দ তারাপীঠ, কামরূপ-কামাখ্যায় তন্ত্রসাধনার গল্প শোনাতে চাইছে। মৃত তিন মহিলার মোবাইল ফোন নিয়ে নিত্যানন্দ বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা বলছিল। পরে কবুল করে, মালদহ এবং শিলিগুড়িতে মোবাইলগুলি বিক্রি করেছে। মোবাইলের সন্ধানে তাকে নিয়ে এ দিন মালদহ রওনা দেয় জেলা পুলিশের দল। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর ‘তদন্তের স্বার্থে’ এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
খুনের ঘটনার পরে নিত্যানন্দের ব্যবহারে কোনও উত্তেজনা বা অস্বাভাবিকতা লক্ষ করেননি তাঁর স্ত্রী-ও। এ দিন সাত বছরের ছেলে গৌরাঙ্গ দাসকে সঙ্গে নিয়ে স্ত্রী মমতা ওরফে মানতা দাস বহরমপুর থানায় আসেন নিত্যানন্দের সঙ্গে দেখা করতে। স্বামীর দেখা পাননি। মানতাদেবী বলেন, “গত ৪ জানুয়ারি দুপুরে কলকাতা যাওয়ার জন্য নিত্যানন্দ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পর দিন রবিবার দুপুরে বাড়ি ফিরে এসে মালদহ চলে যায়। মালদহ থেকে চলে যায় কলকাতা। কলকাতার হাজরা ও সূর্য সেন স্ট্রীটের দোকানে বসে কোষ্ঠী বিচার করে। সেখানে সাড়ে তিন হাজার টাকায় একজন মহিলাকে একটি তাবিজও বিক্রি করে।”
কলকাতা থেকে বুধবার বহরমপুরে ফিরে আসে এবং সেই দিনই শিলিগুড়ি চলে যায় সে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে বাসে করে মানতাদেবী শিলিগুড়ি চলে যান। মানতাদেবীর কথায়, “শিলিগুড়িতে প্রথমে ১৬০০ টাকা দরের ঘর ভাড়া করে হোটেলে ছিল। পরে আমি যাওয়ার পরে অন্য একটি হোটেলে ৬০০ টাকা দরের ঘর ভাড়া করি। শিলিগুড়িতে পার্কে বেড়াতে যায়। কোনও অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করিনি। পরে পুলিশ যাওয়ার বিষয়টি জানতে পারি।”
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, “একবারই নিত্যানন্দ কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভেঙে পড়েছিল। তার মানিব্যাগ তল্লাশির সময় পুলিশ বিজয়াদেবীর সিম কার্ড মিললে মাথায় হাত দিয়ে মেঝেতে বসে পড়েছিল সে।”
পুলিশ জেনেছে, ২০১২ সালের ২৬ অক্টোবর সোদপুরের একটি ফ্ল্যাটে ঢুকে ছিনতাই করার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। ওই ফ্ল্যাটের কর্ত্রীকে ছুরি দিয়ে জখমও করে নিত্যানন্দ। পরে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে গণপিটুনিরও শিকার হয় সে। ওই ঘটনায় তার ৪২ দিন জেল হেফাজত হয়।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.